সৌন্দর্যের দ্বীপকন্যার টানে
ফয়সল বিন ইসলাম নয়ন : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:20 Dec 2015 01:43:14 AM Sunday || Updated:20 Dec 2015 02:10:59 PM Sunday

সৌন্দর্যের দ্বীপকন্যা কুকরি মুকরির সমুদ্র সৈকতে লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণ (ছবি : শাহীন ভূইয়া)
ভোলা জেলার মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে চর কুকরি মুকরির অবস্থান। বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁসে জেগে ওঠা চরটি স্থানীয়দের কাছে দ্বীপকন্যা নামে পরিচিত। এখানকার ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল, বন্যপ্রাণী আর সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে সৌন্দর্যের এক বর্ণিল আবহ প্রকৃতিপ্রেমী আর পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকে।
এক সময়ের ওলন্দাজ-পর্তুগিজদের অভয়ারণ্য বলে পরিচিত চর কুকরি-মুকরি এখন দেশি-বিদেশি পর্যটক আর ভ্রমণবিলাসীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ বছর আগে পলির স্তর জমতে জমতে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে চর কুকরি-মুকরি নামের এই দ্বীপ জেগে উঠে। কালের সাক্ষী পুরোনো এ চরে আজো লাগেনি সভ্যতার ছোঁয়া। বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে মেঘনা-তেতুলিয়ার মোহনায় প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা বিশাল বনাঞ্চলবেষ্টিত এ দ্বীপে বিচরণ করছে অসংখ্য হরিণ, অতিথি পাখি, লাল কাঁকড়া, বুনোমহিষ, বানর, বনবিড়াল, উদবিড়াল, শিয়াল, বনমোরগসহ নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী।
চর কুকরি মুকরিতে নিরাপদ নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা, হোটেল, মোটেলসহ আধুনিক পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলে তা কুয়াকাটা, কক্সবাজার, সেন্টমার্টিনের মতোই নৈঃস্বর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে পর্যটন শিল্প এলাকায় পরিণত হতে পারে। বিস্তৃত সবুজ বনাঞ্চল, মায়াবি হরিণের পাল আর মন ভোলানো সমুদ্র সৈকতে লাল কাঁড়ার অবাধ চরাচর কুকরি মুকরিকে ভ্রমণবিলাসীদের র্তীথ ভূমিতে পরিণত করতে পারে। শীত মৌসুমে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির উপস্থিতি এ এই চরটিকে মনোরম করে তোলে। ইতিমধ্যে আইইউসিএন (ওটইঘ) চর কুকরি মুকরিকে বিশ্ব জীববৈচিত্র্যের স্থান হিসেবে চিহ্নিত করে।
বর্তমানে চর কুকরি মুকরি ইউনিয়নটি বাবুগঞ্জ, নবীনগর, রসুলপুর, আমিনপুর, শাহাবাজপুর, মুসলিম পাড়া, চর পাতিলা ও শরীফ পাড়া নিয়ে গঠিত। বলতে গেলে, এখানকার সৌন্দর্য সেন্টমার্টিনের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। যদিও এখানে বাণিজ্যিকভাবে নেই পর্যটনের প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা নেই। এর পরও কুকরি মুকরির বনে হরিণ আর বালির সৈকতের টানেই দর্শনার্থীরা কষ্টসাধ্য হলেও ছুটে আসে এখানে। নতুন বছরকে বরণ করতে এখানে উদযাপিত হয় সূর্যোৎসব।
রাইজিংবিডি/ভোলা/২০ ডিসেম্বর ২০১৫/রাসেল পারভেজ
No comments:
Post a Comment