Tuesday, 23 February 2016

Tourism in mars by 3 days

৩ দিনে মঙ্গল গ্রহে!

মোখলেছুর রহমান : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:23 Feb 2016   06:14:31 PM   Tuesday   
৩ দিনে মঙ্গল গ্রহে!
মোখলেছুর রহমান : পৃথিবীর বাহিরের গ্রহগুলো সম্পর্কে মানুষের কৌতূহল দিন দিন বাড়ছে। প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান অগ্রগতির কারণে মানুষের ভিন্ন গ্রহে যাওয়াটা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার।

পৃথিবীর বাহিরের গ্রহগুলোর মধ্যে মঙ্গল গ্রহ নিয়ে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি। কারণ ধারণা করা হয় পৃথিবীর বাইরে একমাত্র মঙ্গল গ্রহেই প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে। বর্তমানে কয়েক কোটি মাইল দূরত্বে অবস্থিত মঙ্গল গ্রহে মহাকাশ যান পৌঁছাতে প্রায় ৯ মাসের মতো সময় লাগে।

তবে মহাকাশ প্রেমীদের জন্য সম্ভবত খুব বড় একটি সুখবর আসতে যাচ্ছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার একদল পদার্থবিদদের নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে, আলোক প্রযুক্তির ক্ষমতাকে ব্যবহার করে মঙ্গলে ভ্রমণের সময়কে অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব। এই পদার্থবিদদের মতে আলোক প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে মঙ্গলে ভ্রমণের সময়কালকে বছর থেকে কমিয়ে মাত্র কয়েক দিনে নামিয়ে ফেলা সম্ভব। হতে পারে তা মাত্র ৩ দিনে।

ক্যালিফোর্নিয়ার এই পদার্থবিদদের দলটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্তমানের তুলনায় কীভাবে আরো কম সময়ে এবং দ্রুত গতিতে মঙ্গলে যাওয়া যায়- সে সম্ভবনার ওপর ভিত্তি করেই কাজ করে চলেছে।

এই গবেষণায় যে ফলাফল পাওয়া গেছে, তাতে লেজার আলোর কৌশল ব্যবহার করে মহাকাশযানকে অনেক দ্রুত চালনা করা সম্ভব হবে।

যদিও এই প্রযুক্তি টিম অত্যন্ত ছোট লক্ষ্য নিয়েই কাজ শুরু করেছিল, কিন্তু কোনো একদিন এই গবেষণার ফলাফল মঙ্গলে দ্রুত ভ্রমণের জন্য অত্যন্ত দ্রুতগামী বৃহত্তর মহাকাশযান নির্মাণকে অনুপ্রাণিত করতে পারে।

অধ্যাপক ফিলিপ লুবিন এবং ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা বারবারা বিশ্ববিদ্যালয়ের তার দল জ্বালানি নক্ষত্রমণ্ডলগত প্রিকার্সর (ডিপ-ইন) প্রোগ্রাম নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রোগ্রামটির লক্ষ্যে হলো পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্রগুলোতে ভ্রমণের ক্ষেত্র করতে মহাকাশযানের আপেক্ষিক গতি সেই মানে পৌঁছানো, যাতে অনেক স্বল্প সময়ে সেখানে পৌঁছানো যায়।

আপেক্ষিক গতি আলোর গতির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ।

অধ্যাপক লুবিন নাসার জাতীয় উদ্ভাবনী উন্নত ধারণা বিষক এক সিম্পোজিয়ামে বলেন, ‘আমরা জানতাম ল্যাবের আপেক্ষিক গতি কীভাবে পেতে হয় এবং আমরা সব সময় তাই করেছি।’

তিনি বলেন, ‘যখন আমরা ম্যাক্রোস্কোপিকের স্তরে গিয়েছিলাম তখন আমরা দেখেছি বিমান, গাড়ি, মহাকাশযান এর মতো যানগুলোর গতি কতটা কম ছিল।’

অধ্যাপক লুবিন এই ফুটোনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্ষুদ্র ও বৃহৎ যানগুলোর মধ্যে একটি মেলবন্ধন তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। এই প্রযুক্তিটি অনেক সহজ কারণ এখানে একটি লেজার রশ্মি থেকে নির্গত ফোটন কণাকে মহাকাশযান চালিত করতে ব্যবহার করা হয়।
সকল মহাকাশযান সাধারণত ওপরের দিকে ধাবিত হয় তার বিপরীত দিকের আগুন বিচ্ছুরণের মাধ্যমে।

কিন্তু প্রথাগতভাবে এই পদ্ধতিতে মহাকাশযানটি অনেক ভারী হয়ে যায় এটির গতিও অনেক কমে যায়।

ফুটোনিক প্রযুক্তিতে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানীর পরিবর্তে মহাকাশযান লেজার আলোর মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এর ফলে মহাকাশযানে কোনো ভর যুক্ত হয় না এবং এতে করে মহাকাশযানটির গতিও কমে না।

এর ফলে মহাকাশযানের গতি ত্বরান্বিত হয় এবং উচ্চতর গতিতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।
এই তত্ত্ব, বিমানের আপেক্ষিক গতি পেতে সাহায্য করবে।

অধ্যাপক লুবিন এই ফুটোনিক প্রযুক্তিতে আলোর গতি কত-তে পৌঁছাবে এর কি অনুপাত উল্লেখ করেন নি, যদিও তিনি বলেছিলেন প্রযুক্তিতে আলোর তা এক-চতুর্থাংশ পর্যন্ত হতে পারে।

অধ্যাপক লুবিন নাসার স্পেস লঞ্চ সিস্টেমে (এসএলএস) রেফারেন্স দিতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা কয়েক দিনের মধ্যে মঙ্গলে একটি ১০০ কেজি ওজনের বিমান চালনা করতে যাচ্ছি যা মোটামুটিভাবে এক মাসের মধ্যে সেখানে পৌঁছে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।’

নাসার ‘জ্বালানি ছাড়া ইঞ্জিন’ এর আরো একটি প্রকল্প ‘ইএম ড্রাইভ’। এই জ্বালানি বিহীন ইঞ্জিন মাত্র ১০ সপ্তাহের মধ্যে মঙ্গল মানুষকে নিয়ে যেতে পারবে। তথাকথিত ই.এম. ড্রাইভ মাইক্রোওয়েব এর মাধ্যমে অনেক বজ্র তৈরি করে এবং এতে শুধুমাত্র সৌরশক্তি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু নাসার এই ফুটোনিক প্রযুক্তি মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে ১০০ কেজি ভরের একটি মহাকাশযানকেও মঙ্গল নিয়ে যেতে পারবে।

গত নভেম্বরে মাসে নাসা ফুটোনিক প্রযুক্তির প্রথম পরীক্ষায় চালায় এবং ঘোষণা করে যে এই ভবিষ্যত মহাকাশযানটির কার্যকারিতা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, মানুষ আলোর গতির দশ গুণ বেশি গতিতে মহাকাশ ভ্রমণ করতে পারবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/ফিরোজ

No comments:

Post a Comment