পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি সই
মামুন : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:25 Dec 2015 08:38:09 PM Friday || Updated:26 Dec 2015 11:05:30 AM Saturday

শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুভাসকিং চুক্তিপত্রে সই করেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
চুক্তি অনুযায়ী ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে এ কেন্দ্র নির্মাণ করবে রাশিয়ান প্রতিষ্ঠানটি। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়কাল ধরা হয়েছে সাত বছর।
এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের মূল চুক্তি এটি- যেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নকশা, যন্ত্রাংশ সরবরাহ, কেন্দ্র নির্মাণ, উৎপাদন, নিশ্চয়তা বা গ্যারান্টি, পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ, বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত যন্ত্রাংশ পরিবহন এবং গ্যারান্টি পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন সেবা প্রদানের কথা উল্লেখ রয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ এবং পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবল সৃষ্টি করবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম পর্যায়ের কাজ ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে। এরপর মূল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নকশা প্রণয়নের কাজ শেষ হয়েছে। রাশিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে ১৩ দফা আলোচনার ভিত্তিতে ৪৭টি অনুচ্ছেদ এবং ৫৭৩টি উপ-অনুচ্ছেদে চুক্তিটি চূড়ান্ত করা হয়। চুক্তির প্রস্তাব গত বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) অনুমোদন দেয় সরকার।
২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুরে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত আগস্ট মাসে পাবনার রূপপুরে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনায় কোম্পানি গঠন করতে সংসদে বিল পাস হয়। আইন অনুযায়ী, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকানা থাকবে বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশনের হাতে। আর কেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্ব পাবে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ’।
এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর ঢাকায় রূপপুর প্রকল্প নিয়ে অনুস্বাক্ষর করে বাংলাদেশ ও রাশিয়া । প্রকল্প ব্যয়ের ৯০ শতাংশ অর্থাৎ ১১ দশমিক ৩৮৫ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশকে ঋণ হিসেবে দেবে রাশিয়া। এ বিষয়ে আগামী মার্চ বা এপ্রিলে এই ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। বাংলাদেশ সরকারের তহবিল থেকে ব্যয় হবে এক দশমিক ২৬৫ বিলিয়ন ডলার।
ঋণ পরিশোধের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ বছর। এর মধ্যে ১০ বছর গ্রেস প্রিরিয়ড রয়েছে। ছয় মাসের লাইবরের সঙ্গে এক দশমিক ৭৫ শতাংশ যোগ করে ঋণের সুদ হার নির্ধারণ করা হবে। তবে সুদের হার কোনক্রমেই বছরে চার ভাগের বেশি হতে পারবে না।
এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের অক্টোবরে উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। এর এক বছর পর দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৪ সালের অক্টোবরে উৎপাদনে আসবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ৫০ বছর ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে এই কেন্দ্র। এ জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি রাশিয়ার কাছ থেকে ভাড়া নেয়া হবে। ব্যবহার শেষে ওই জ্বালানি বর্জ্য ফেরত নেবে রাশিয়া। নৌ পথে কেন্দ্রের সব যন্ত্রসামগ্রী আনা হবে ।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ ডিসেম্বর ২০১৫/মামুন/নওশের
No comments:
Post a Comment