Monday, 26 December 2016

Migration bird in hobigong , Bangladesh

অতিথি পাখির কলরবে মুখরিত লালচান্দ লেক

মামুন : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:26 Dec 2016   01:34:03 PM   Monday   ||   Updated:26 Dec 2016   02:02:24 PM   Monday
লালচান্দ লেকে অতিথি পাখির বিচরণ

লালচান্দ লেকে অতিথি পাখির বিচরণ

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ : লালচান্দ চা-বাগানের লেকগুলো এখন অতিথি পাখিতে মুখর। হবিগঞ্জ জেলা শহর থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরত্বে এই মনোরম দৃশ্যাবলির লালচান্দ লেক।

হবিগঞ্জ শহর থেকে ১১ কিলোমিটার গেলে শায়েস্তাগঞ্জ। এখান থেকে সিএনজি অটোরিকশা বা অন্য কোনো যানবাহনে আরো ৭ কিলোমিটার গেলে চুনারুঘাট উপজেলায় এই লালচান্দ চা-বাগান। এ বাগানের ভেতরেই ছোট-বড় মিলিয়ে কয়েকটি লেক (ঝিল)।

চারদিকে চা-গাছ। মাঝখানে জলাশয়। জলাশয় ভর্তি ছোট মাছে। আবার স্থানটি খুবই নীরব। আর এ কারণেই স্থানটি অতিথি পাখির খুব পছন্দের। প্রায় ১৪ বছর ধরেই শীতে এ লেকগুলোতে হাজার হাজার অতিথি পাখি আসছে। আবার শীতের শেষে তারা ফিরে যাচ্ছে।

প্রতিবছরের মতো এবারও শীতের শুরুতে হাজার হাজার অতিথি পাখি লালচান্দ লেকে এসেছে। এখানে তারা লেকের পানিতে গা ভাসিয়ে বিভিন্ন পোকামাকড়, ছোট মাছ খেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে অবস্থান করছে। স্থানটি এখন হাজার হাজার পাখির কলরবে মুখরিত হচ্ছে। তাতে মুগ্ধ হচ্ছে দর্শনার্থীরা। কেউ যাতে পাখিদের বিরক্ত করতে না পারে সেদিকে বাগান কর্তৃপক্ষ খুব সজাগ।

এ বাগানের বাসিন্দা পরিবেশপ্রেমী ডা. অক্ষয় কুমার বাবুল বলেন, ‘লেকগুলোতে লাল শাপলা ফুটেছে ব্যাপকভাবে। শীত এলেই অতিথি পাখিদের আগমন ঘটে লেকগুলোতে। চা-গাছবেষ্টিত মাঝখানের লেকে অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে স্থানীয় লোকদের ঘুম ভাঙে। সত্যি এ বিষয়টি অতি আনন্দের। নিজ চোখে না দেখলে কারো বিশ্বাস হবে না।’

স্থানীয় বাসিন্দা এস এম সুমন জানান, প্রতিবছরই অতিথি পাখিদের আগমনে বদলে যায় লালচান্দ লেকের রূপ। এ নান্দনিক দৃশ্য যেকোনো ব্যক্তিকে মুগ্ধ করবে।

বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, লেকগুলোতে অতিথি পাখি আসে শীতের মৌসুমে। এখানে পাখি শিকার করতে দেওয়া হয় না। কেউ যাতে পাখিদের কোনো প্রকার বিরক্ত না করতে পারে সে ব্যাপারেও তারা সজাগ রয়েছে।

অন্যদিকে তিনটি লেক নিয়ে একটি সুন্দর পর্যটন স্পট গড়ে তোলার দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা । তিনটি লেকে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার অতিথি পাখি রয়েছে। পরিবেশপ্রেমীদের দাবি অতিথি পাখিদের রক্ষার জন্য এখানে একটি তথ্যসেবা কেন্দ্র গড়ে তোলার।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহ এনামুর রহমান বলেন, ‘আগত অতিথি পাখিরা সাধারণত লেক ও বিলে বিচরণ করে। এ জেলায় ঝিলের (লেক) সংখ্যা প্রায় ২১টি আর সরকারি বিলের সংখ্যা ৬৭৫টি। কমবেশি সব বিলঝিলেই অতিথি পাখির বিচরণ রয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ইসহাক মিয়া বলেন, ‘অতিথি পাখি মারা যাবে না। এটি দণ্ডনীয় অপরাধ। তাদের বিরক্ত করা যাবে না। তারা যাতে সুস্থভাবে থাকতে পারে সেদিকে সবার নজর রাখা প্রয়োজন।’

স্থানীয় বন গবেষক আহমদ আলী বলেন, ‘অতিথি পাখি শিকার করা গুরুতর অপরাধ। পাখি আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে।’ তিনি পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।


রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/২৬ ডিসেম্বর ২০১৬/মামুন/টিপু/এএন

No comments:

Post a Comment