বিখ্যাতদের প্রেম
কাজী আশরাফ : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:16 Feb 2016 12:01:31 AM Tuesday || Updated:16 Feb 2016 11:21:46 AM Tuesday

অলংকরণ : অপূর্ব খন্দকার
পাবলো পিকাসো : বিশ্ব বিখ্যাত আঁকিয়ে পাবলো পিকাসো সৌন্দর্য ও তারুণ্য এই দুটি গুণ নারীর ভেতর আবিষ্কার করতে চাইতেন। সাধারণত স্ত্রী আর প্রেমিকারাই হতো তাঁর মডেল। কবি পল এলুয়ার লিখেছেন, ‘তিনি গভীরভাবে ভালোবাসতেন এবং যা ভালোবাসতেন তা-ই তার হাতে নিহত হতো।’
এ প্রসঙ্গে অবশ্য পিকাসোর বিবৃতিটা একটু নিষ্ঠুর। তিনি বলেছেন, ‘আমার হিসাবে কেবল দুই ধরনের নারী আছে- দেবী ও পাপোষ।’
জন এফ কেনেডি : জন এফ কেনেডি প্রায়ই বলতেন, মেয়েদের সঙ্গ ছাড়া বেশি দিন কাটালে তার খুব মাথা ধরে। হলিউড তারকাদের সঙ্গে কেনেডির প্রেম ছিল (জন টিয়েরনি, জেন ম্যান্সফিল্ড, মেরিলিন মনরো)। ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে কেনেডির ৪৫তম জন্মবার্ষিকী পার্টিতে মনরো বেশ দরদ দিয়ে হ্যাপি বার্থ ডে গান গেয়েছিলেন। ১৯৬১ সালে মনরোর সঙ্গে প্রেম শুরুর পর তাকে লুকিয়ে কেনেডির বিমানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলেও খবর আছে।
চার্লি চ্যাপলিন : নির্বাক যুগের কমেডি ছবির রাজা চার্লস স্পেন্সার চ্যাপলিন। তিনি ৮০টি চলচ্চিত্র তৈরি করেন এবং অস্কার পুরস্কারও পান। চ্যাপলিন মোট চারটি বিয়ে করেন। বিখ্যাত সব মহিলার সঙ্গে চার্লির প্রেম ছিল। এদের মধ্যে ছিলেন উইনস্টন চার্চিলের বোন ক্লেয়ার শেরিডান, অভিনেত্রী মডেল নরম্যান, এডনা পারভিয়েন্স, পলা নেগ্রি, ম্যারিয়ন ডেভিস, পেগি পেকিস জয়েস, ওনা ও নীল।
বেনিতো মুসোলিনি : মুসোলিনি প্রথম প্রেমে পড়েন ১৯ বছর বয়সে তার চেয়ে ১৪ বছরের বড় রাশিয়ান সোশ্যালিস্ট তরুণী অ্যাঞ্জেলিকা বালাবানাদোর সঙ্গে। কিন্তু তাঁর এ প্রেম বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। এরপর মুসোলিনি শিক্ষকতা করার সময় লুইজিয়া নামে বিবাহিত মহিলার সঙ্গে প্রেম করেন। সে প্রেম চাউর হয়ে গেলে ভেস্তে যায় সব।
১৯০৯ সালে মুসোলিনি তাঁর সাবেক ছাত্রী রেশেল গুইদির প্রেমে পড়েন। রেশেল মুসোলিনির বাবার সরাইখানায় মদ পরিবেশনের কাজ করত। সোশ্যালিস্ট হিসেবে আদর্শগতভাবে মুসোলিনির বিয়ে করা নিষিদ্ধ ছিল। পরে অবশ্য মুসোলিনি রেশেলকে বিয়েও করেন।
কিন্তু বিয়ের পর ম্যাগদা ফনতেইন নামে এক ফরাসি সাংবাদিকের সঙ্গে তার প্রেম হয়ে যায়। কিন্তু এতগুলো প্রেম সত্বেও তাঁর প্রিয়তম ছিলেন কৃষ্ণসুন্দরী ক্লার পেতাচি। তাদের সম্পর্ক ১০ বছরেরও বেশি ছিল।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর : মানসীর সন্ধানে রত এক কবি রবীন্দ্রনাথ। আর এই সন্ধানের প্রথম উল্লেখযোগ্য মাইলফলক আন্না তড়ঘড়ি। আহমেদাবাদের স্বাধীনচেতা এই কিশোরী রবীন্দ্রনাথকে কিছুদিন পড়ানোর চেষ্টাও করেছেন। তারপরে তাঁর জীবনে আসেন নতুন বৌঠান কাদম্বরী। আর সেই অনুসন্ধানের শেষে আছেন আর্জেন্টিনার কবি ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো- বিদেশ বিভুঁইয়ে অসুস্থ অবস্থায় যে নারী তাঁর দেখভাল করেছিলেন।
মাও সেতুং : মাও সে তুং ১৪ বছর বয়সে তাঁর চেয়ে একটু বয়স্ক এক মেয়েকে বাবার কথামতো বিয়ে করেন। বিয়ের পরই তিনি ওই স্ত্রীর সঙ্গে বসবাস করতে অস্বীকার করেন। তিনি পরে বলেছেন, কোনো দিনই ওই মেয়েকে স্পর্শ করেননি। ১৯২১ সালে তিনি ইয়াংকে বিয়ে করেন। ইয়াংয়ের মৃত্যুর অল্প কিছুদিন আগে হোস সু চেং নামে মাও তার অর্ধেক বয়সী এক সুন্দরী বিপ্লবী সহকর্মীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন। ইয়াংয়ের মৃত্যুর পর তারা বিয়ে করেন। ১৯৩৭ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ১৯৩৯ সালে মাও চিয়াংকে বিয়ে করেন।
মাওয়ের জীবনে একটা স্ববিরোধী দিক ছিল, তিনি জীবনে কোনো না কোনোভাবে চারজন মহিলাকে পরিত্যাগ করেছেন, কিন্তু সারা জীবন তিনি নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।
জাঁ-পল সার্ত্রে : ঔপন্যাসিক, নাট্যকার এবং অস্তিত্ববাদী দার্শনিক জ্যাঁ-পল সার্ত্রের বয়স তখন মাত্র ১৯। সে সময় এক ব্যক্তির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় ক্যামিল নামে ২২ বছর বয়সের এক মেয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। এর পরই প্রেমের শুরু। তাদের এই প্রেম টিকে ছিল পাঁচ বছর।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ১৯২৯ সালে সার্ত্রের সঙ্গে বুদ্ধিদীপ্ত আকর্ষণীয় ছাত্রী সিমন দ্য বেভোয়ারের পরিচয় ঘটে। তারা দ্রুতই প্রেমে পড়ে যান। তাদের এই প্রেম দীর্ঘ ৫০ বছর ছিল। এই ৫০ বছরে সার্ত্রে ঝুঁকেছেন একাধিক জনের প্রতি।
১৯৩৪ সালে সার্ত্রে বার্লিনে পড়ার সময় মারি নামের একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেম করেন। মারি ছিল অন্য একজনের স্ত্রী। বড়দিনের সময় সার্ত্রে প্যারিসে ফিরে এসে সিমনকে তার নতুন প্রেমের কথা জানান। যদিও সার্ত্রের মৃত্যুশয্যায় তারা কেউই ছিল না, এ সময় সিমন সার্ত্রের পাশে ছিলেন।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/তারা
No comments:
Post a Comment