পৃথিবী ধ্বংসের সময় লুকানোর নিরাপদ ১০ স্থান
অহ নওরোজ : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:24 Jan 2016 03:19:47 AM Sunday || Updated:24 Jan 2016 10:42:25 AM Sunday

ছবির কোলাজ
ত্রিস্তান দ্য চুনহা : এই দ্বীপটি দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত। এটাই সম্ভবত সমুদ্রের মধ্যে পৃথিবীর সব থেকে দূরবর্তী দ্বীপপুঞ্জ। প্রায় ২০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই দ্বীপটিতে প্রায় ৩০০ জন লোক বাস করে। আর মাত্র এই গুটিকয়েক লোক তাদের দিনাতিপাত করে শুধু মাছের উপরেই। সময়ের নিখুঁত কর্মজীবন এখানে সত্যিই খারাপ। কারণ দীর্ঘ অবসরের সুযোগ আছে দ্বীপটিতে। তবে অঞ্চলটি পৃথিবীর অনন্য অঞ্চল থেকে একটু বেশিই টেকসই এবং বিরোধহীন হওয়ায় আক্রমণের সম্ভাবনা ক্ষীণ।
গুয়াম : আমেরিকান দেশপ্রেমিকদের জন্য সব থেকে বেশি সুদূরপ্রসারিত ভরসা হল গুয়াম। কোন বড় যুদ্ধের কারণে যদি পৃথিবীর বড় ধরনের ক্ষতি হয় তাহলে সেক্ষেত্রে গুমাম সব থেকে নিরাপদ। কারণ এই শান্ত সবুজ এবং সমুদ্র বেষ্টিত অঞ্চলটিতে সব থেকে বেশি আমেরিকান মেলিটারি বাস করে। ফলে সব থেকে বেশি নিরাপত্তা দেওয়া হয় এই অঞ্চলটিতে। এই সুন্দর স্থান থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে পর্যটনশিল্পে সব থেকে বেশি আয় করে।
ডেনভার : আশ্চর্য রকমের সুন্দর এবং শক্তিশালী করে তোলা হয়েছে আমেরিকার প্রচুর তেল এবং যুদ্ধ সরঞ্জাম মজুদ থাকা এই অঞ্চলটিকে। পৃথিবীতে কোন ধরনের বড় যুদ্ধ বাধলে খুব সহজেই প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষমতা রাখে অঞ্চলটি। আর প্রাকৃতিক ভাবেও খুব শক্তিশালী অবস্থান ডেনভারের। উর্বর এই অঞ্চলটি সাগরপৃষ্ঠ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উপরে অবস্থিত। এছাড়া চারপাশ পর্বত দ্বারা বেষ্টিত হওয়ায় অঞ্চলটি অতি নিরাপদ।
এন্টার্কটিকা : সম্ভবত এন্টার্কটিকা-ই হল পৃথিবীর সব থেকে আতিথেয়তাশূন্য অঞ্চল। আর এটাই হল পৃথিবীর সব থেকে নিরাপদ অঞ্চল। যেখানে নিজেকে খুব সহজেই লুকিয়ে ফেলা যায়। যদি পর্যাপ্ত খাবার এবং এই তাপমাত্রার সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া যায় তবে এন্টার্কটিকা যেকোনো ক্ষেত্রে অতি উপযোগী । তবে এই অঞ্চলের বরফ গলার দিকে খেয়াল রাখতে হবে কারণ পৃথিবীর উষ্ণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কেপ টাউন : আফ্রিকার মধ্যে সব থেকে নিরাপদ অঞ্চল হল কেপ টাউন। পোতাশ্রয়ের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্যের কারণে আফ্রিকার অন্যতম জনপ্রিয় অঞ্চল এটি। দীর্ঘ পাহাড়ের এই অঞ্চলটির সঙ্গে বাইরের পৃথিবীর কোন সম্পর্ক নেই বললেই চলে। কারণ এটি সব সময় নিজের মতই শান্ত রয়েছে। সৌন্দর্য ছাড়া অর্থনৈতিকভাবে অন্য কিছুতেই সচ্ছ্বল না হওয়ায় অঞ্চলটি পশ্চিম বিদেশি কর্তৃত্ব থেকে আপেক্ষিকভাবে মুক্ত।
বার্ন : নিঃসন্দেহে সুইজারল্যান্ড তাকে শান্তভাবে পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। যার কারণে দেশটি এখনো পর্যন্ত অন্য কোন দেশের রোষানলে নেই। বার্ন হল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে রক্ষিত সুইস পর্বতমালা দিয়ে বেষ্টিত সুইজারল্যান্ডের রাজধানী এবং অন্য যেকোনো দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক ঝামেলা মুক্ত অঞ্চল। তাই বিশ্লেষকদের মতে পৃথিবীর যেকোনো যুদ্ধের সময় এখানে লুকিয়ে থাকাটা নিরাপদ। কারণ সুইসদের ৫০০ বছরের ঐতিহ্য এখনো পর্যন্ত কোন যুদ্ধ বিগ্রহে নষ্ট হয়ে যায়নি। টিকে আছে একনাগাড়ে।
নেস্কার দ্বীপ : ইংল্যান্ডে অবস্থিত নেস্কার দ্বীপ হল যেকোনো প্রভাবমুক্ত একটি দ্বীপ। কারণ এই দ্বীপটি ভার্জিন গ্রুপের চেয়ারম্যান রিচারড ব্যারেন্সন এর নিজস্ব মালিকানাধিন। মাত্র ২৮ জন ব্যক্তি বাস করে দ্বীপটিতে। তবে প্রচুর পরিমাণে দর্শনার্থী সেখানে উপস্থিত হয় প্রতিনিয়ত। যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হওয়ার কারণে দ্বীপটি নিরাপদ।
টেরা ডেল ফিয়াগো : প্রাকৃতিকভাবে বাতাসের আলাদা প্রবাহ থাকার কারণে দক্ষিণ আমেরিকার এই অঞ্চলটি পারমানবিক বিপর্যয়মুক্ত। আর যেহেতু এটি সান্তা ক্রুজের স্থান হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত তাই যে কেউই এই স্থানটিকে আক্রমণের কথা শুনে বিরক্ত হবেন। তাই পৃথিবীতে যেকোনো ধরনের বড় যুদ্ধ বাধলে স্থানটি নিরাপদ থাকবে বলে মনে করা হয়।
ইূকোন : কানাডার পশ্চিম প্রান্তস্থ ফেডারেল অঞ্চল হল ইূকোন। জনবিরল এই অঞ্চলটিতে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় দর্শনার্থীরা আসেন সময় কাটাতে। প্রচুর বন্যপ্রাণী শিকার ও ফাঁদে আটকানোর জন্য সময়গুলো বেশ ভালই উপভোগ করেন দর্শনার্থীরা। যেহেতু অঞ্চলটি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ না এবং জনবিরল সেহেতু এই অঞ্চলটিতে কোন ধরনের বড় সমস্যা হবার কথা নয়।
লুইস আইল : লুইস আইল কিংবা দ্য আইল অব লুইস অবস্থিত উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে। সব থেকে দ্রুত নৌযানে স্কটল্যান্ডের মূল ভুমি থেকে প্রায় দীর্ঘ তিন ঘণ্টা ভ্রমনের পর দেখা মেলে এই দ্বীপটির। এই গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় ৯৫০ বছর বয়স দ্বীপটির। তাই যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে বেশ নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে দ্বীপটি। আর যেহেতু এটি বেশ জনবিরল এবং বিরোধহীন দ্বীপ সেহেতু দ্বীপটিতে যেকোনো যুদ্ধের সময় আক্রমন হবার কোন সুযোগ নেই।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ জানুয়ারি ২০১৬/উজ্জল
No comments:
Post a Comment