Saturday, 26 December 2015

Sub Marine Cable connections in sea

 Sub Marine Cable connections in sea 

সমুদ্রের নিচে অবিশ্বাস্য সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত ইন্টারনেট

মনিরুল হক ফিরোজ : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:27 Dec 2015   12:19:13 AM   Sunday   ||   Updated:27 Dec 2015   10:01:03 AM   Sunday
সমুদ্রের নিচে অবিশ্বাস্য সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত ইন্টারনেট
মনিরুল হক ফিরোজ : যদি ভেবে থাকে ইন্টারনেট ডাটা এবং আন্তর্জাতিক ফোন কল আপনি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারছেন, তাহলে এই ধারণাটি আসলে ভুল।

আসলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রায় সব ধরনের ডাটা আসছে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে। যা সাগরতল দিয়ে এক দেশ দেশ থেকে আরেক দেশ কিংবা এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে পর্যন্ত বিস্তৃত। এবং এটি অত্যন্ত দ্রুত গতিসম্পন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা।

এটা সত্যিই প্রশংসা করার মতো একটি ব্যবস্থা, কেননা এই সাবমেরিন ক্যাবলগুলো পানির প্রায় ২৫ হাজার ফিট নীচে থেকে সেবা প্রদান করছে এবং অনেক দূরের একটি সার্ভারে থাকা এই লেখাটি ইন্টারনেট ব্যবস্থায় এখন আপনাকে সহজেই পড়তে সাহায্য করছে।



বলা হয়ে থাকে যে, মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার ১ শতাংশেরও কম স্যাটেলাইট বহন করে। বাকি ৯৯ শতাংশ বহন করে থাকে সাবমেরিন ক্যাবল।



সাবমেরিন ক্যাবলের গ্লোবাল নেটওয়ার্ক বিশাল, ৫ লাখ ৫০ হাজার মাইলের বেশি দীর্ঘ।



যদি কখনো সমুদ্র থেকে সাবমেরিন ক্যাবলগুলো তোলা হয়, তাহলে তা এত দীর্ঘায়িত হবে যে, ক্যাবলগুলো পৃথিবী থেকে টেনে চাঁদে পর্যন্ত নেওয়ার পর ক্যাবলের বাকি অংশগুলো আবার পৃথিবী পর্যন্ত ঝুলিয়ে দেওয়া যাবে। শুধু তাই নয়, এরপরও আরো অতিরিক্ত ক্যাবল থেকে যাবে।



১৮৫০ সালে সর্বপ্রথম ফরাসী সরকার এই ধরনের ক্যাবল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল যা ফ্রান্স এবং ইংল্যান্ডের মধ্যেকার ইংলিশ চ্যানেলের তল দিয়ে দুই দেশের টেলিগ্রাফ সংযোগের উদ্দেশ্যে কারা হয়েছিল। যদিও প্রথম চেষ্টায় তা বিফল হয়েছিল| পরবর্তিতে ১৮৫৩ সালে সফলভাবে স্থাপন করা সম্ভব হয়েছিল| এ ধরনের জাহাজগুলোর সাহায্যেই সর্বপ্রথম ইংলিশ চ্যালের সেসময়ে ট্রান্সআটলান্টিক টেলিগ্রাফ ক্যাবল স্থাপনের কাজ করা হয়েছিল।



বর্তমানে সাবমেরিন ক্যাবলের বান্ডিলের প্রতিটি ক্যাবল চুলের মতো পাতলা ফাইবার অপটিক তারের স্টিল, কপার এবং প্লাস্টিকের আবরণবিশিষ্ট। এগুলো অত্যন্ত দ্রুতগতির এবং একই সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যম যেমন ইন্টারনেট, টেলিযোগাযোগ, বিপুল পরিমান অডিও বা ভিডিওর তথ্য বিনিময়ের মাধ্যম।



সমুদ্রের খুবই গভীরে তলদেশে গেলে এই ক্যাবলগুলো চোখে পড়ে এবং সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রাণী এই ক্যাবলগুলোর নীচে তাদের আবাসস্থল গড়ে তুলেছে। প্রাণী বিজ্ঞানীদের জন্য সুখবর হচ্ছে, এখন পর্যন্ত কোনো গবেষণায় সমুদ্রের নীচে থাকা সাবমরিন ক্যাবলগুলোর দরুন সমুদ্রের অভ্যন্তরের পরিবেশের এবং প্রাণীদের জন্য কোনো নেতিবাচক প্রভাব মেলেনি।



সাবমেরিন ক্যাবল ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আতংকের নাম হচ্ছে হাঙর। কেননা সম্ভবত ক্যাবলের ম্যাগনেটিক ফিল্ডের মাধ্যমে আকৃষ্ট হয়ে কিংবা এমনিতেই কোনো কিছুতে কামড়ের দেওয়ার স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য হিসেবে হাঙর সাবমেরিন ক্যাবলে কামড়ে তা ছিড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটাতে সক্ষম। যদিও এমন ঘটনা খুব একটা ঘটে না, কিন্তু ঘটলে যোগাযোগ ব্যবস্থার দফারফা করে দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে।



তবে হাঙরের চেয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে সমুদ্রে মাছ ধরার জাহাজগুলো। যেখানে খুব বেশি গভীরে নয় সাবমেরিন ক্যাবলগুলো, সেখানে জাহাজগুলো মাছ ধরার যন্ত্রপাতি কিংবা নোঙর ঠিক যেন ক্যাবলের মধ্যেই ফেলে থাকে। এজন্য সাবমেরিন ক্যাবলের নির্মাতা অবশ্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা হিসেবে আলাদা স্টিলের আবরণ ব্যবহার করে থাকে। কোনো ক্যাবল ড্যামেজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কিনা, সেটাও নিয়মিত সমুদ্রের তলদেশে গিয়ে চেক করা হয়ে থাকে।



যত সময় যাচ্ছে, সাবমেরিন ক্যাবল ব্যবস্থায় আরো বেশি অর্থ খরচ এবং সেগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একজোট পুরো বিশ্ব। কেননা বিশ্বের ইন্টারনেট ব্যবস্থা যে অনেকাংশেই পুরোপুরি নির্ভরশীল সাবমেরিন ক্যাবলে।

তথ্যসূত্র: বিজনেস ইনসাইডার


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ ডিসেম্বর ২০১৫/ফিরোজ

No comments:

Post a Comment