চাঁদে চীনের মহাকাশযানের সাফল্য
মোখলেছুর রহমান : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:29 Dec 2015 06:01:34 PM Tuesday || Updated:29 Dec 2015 06:06:00 PM Tuesday

চাঁদের পৃষ্ঠে চীনের মহাকাশ যান
২০১৩ সালে চাঁদে পাঠানো চীনের একটি মহাকাশযান চাঁদের বুকের এমন কিছু প্রাচীন আগ্নেয় লাভার প্রবাহ এবং কিছু খনিজ ধাতু চিহ্নিত করেছে, যা সম্পূর্ণরূপে ১৯৬৯ ও ১৯৭২ সালের মধ্যে আমেরিকান মহাকাশচারী দ্বারা সংগৃহীত এবং ১৯৭৬ সালে সর্বশেষ সোভিয়েত ইউনিয়ন এর মহাকাশযান দ্বারা আবিস্কৃত এ ধরনের বস্তু সমূহ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
এই সংবাদটি রাশিয়ান, আমেরিকান এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলেছে। কারণ এতদিন যাবত মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রটি শুধুমাত্র এসব দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।
বর্তমানে জাপান, ভারত ও চীন মহাকাশ গবেষণার জন্য তাদের নিজস্ব মহাকাশযান চালু করেছে।
ব্রিটেন অস্ট্রেলিয়ার ওয়েমেরায় ১৯৭১ সালে নিজস্ব স্যাটেলাইট উপগ্রহ স্থাপন করে এবং সেখান থেকে তাদের নিজস্ব রকেট উৎক্ষেপনের কাজ শুরু করে। কিন্তু পরে তারা মহাকাশ গবেষণার এই প্রতিযোগিতা থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে নেয়।
ধারণা করা হয়, সৌরজগত সৃষ্টির প্রথম দিকে মঙ্গলের মত আকারের একটি বস্তুর বিস্ফোরণের ফলেই চাঁদের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে যে ধ্বংসাবশেষ তৈরি হয়েছিল তা ছিল অত্যন্ত ঠান্ডা, কিন্তু এর অভ্যন্তরীণ গভীর তেজস্ক্রিয় উপাদান ভূত্বকের তলদেশের পাথরকে উত্তপ্ত করে এবং এরও ৫০০ মিলিয়ন বছর পরে, তা থেকে আগ্নেয় লাভা বের হয়ে আসে যার ফলে গভীর একটি গর্ত তৈরি হয় এবং সৃষ্ট হয় চাঁদের।
চীনা মহাকাশযান এর অনুসন্ধানী যন্ত্রগুলো প্রায় ৩ বিলিয়ন বছর আগে যে লাভা নির্গত হয়েছিল তা নিয়ে পরীক্ষা শুরু করে। এই পরীক্ষার ফলে তারা যা খুঁজে পায় তা দেখে হয়ত সাধারণ মানুষের মনে কোনো প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে না কিন্তু এর মাধ্যমে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা গবেষণার এক নতুন যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে।
চীনা দলের মধ্যে একমাত্র আমেরিকান গবেষক, ওয়াশিংটনের সেন্ট লুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাডলি জলিফ বলেন, ‘চাঁদের ওপরের গঠন বৈচিত্র্য প্রায় পৃথিবীর মতই এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর আগ্নেয়ক্রিয়ার অনেক পরিবর্তন হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘গলিত খনিজ শিলাগুলো গুণগতভাবে ভিন্ন তাপমাত্রার এবং মূলত খনিজগুলো একটি মিশ্রণ। যার ফলে এই উপগ্রহটির অভ্যন্তরের গাঠনিক নকশা অত্যন্ত বৈচিত্রময় বলে ধারণা আমাদের। চন্দ্র পৃষ্ঠ পরিবর্তনশীল। পূর্বে এর গঠন ঠিক এমনটি ছিল না। আমরা এখনো গবেষণা করে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি চাঁদের ভূ-পৃষ্ঠের এই পরিবর্তনের কারণ।’
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ ডিসেম্বর ২০১৫/ফিরোজ
No comments:
Post a Comment