Wednesday, 17 February 2016

Bangla language leader

ভাষা শহীদ রফিক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব

মো. মিঠুন মিয়া : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:17 Feb 2016   12:32:23 PM   Wednesday   
ভাষা শহীদ রফিক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব
মো. মিঠুন মিয়া : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের পাতায় রয়েছেন অনেক স্মরণীয় এবং বরণীয় ব্যক্তিত্ব। আর এই ভাষার মাসে যিনি আমাদের গর্বের জায়গা দখল করে আছেন, তিনি হলেন ভাষা আন্দোলনে অমর শহীদদের অন্যতম রফিক উদ্দিন আহমদ। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার দাবিতে ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশের গুলিতে রফিক প্রথম শহীদ হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে যুক্ত করেন ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে। রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন লড়াকু এ বীর সৈনিক। ভাষা যে একটি জাতির অস্তিত্ব তা প্রাণ দিয়ে প্রমাণ করতে প্রাণ বিসর্জন দিতে পিছু পা হননি জগন্নাথ কলেজের (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) সাবেক এই শিক্ষার্থী।

দেশ জাতি, সমাজ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহীদ রফিক  অনুপ্রেরণার এক অনন্ত উৎস। দেরিতে হলেও সাবেক শিক্ষার্থী ও ভাষা সৈনিক রফিককে সম্মান জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ধরে রেখেছে তার স্মৃতি। ভাষা আন্দোলনের ৬২ বছর পূর্তির আগে ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে পুরাতন বিজনেস স্টাডিজ ভবনের নাম পরিবর্তন করে ‘ভাষা শহীদ রফিক ভবন’ নামকরণের প্রস্তাব করা হয়। পরে এই প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। নতুন নামকরণ হওয়া ‘ভাষা শহীদ রফিক ভবন’-এ বাংলা আর ইতিহাস বিভাগের কার্যালয় রয়েছে। আর এই নামকরণের মধ্য দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্য সম্পাদন করেন।

সে সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছিলেন, তৎকালীন জগন্নাথ কলেজের ছাত্র ভাষা শহীদ রফিকের নামে পুরাতন বিজনেস স্টাডিজ ভবন ‘ভাষা শহীদ রফিক ভবন’ নামকরণ করার মাধ্যমে তার স্মৃতি রক্ষা পেল। এছাড়া ভবিষ্যতে কোন হল নির্মিত হলে তা ভাষা শহীদ রফিকের নামে নামকরণ করা হবে।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন একটি ব্যতিক্রমী আন্দোলন, যার সঙ্গে যুক্ত ছিল বাংলাদেশের সমগ্র জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য ও ভাষার প্রশ্ন। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় বাংলাদেশের জনগণ যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, বিশ্বের ইতিহাসে তার আর কোনো নজীর নেই। গত শতাব্দীতে বাঙালি জাতি যে দুটি শ্রেষ্ঠ অর্জন নিয়ে গর্ব করতে পারে তার একটি হল স্বাধীনতা অর্জন এবং অন্যটি হল রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে বাংলাকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করা। দুটি অর্জনই অনন্য সাধারণ। যুদ্ধ করে মাতৃভূমির স্বাধীনতা অর্জন ও রক্ত দিয়ে ভাষার মর্যাদা রক্ষা করা এই দুটি কোনো জাতির পক্ষেই একসাথে করা সম্ভব হয়নি। শুধু বাংলাদেশে নয়, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন বিশ্বের অন্যান্য জাতির জন্যও শিক্ষণীয় অবদান রেখেছে। বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করে মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা বিশ্বের ইতিহাসে বাঙালি জাতির এক অন্যন্য দৃষ্টান্ত। আর এই ভাষা আন্দোলনে নিহিত ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির আন্দোলন। ভাষার প্রশ্নে বাঙালি জাতি স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখে এবং ছিনিয়ে আনে বিজয়। বর্তমানে বিশ্বের সমৃদ্ধশালী ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার অবস্থান চতুর্থ। বিশ্বের প্রায় ৩০ কোটি মানুষের মুখের ভাষা বাংলা। বাংলা সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কেবল তাই নয়, বাংলাকে জাতিসংঘের ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

১৯২৬ সালের ৩০ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলার পারিল গ্রাম বতর্মানে রফিকনগর, ইউনিয়ন-বলধারা, থানা-সিঙ্গাইরে জন্মগ্রহণ করেন রফিক। ঢাকা সাহিত্য সংস্কৃতি কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত ‘ভাষা আন্দোলনের পঞ্চাশ বছর পূর্তি’ স্মারক গ্রন্থে জানা যায়, ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদ রফিক, পুরো নাম রফিক উদ্দিন আহমদ। পিতার নাম আবদুল লতিফ মিয়া এবং মাতার নাম রাফিজা খাতুন। রফিক ছিলেন পিতা-মাতার প্রথম সন্তান। রফিকরা ছিলেন পাঁচ ভাই ও দুই বোন। ভাইদের মধ্যে রফিক ছিলেন সবার বড়। চার ভাই, আবদুর রশীদ (১৯৩১-১৯৮৭), আবদুল খালেক (১৯৩৪), বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম (১৯৪৩-১৯৭২), খোরশেদ আলম (১৯৪৭) এবং বোন আলেয়া বেগম (১৯৩৮) ও  জাহানারা বেগম (১৯৪৫)।

শৈশবে গ্রামের স্কুলেই তিনি লেখাপড়া করেন। রফিক বাল্যকালে কিছুটা ডানপিটে ছিলেন। তিনি মরহুম আশরাফ উদ্দিন চৌধুরী ও বীরেন্দ্রমোহন দত্তগুপ্ত শিক্ষকদ্বয়ের সুযোগ্য ছাত্র হিসাবে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। শৈশবে গাছ থেকে পড়ে তার হাত ভেঙ্গে চিকিৎসার জন্য কলকাতা যান। সেখানে অবস্থানের সময় মিত্র ইনস্টিটিউশনে শিক্ষা লাভ করেন। বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত আব্বাস উদ্দিন আহমদের লেখা ‘ভাষা শহীদ রফিকউদ্দিন আহমদ’ জীবনী গ্রন্থ মতে, ১৯৪৬ সালে কলকাতায় মহা দাঙ্গার পর রফিক দেশে ফিরে আসেন।

পারিল গ্রামটি খুব সুন্দর সবুজ ফসলী একটি গ্রাম, যে গ্রামে সারা বছর ধান, পাট ও সবজির আবাদ হয়। শহীদ রফিক তার বাড়ি থেকে ৭ মাইল দূরে অবস্থিত বায়রা উচ্চ বিদ্যালয় হতে ১৯৪৯ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। পরে মানিকগঞ্জের দেবেন্দ্র কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হন। রফিক মানিকগঞ্জের সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে ১ম ও ২য় বর্ষে লেখাপড়া করেন। ১৯৫০ সালে দেবেন্দ্র কলেজ থেকে আইএ পরীক্ষা দেন। বাবার প্রিন্টিং ব্যবসা দেখাশুনার জন্য পরবর্তী সময়ে তিনি ঢাকায় চলে আসেন। এরপর ঢাকায় জগন্নাথ কলেজে (বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি হন। রফিক দেবেন্দ্র কলেজে বাণিজ্য বিভাগে পড়ালেখা করেছেন। জগন্নাথ কলেজে কোন বিষয়ে ভর্তি হয়েছিলেন তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি। তবে তিনি জগন্নাথ কলেজের অনিয়মিত অর্থাৎ সান্ধ্যকালীন কোর্সের ছাত্র ছিলেন বলে জানা যায়। শিক্ষা জীবনের পাশাপাশি তিনি মাঝে-মধ্যে পিতার প্রেসের ব্যবসা দেখাশোনা করতেন।

রফিক সাহিত্যাঙ্গনে ছড়া রচনায় পটু এবং সেলাই ও সূচী শিল্পেও বেশ দক্ষ ছিলেন। লেখাপড়ার অবসরে বাবার ব্যবসার পাশাপাশি শুরু করেন সাংস্কৃতিক পরিম-লে বিচরণ। ছোট থেকেই ছড়া লিখতেন তিনি। এছাড়াও সঙ্গীতে তার অনুরাগ ছিল। রফিক সাহিত্য এবং সংস্কৃতি চর্চায় বিশেষভাবে উৎসাহী ছিলেন। সমাজকল্যাণেও তিনি গভীর আগ্রহী ছিলেন। মানবিক গুনাবলি বিকাশ উপযোগী এসব ত্রিয়াকলাপে আগ্রহ থেকেই রফিকের মধ্যে সৃষ্টি হয় ঢাকার চলমান রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণের তাড়না।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর রফিকের বাবা ঢাকায় চলে আসেন এবং জামাতা মোবারক আলী খানের পরামর্শে বাবু বাজার এলাকায় আকমল খান রোডে ‘পারিল প্রিন্টিং প্রেস’ প্রতিষ্ঠা করেন। যৌথ ব্যবসায়ে পিতা আবদুল লতিফের অপর অংশীদার ছিলেন রফিকের মামা ফেলু খাঁ। তিনিও কলকাতা থেকে ঢাকায় আসেন। তবে বছর দেড়েক পর উভয়ের মধ্যে ব্যবসা নিয়ে মত বিরোধ দেখা দেয় এবং দু’জনে আলাদা হয়ে যান। শ্যালক আলাদা ব্যবসা শুরু করাতে শহীদ রফিকের বাবার পক্ষে মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকা এসে প্রেস দেখা সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে তিনি প্রেসের যন্ত্রপাতি ও বন্টনকৃত মালামাল বিক্রি করে দেয়ার উদ্যোগ নেন। কিন্তু শহীদ রফিক পিতাকে জানান পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি ওই প্রেস ব্যবসা দেখাশুনা করবেন। পুত্রের বিশেষ আগ্রহের কারণে শহীদ রফিকের পিতা বাদামতলিতে ‘কমার্শিয়াল আর্ট প্রেস’ নামে নতুন প্রেস ব্যবসা শুরু করেন। রফিকের অক্লান্ত কর্মনিষ্ঠায় ব্যবসা ভালো চলতে থাকে।

ওই ব্যবসা পরিচালনার স্বার্থেই তিনি জগন্নাথ কলেজের সান্ধ্যকালীণ কোর্সে ভর্তি হন। ওই সময় রফিকের মত যারা পড়ালেখার পাশাপাশি অন্য কাজ করতেন তাদের কথা মাথায় রেখেই ওই কোর্সটি চালু করা হয়েছিল। যে কেউ চাইলেই ওই কোর্সে ভর্তি হয়ে কাজের পাশাপাশি পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারতেন। রফিকও ওই সুযোগ নিয়ে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) লেখাপড়া করেন বলে জানা যায়। এছাড়াও আবু সালেহ সেকেন্দার এর ‘ভাষা আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধে একাধিক উৎস থেকে উল্লেখ করা হয়েছে ভাষা শহীদ রফিকউদ্দিন আহমদ জগন্নাথ কলেজের ছাত্র ছিলেন।

রফিক একই গ্রামের মেয়ে রাহেলা খাতুন পানুকে ভালবাসতেন। পারিবারিকভাবে তাদের এই ভালবাসাকে মেনে নিয়ে পরিবার থেকে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। সেই উপলক্ষ্যেই বিয়ের বাজার করার জন্য তিনি ঢাকায় যান। ২১ ফেব্রুয়ারি বিয়ের শাড়ি-গহনা ও কসমেটিকস নিয়ে সন্ধ্যায় তাঁর বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই মহান ব্যক্তি যখন শুনতে পেলেন বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা করার দাবীতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সামনে থেকে মিছিল বের হবে তখন তিনি ছুটে যান ওই মিছিলে।

তৎকালীন সরকার আরোপিত ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে ১৯৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র-জনতার সাথে তিনিও বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। তখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেল প্রাঙ্গণ ও রাজপথ মিছিলের পদভারে প্রকম্পিত। এ অবস্থা দেখে পাকিস্তান সরকার দিশেহারা হয়ে যায়। শুরু হয় ছাত্র-জনতার উপর র্নিবিচারে গুলিবর্ষণ। একটি গুলি রফিক উদ্দিনের মাথায় বিদ্ধ হয়। ঘটনাস্থলেই তিনি শহীদ হন। মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেলের ১৭ নম্বর রুমের পূর্বদিকে তার লাশ পড়ে ছিল। ছয়/সাত জন ধরাধরি করে তার লাশ এনাটমি হলের পেছনের বারান্দায় এনে রাখেন। তাদের মাঝে ডাঃ মশাররফুর রহমান খান গুলিতে ছিটকে পড়া রফিকের মগজ হাতে করে নিয়ে যান।

রফিকই পৃথিবীতে ভাষার জন্য প্রথম শহীদের মর্যাদা লাভ করেন। তবে পাকিস্তানী হায়েনারা তাকে মেরেই ক্ষান্ত হয়নি ঢাকা মেডিক্যাল থেকে তার লাশ নিয়ে লুকিয়ে ফেলে এবং জনরোষের ভয়ে পরদিন সেনাদের সহযোগিতায় আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করে। কিন্তু তাঁর কবরের কোন চিহ্ন রাখা হয়নি। ফলে আজিমপুর কবরস্থানে হাজারো কবরের মাঝে ভাষা শহীদ রফিকের কবরটি অচিহ্নিত থেকে যায়। রফিক উদ্দিন ও অন্যান্য ভাষা শহীদ- সালাম, জব্বার, শফিউরের মহান আত্মত্যাগের ফলেই বাংলা ভাষা ১৯৫৬ সালে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে শাসনতান্ত্রিক স্বীকৃতি লাভ করে।

তাঁর আত্মত্যাগ পূর্ববঙ্গবাসীর মনে বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা জাগ্রত করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। এই চেতনার ভিত্তিতেই সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ সরকার শহীদ রফিককে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করে। সরকারিভাবে ২০০৬ সালে তারঁ ‘পারিল’ গ্রামে শহীদ রফিকের নামে ভাষা শহীদ পাঠাগার ও স্মৃতি যাদুঘর স্থাপন করা হয়। যেখানে তার ব্যবহৃত জিনিষপত্র ও প্রচুর বই আছে। তারও আগে প্রশিকার উদ্যোগে তারঁ বাড়ির কাছেই একটি ছোট লাইব্রেরি গঠন করা হয়। যেখানে মূলত তার স্মৃতিগুলো প্রথম থেকে সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করা হয়।

শহীদ রফিকের পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণআন্দোলনে নিজেদের গভীরভাবে যুক্ত করেছেন এবং নিজেদের জীবনকে কখনোই দেশের স্বার্থের চেয়ে বড় মনে করেননি। ১৯৬৯ এর গণআন্দোলনেও জীবন দিয়েছেন এই পরিবারের সদস্য জনাব ইসহাক। রফিকের ভাই আবদুস সালাম একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, তিনি গুপ্তঘাতকের হাতে নিহত হন।

স্মৃতি রক্ষার্থে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ভাষা শহীদ রফিক ভবন’ নামকরণ নিসন্দেহে একটি প্রসংসনীয় উদ্যোগ। আমরা মনে করি, এই সম্মানই যথেষ্ট নয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এই মহান ভাষা সৈনিককে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, ভবিষ্যতে কোন হল নির্মিত হলে তা ভাষা শহীদ রফিকের নামে নামকরণ করা হবে।’ আমাদের দাবি হলো হলের সামনেও যেন শহীদ রফিকের একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়। এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শহীদ রফিকের পরিবারকে উপযুক্ত সম্মানে ভূষিত করা হোক- এটাই প্রত্যাশা।

লেখক : সাংবাদিক ও প্রক্তন শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/শাহনেওয়াজ

No comments:

Post a Comment