যে অমর প্রেমকাহিনি থেকে এলো ‘বাকরখানি’র নাম
কাজী আশরাফ : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:16 Feb 2016 12:01:19 AM Tuesday || Updated:17 Feb 2016 12:51:06 PM Wednesday

ঘটনার এখানেই শেষ নয়। জয়নাল খানের দুই বন্ধু উজিরকে গিয়ে জানায়, আগা-বাকের দুজনে মিলে জয়নালকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে। উজির নবাবের কাছে পুত্র হত্যার বিচার চান। মুর্শিদ কুলী খাঁ পুত্র বাকেরকে বাঘের খাঁচায় নিক্ষেপের নির্দেশ দেন। শুরু হয়ে যায় বাঘ আর বাকেরের যুদ্ধ। অবশেষে বাকেরের হাতে মারা যায় বাঘ। ইতিমধ্যে জয়নালের মৃত্যুর মিথ্যা খবর ফাঁস হয়ে যায়। বাকের মুক্ত হয়। কিন্তু বিধিবাম! তাদের দুজনের মিলন হয় না। কারণ বাকের যখন বাঘের খাঁচায় ছিল তখন জয়নাল সুযোগ পেয়ে খনি বেগমকে অপহরণ করে দক্ষিণ বঙ্গে নিয়ে যায়।
বাকের দক্ষিণ বঙ্গে ছুটে যায়। ইতিহাস বলে, বাকের যখন জয়নালের মুখোমুখি হয় তখন জয়নালের হাতে ছিল এক বিষাক্ত সাপ। ঘটনাক্রমে সেখানে হাজির হয় উজির জাহান্দার খান। এই জাহান্দার খানের তলোয়ারের আঘাতে খনি বেগম মারা যায়। বাকের ছুটে এসে জড়িয়ে ধরে খনি বেগমকে। মৃত্যু পথযাত্রী খনি বেগম কোনোমতে উচ্চারণ করে- দুঃখ এ দুনিয়ায় আমাদের মিলন হলো না। পরকালে আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করব। এটাই ছিল খনি বেগমের শেষ কথা। বাকেরগঞ্জের নির্জন নদীতীরে অরণ্য ছায়ায় সমাধি হয় খনি বেগমের। বাকের সব কিছু ত্যাগ করে রয়ে যায় সেই সমাধির কাছে।
এই বাকের খাঁর নামানুসারেই এক সময় বাকলা-চন্দ্রদ্বীপ (পটুয়াখালী-বরিশাল) অঞ্চলের নাম হয় ‘বাকেরগঞ্জ’। শুধু তাই নয়, ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বাকরখানি রুটির নামের পেছনেও রয়েছে এই বাকের-খনির অমর প্রেমকাহিনি। ও ভালো কথা। দত্তক পুত্র আগা বাকেরের এই প্রেম নবাব মুর্শিদ কুলী খাঁ মেনে নেননি, তার প্রধান কারণ হলো খনি বেগম ছিলেন নর্তকী।
তথ্যসূত্র : ঢাকা : স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী, মুনতাসীর মামুন
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/তারা
No comments:
Post a Comment