বিশ্বের দীর্ঘ ১০ সেতু (শেষ পর্ব)
রুহুল আমিন : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:24 Dec 2016 04:01:58 PM Saturday

অবকাঠামোগত উন্নয়ন যেকোনো দেশের জন্য প্রয়োজনীয়। যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে মানুষের জীবন ধারণের একটা গভীর সংযোগ আছে। যেসব দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো সেসব দেশের জীবনমান উন্নত এবং অর্থনৈতিকভাবেও তারা সমৃদ্ধ।
মানুষ অনেক অসাধ্যকে সাধন করেছে। মানুষ তার মেধা কাজে লাগিয়ে ভয়কে যেমন জয় করেছে তেমনি এগিয়ে নিয়ে গেছে সভ্যতাকে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে সেতু নির্মাণ করে নদী পারাপারের সময় বাঁচানো সভ্যতার অগ্রগতিরই নিদর্শন। বিশ্বের দীর্ঘ ১০ সেতু নিয়ে আমাদের আয়োজনে আজ পড়ুন শেষ প্রথম পর্ব :
৬. লেক পঞ্চারট্রেন কজওয়ে ব্রিজ : পৃথিবীর ষষ্ঠ বৃহত্তম ও আমেরিকার সর্ববৃহৎ সেতু এটি। ব্রিজটি তালিকার সবচেয়ে পুরাতন ব্রিজ। ব্রিজটি দুই অংশে নির্মাণ করা হয়।

দক্ষিণ অংশ নির্মাণ করা হয় ১৯৫৬ সালে। আর উত্তর অংশ নির্মাণ করা হয় ১৯৬৯ সালে। এই সেতুটি ৩৮.৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। এটি আমেরিকার লুজিয়ানায় অবস্থিত। বিংশ শতকের শুরুর দিকে সেতুটি নির্মাণের অনুমোদন হয়। কিন্তু নির্মাণ করা হয় মাঝামাঝি সময়ের পরের দিকে।
৭. ম্যানচ্যাক সোয়াম্প ব্রিজ : আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম সেতু এটি। ম্যানচ্যাক সোয়াম্প ব্রিজটি পৃথিবীর দ্বিতীয় পুরাতন সেতু। ১৯৭৯ সালে এটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সেতুটি ৩৬.৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ।

এটি নির্মাণ করতে প্রতি মাইলে খরচ হয়েছে ৭ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু এই সেতুটিই বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম সেতু, যা সম্পূর্ণ টোল ফ্রি। আর তৎকালীন সময়ে এটিই ছিল পৃথিবীর দীর্ঘতম সেতু।
৮. ইয়াংকুন ব্রিজ : বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সেতু, যেখানে ট্রেন সর্বোচ্চ গতিতে চলাচল করতে পারে। বেইজিং তিয়ানজিন আন্তঃরেল যোগাযোগের জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটি ৩৫.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ।

এই সেতুতে ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গভীর পর্যবেক্ষণের পর ২০০৭ সালে চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করা হয়।
৯. হ্যাংঝৌ বে ব্রিজ : বিশ্বের নবম বৃহত্তম দীর্ঘ সেতু হ্যাংঝৌ বে। চীনে অবস্থিত। সেতুটি চীনের জিয়াঝিং ও নিংবো শহরকে জেঝিয়াং প্রদেশের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। ২০০৭ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হলেও সেতুটি ২০০৮ সালে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

সেতুটিকে চীনের নিংবো শহরের মানুষের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সেতুটি নির্মাণের ফলে নিংবো শহর থেকে সাংহাইয়ের দূরত্ব ৪০০ কিলোমিটার থেকে ১৮০ কিলোমিটারে নেমে আসে। সেতুটি ৩৫.৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ, যা নির্মাণ করতে ১১.৮ বিলিয়ন ইয়ান খরচ হয়েছে।
১০. রানইয়াং ব্রিজ : সেতুটি চীনের ইয়াংৎজি নদীর ওপর নির্মিত। সেতুটি জেনজিয়াং প্রদেশের সঙ্গে ইয়াংহো প্রদেশকে সংযুক্ত করেছে। ২০০০ সালের অক্টোবরে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০০৫ সালে।

আর ২০০৫ সালের অক্টোবরে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। সেতুটি ৩৫.৬৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। আর নির্মাণ ব্যয় হয়েছে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার। সেতুটি নির্মাণের আগে এই স্থানে ফেরি পারাপারের ব্যবস্থা ছিল, যা খুব ধীর গতির ছিল। তখন অনেক সময় ব্যয় হতো। কিন্তু সেতু নির্মাণের পর এখন খুব অল্প সময়ের মধ্যে ইয়াংৎজি নদী পার হওয়া যায়।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ ডিসেম্বর ২০১৬/রুহুল/সাইফুল
No comments:
Post a Comment