Thursday, 14 January 2016

Jacob in Heart

জ্যাকব বাঙালীর হৃদয়ে চিরভাস্বর হয়ে থাকবেন

শাহ মতিন টিপু : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:14 Jan 2016   12:36:06 PM   Thursday   
জে এফআর জ্যাকব

জে এফআর জ্যাকব

শাহ মতিন টিপু : বাংলাদেশ ও বাঙালীর হৃদয়ের মণিকোঠায় চিরভাস্বর হয়ে থাকবেন জ্যাকব ফ্রেডারিক রালফ জ্যাকব। যাকে আমরা জে এফআর জ্যাকব নামেই জানি। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণ দলিলে সই করলেন পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক এএকে নিয়াজী। ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ বাহিনীর কাছে সেই স্বাক্ষরের সঙ্গে সঙ্গেই জন্ম হলো নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের। ঐতিহাসিক সেই আত্মসমর্পণের দলিলের খসড়া নিজে লিখেছিলেন তখনকার ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় চিফ অব স্টাফ লে. জেনারেল (অব.) জেএফআর জ্যাকব। শুধু দলিলের খসড়া রচনাই নয়, নিয়াজীকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করার কৃতিত্বও তার।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা বিদেশি বন্ধুদের সম্মাননা জানানোর উদ্যোগ নিলে ২০১২ সালের ২৭ মার্চ সর্বশেষ বাংলাদেশে আসেন জ্যাকব। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা নেন। সম্মাননা নেওয়ার পর ভারতের অবসরপ্রাপ্ত এই লেফটেনেন্ট জেনারেল মঞ্চে দাঁড়িয়ে দর্শকদের দিকে তাকিয়ে স্যালুট দেন। এ সময় দর্শকসারি জয় বাংলা শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠলে তিনিও বলেন- জয় বাংলা।

একাত্তরে বাংলাদেশের নয় মাসের যুদ্ধ শেষে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণের অন্যতম প্রধান ভূমিকা রাখেন জ্যাকব। তিনি নিজ হাতে পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণের দলিলের খসড়া তৈরি করেন। তার প্রণীত যুদ্ধ কৌশলের ফলে স্বল্পতম সময়ে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ বাহিনীর কাছে ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জেনারেল জ্যাকবের এই ঐতিহাসিক ভূমিকার জন্য বাংলাদেশ সরকার এর পক্ষ থেকে তাকে এই মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্বে পূর্ব পাকিস্তানের রণাঙ্গনে ভারতীয় সেনাবাহিনী সরাসরি যোগ দেয়। ঢাকা দখলের মূল পরিকল্পনায় মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি ছিলেন ভারতীয় সেনানায়করাও। চওড়া গোঁফ, গোর্খা টুপি ও ব্যাটনধারী জেনারেল মানেক্শ ভারতীয়দের কাছে একজন অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। তার অধীনেই ছিলেন প্রায় সমপ্রতিভা সম্পন্ন একদল সহযোদ্ধা, যারা নিজেরাই চৌকসভাবে রণকৌশল ঠিক করতেন। তাদের একজন কলকাতায় ভারতীয় পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা। মেজর জেনারেল জে এফ আর জ্যাকব ছিলেন তার চিফ অফ স্টাফ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এবং তারপরেও বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন জ্যাকব।

মুক্তিযুদ্ধে `এস ফোর্স` এর অধিনায়ক ও মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার কে এম সফিউল্লাহর ভাষ্য অনুযায়ী, ‘জে এফ আর জ্যাকবের সহযোগিতাতেই ঢাকায় পাকিস্তান বাহিনীর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ এ কে নিয়াজীর আত্মসমর্পণ পত্রের খসড়া তৈরি এবং এ সংক্রান্ত সব আনুষ্ঠানিকতা ঠিক করা হয়। পাকিস্তানি বাহিনীর বিপর্যয়ের শুরুতেই জ্যাকব তাদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী কখন, কোথায় ও কীভাবে আত্মসমর্পণ করবে সেটাও ঠিক করেছিলেন তিনি।’

১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় যৌথবাহিনীর কাছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ করার কথা থাকলেও পরে তা ছয় ঘণ্টা পেছানো হয়।  জেনারেল জ্যাকবই পরে নিয়াজীর সঙ্গে আলোচনা করে তাকে  প্রস্তাব মেনে নিয়ে আত্মসমর্পণে রাজি হতে বাধ্য করেন।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর শীর্ষস্থানীয়দের পরিকল্পনার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত ছিলেন না জ্যাকব। এ সম্পর্কে ভারতীয় নিরাপত্তা গবেষণা সংস্থা এসএপিআরএ- কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সেনা সদর দপ্তর থেকে পাঠানো পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য ছিল খুলনা ও চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ। এ বন্দর দুটিকে বাংলাদেশে ঢোকার প্রবেশ পথ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড ভিন্ন পরিকল্পনা নেয়। আমরা উপলব্ধি করছিলাম বাংলাদেশের ভূ-রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ঢাকা। তাই যেকোনো সামরিক তৎপরতা সফল করতে আগে ঢাকা দখল করতে হবে।’

পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড নিজস্ব পরিকল্পনা অনুসারেই রণাঙ্গনে অগ্রসর হয় যদিও ভারতীয় সেনা সদরদপ্তর ভাবছিল পরিকল্পনাটি উচ্চাভিলাষী ও বাস্তবায়নযোগ্য নয়। পরে জ্যাকবকে পূর্ণ সমর্থন দেন জেনারেল অরোরা। এমনকি তিনি চীনের হামলা মোকাবেলায় প্রস্তুত রিজার্ভ বাহিনীকেও মুক্তিযুদ্ধে নিয়োজিত করার অনুমতি দেন। ওই বাহিনীর একটি অংশকে দ্রুত রনাঙ্গনে পাঠানোর জন্য `প্যারাড্রপে`র কোনো বিকল্প ছিল না সেসময়।

যুদ্ধের স্মৃতিচারণায় এসএপিআরএ-কে জ্যাকব বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছিলাম সফলতা পাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে আক্রমণ করা। জাতিসংঘ আমাদের ওপর চাপ দিয়ে যাচ্ছিল যুদ্ধ বিরতির জন্য, রাশিয়াও এমন ইঙ্গিত দিচ্ছিল যে, তারা আর `ভেটো` ক্ষমতা প্রয়োগ করতে চায় না।’

জ্যাকব এর ভাষ্যমতে, জানতে পেরেছিলাম নিয়াজী শহরগুলোতে ঘাঁটি গড়ে তুলে নিজেদের শক্তি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছিল। তাই আমরা শহরগুলোকে পাশ কাটিয়ে মূল লক্ষ্য ঢাকার দিকে এগোতে থাকি। যুদ্ধে জিততে হলে ঢাকার দখল পেতেই হবে এটা আমরা বুঝেছিলাম। পূর্ব পাকিস্তানে ভূ-কৌশলগত দিক থেকে ঢাকাই মূল কেন্দ্র। কাজেই এর দখল নেওয়া ছাড়া কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নই সম্ভব নয়।

নদী ও জলাভূমির প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে গোলাবারুদসহ সৈন্যদের ঢাকার দিকে দিকে এগিয়ে যাওয়াটা ছিল একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ। কিন্তু স্থানীয়দের সহায়তায় ভারতীয় সেনা প্রকৌশলীরা খুব দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে সক্ষম হন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অগ্রসরমান সেনা কন্টিনজেন্ট শত্রুর প্রতিরোধ গুড়িয়ে দিয়ে দ্রুততার সঙ্গে ঢাকার দিকে এগিয়ে যায়। বিস্ময়কর এ অগ্রযাত্রা পাকিস্তানি সৈন্যদের মনোবল ভেঙে দিয়েছিল। মাত্র ছয় দিনের মধ্যেই মূল লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছে যায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। শত্রুর অবস্থানের তথ্য আগেভাগেই জানিয়ে ও বিপদসঙ্কুল জলাভূমিগুলো এড়ানোর পথ দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ভারতীয় সেনাদের অগ্রযাত্রায় গতি সঞ্চার করেন।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সদস্য সচিব হারুন হাবিব বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের শেষভাগে  ৩ থেকে ১৬ ডিসেম্বর যতগুলো অপারেশন হয়েছে তার নিয়ন্ত্রণে ছিলেন জ্যাকব। দেশের বিভিন্ন মফস্বল এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করতে করতে ঢাকায় অগ্রসর হওয়ার পক্ষে ছিলেন জেনারেল অরোরা। কিন্তু জ্যাকব বলেছিলেন, প্রথমেই যদি ঢাকাকে দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা যায় তাহলে পাকিস্তান বাহিনীকে দ্রুত আত্মসমর্পণ করানো সম্ভব হবে, যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতিও অনেক কম হবে।’

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দুটি বইও লিখেন জ্যাকব। ‘সারেন্ডার ইন ঢাকা, বার্থ অফ এ নেশন’ এবং ‘অ্যান ওডেসি ইন ওয়ার অ্যান্ড পিস’ বইয়ে জ্যাকব লিখে গেছেন সেইসব আগুনঝরা দিনের কথা, যে পথ ধরে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক এএকে নিয়াজী ঢাকার তখনকার রেসকোর্স ময়দানে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন, পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের।

জ্যাকবের পরিবার ইরাক থেকে প্রায় দেড় শতাব্দি আগে কলকাতায় বসতি গড়েন। তার জন্মও ১৯২৩ সালে কলকাতায়। ব্যবসায়ী বাবা ছেলেকে লেখাপড়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন দার্জিলিংয়ের একটি স্কুলে। ১৯৪১ সালে ১৮ বছর বয়সে ব্রিটিশ সরকারের অধীন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নাম লেখান জ্যাকব।

তিন যুগের সৈনিক জীবনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে অংশ নেন জ্যাকব। সাহসিকতার জন্য পেয়েছেন নানা  পদক। ১৯৭৮ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়ার পর জ্যাকব বিজেপিতে যোগ দেন এবং পার্টির নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। গোয়া ও পাঞ্জাবের গভর্নরের দায়িত্বও তিনি পালন করেন। বেশ কিছুদিন অসুস্থতার পর বুধবার তিনি দিল্লির একটি সামরিক হাসপাতালে ৯২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। 

২০০৮ সালের মার্চে বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে ঢাকায় এসেছিলেন জ্যাকব। সে সময় ভারতীয় হাই কমিশনে এক অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা ও ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অসাধারণ বীরত্বের সুবাদেই স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ। সীমিত সামর্থ্য নিয়ে স্রেফ তুমুল দেশপ্রেম পুঁজি করেই একটা শক্তিশালী নিয়মিত বাহিনীর বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে এনেছে তারা। আমরা তাদের সাহায্য করেছি, আমরা তাদের সহযোদ্ধা। কিন্তু তাদের লড়াইটা তারা নিজেরাই লড়েছে। চেতনার পুরোটা ঢেলে দিয়েই তারা তাদের লক্ষ্য পূরণ করেছে।’

এ সময় ঢাকায় এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ১ হাজার ৪০০ ভারতীয় সেনা প্রাণ হারিয়েছে, আহত হয়েছে ৪০০ জন।

আর জেনারেল আত্মসমর্পণ পর্ব নিয়ে অনেক কথা জানান তিনি। বলেন- সে দিন অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিলো বাংলাদেশ ও ভারতের সমন্বয়ে গঠিত মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করা নিয়ে। নিয়াজীর দাবি, ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করবেন। আমি জোর দিলাম যে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ বাহিনীর কাছেই আত্মসমর্পণ করতে হবে। পরে নিজের দেশে হামদুর রহমান কমিশনের সামনে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে আত্মসমর্পণের কারণ হিসেবে নিয়াজী বললেন আমি নাকি তাকে ব্ল্যাকমেইল করেছি!

অবশ্য আমি তাকে বলেছি যে আত্মসমর্পণ না করলে পরবর্তী হিংসাত্মক পরিস্থিতির দায় আমরা নেব না। এরপর তাকে ভাবার জন্য তিরিশ মিনিট সময় দিলাম। যখন ফিরে এলাম, নিয়াজী তখনও নিশ্চুপ। আমি তার সামনে গিয়ে বললাম, আপনি কি এই চুক্তি মানতে রাজি আছেন? পরপর তিনবার জিজ্ঞেস করার পরও কোনও উত্তর দিলেন না তিনি। তখন আমি দলিলটা হাতে নিয়ে বললাম, ধরে নিচ্ছি আপনি আমার দাবি মেনে নিয়েছেন।

এরপর দেখি তার চোখে জল। আমি সেদিকে করুণাভরে তাকিয়ে ভাবলাম, এই লোকটা বাংলাদেশের মানুষকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। আপনারা জানেন, তার সেনাবাহিনী কি করেছে, তাই নতুন করে তা বলার নেই। এজন্য আমি তাকে ঢাকাবাসীর সামনে আত্মসমর্পণ করানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। নিয়াজী আবারও বললেন তিনি তার সদর দপ্তরে আত্মসমর্পণ করবেন। আমি বললাম, না, আপনাকে রেসকোর্স ময়দানে ঢাকাবাসীর সামনে আত্মসমর্পণ করতে হবে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি নিয়মিত বাহিনীর প্রকাশ্য আত্মসমর্পণই শুধু নয়, আমি তাদের গার্ড অব অনার দিতেও বাধ্য করলাম।

এই মানুষটিই বলেছিলেন যে ঢাকা দখল করতে হলে তার লাশের ওপর দিয়ে করতে হবে। এজন্যই তাকে আমি ঢাকাবাসীর সামনে আত্মসমর্পণে বাধ্য করেছিলাম। উনি বড়াই করে বলেছিলেন আরো দু’সপ্তাহ ঢাকা দখলে রাখার মতো ক্ষমতা তার আছে। আগেই বলেছি আর দু’য়েকদিন দেরি হলেই জাতিসংঘ তাদের যুদ্ধবিরতি আদেশ কার্যকর করতো।

জ্যাকব মুক্তিযোদ্ধাদেরকেই দেশস্বাধীনে প্রাধান্য দেন। তারমতে, মুক্তিযোদ্ধা ও ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অসাধারণ বীরত্বের সুবাদেই স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ। সীমিত সামর্থ্য নিয়ে স্রেফ তুমুল দেশপ্রেম পুঁজি করেই একটা শক্তিশালী নিয়মিত বাহিনীর বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে এনেছে তারা। আমরা তাদের সাহায্য করেছি, আমরা তাদের সহযোদ্ধা। কিন্তু তাদের লড়াইটা তারা নিজেরাই লড়েছে। চেতনার পুরোটা ঢেলে দিয়েই তারা তাদের লক্ষ্য পূরণ করেছে। তাদের প্রতি আমার হৃদয়ভরা আশীর্বাদ এবং শ্রদ্ধা জানাই। তারাই সত্যিকার রত্ন যাদের নিয়ে এদেশ গর্ব করতে পারে।

 
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ জানুয়ারি ২০১৬/টিপু

No comments:

Post a Comment