Monday, 28 March 2016

Discover 9 planet

সৌরজগতে নবম গ্রহের অস্তিত্ব রয়েছে!

মনিরুল হক ফিরোজ : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:28 Mar 2016   05:21:44 PM   Monday   ||   Updated:28 Mar 2016   06:00:41 PM   Monday
সৌরজগতে নবম গ্রহের অস্তিত্ব রয়েছে!
বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : সৌরজগতের গ্রহ ৮টি। গ্রহগুলো হচ্ছে, বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, এবং নেপচুন।

অন্যদিকে সাম্প্রতিক সময়ে একদল বিজ্ঞানী দাবী করে আসছেন, সৌরজগতে রহস্যময় আরো একটি লুকানো গ্রহ রয়েছে, যেটাকে প্লানেট নাইন বা নবম গ্রহ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছিল। তবে নতুন গ্রহটির পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণাটি না থাকায়, সকলে কাছে এই দাবী বিশ্বাসযোগ্য ছিল না।

তবে এবার খ্যাতনামা এক জ্যোতির্বিজ্ঞানী তার গবেষণায় আরো প্রমাণাটি উপস্থাপন করে দাবী করেছেন, সৌরজগতে সত্যিই নবম গ্রহের অস্তিত্ব রয়েছে।

নবম গ্রহের অস্তিত্বের চমকপ্রদ ও বির্তকিত এই দাবীটি এই বছরের শুরুতে কয়েকজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী প্রথম করেছিলেন। ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, ‘সৌরজগতের কক্ষপথে কুইপার বেল্টে ৬টি বস্তু পর্যবেক্ষণ করে দেখেছিলেন, গ্রহাণু ও বরফপূর্ণ রহস্যময় বড় ও অনাবিস্কৃত কোনো কিছু সৌরজগতকে ধীরে ধীরে প্রদক্ষিণ করছে। ধারণা করা হয়েছে, সূর্যের থেকে সবচেয়ে দুরে থাকা গ্রহ নেপচুনের (নেপচুনের দূরত্বও সূর্য থেকে প্রায় সাড়ে চার’শ কোটি কিলোমিটার দুরে) চেয়েও ২০ গুণ দুরের কক্ষপথ দিয়ে চলাচল করছে নতুন এই গ্রহটি। তবে নতুন এই বস্তু বা গ্রহটি কোথায় হতে পারে সে সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত অস্পষ্ট একটি ধারণা রয়েছে।’

এই গবেষকদলটিরই এক জ্যোতির্বিজ্ঞানী মাইক ব্রাউন এবার গ্রহটির অস্তিত্ব নিশ্চিতের জোড়ালো তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, কুইপার বেল্টে তিনি আরেকটি বস্তুর অবস্থান শণাক্ত করেছেন, যেটিও লক্ষণীয়ভাবে সৌরজগতের কক্ষপথে নতুন গ্রহের অস্তিত্ব নির্দেশ করছে। টুইটারে টুইট করে তিনি দাবী করেন, ‘সৌরজগতে কুইপার বেল্ট, ধূমকেতুর ব্যান্ড এবং গ্রহাণুর মাধ্যমে নতুন গ্রহটির অস্থিত্ব বোঝা গেছে।’

তিনি একটি মডেল উপস্থাপন করে বলেন, এর মাধ্যমে পরিস্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে যে, সূর্যের কক্ষপথে একটি অস্বাভাবিক কুইপার বেল্ট অবজেক্ট পরিভ্রমণ করছে।

নবম গ্রহের অস্তিত্বের দাবী করা হলেও এর অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সৌরজগতে নবম গ্রহের অস্তিত্ব নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানী মাইক ব্রাউনের দাবীটিও অন্যান্য বিজ্ঞানীদের পক্ষে পরীক্ষা করে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার একজন পোস্টডক্টরাল গবেষক অ্যান-মেরি ম্যাডিগান সম্প্রতি বলেন, ‘নবম গ্রহের অস্তিত্ব সেখানে নাও থাকতে পারে।’ তিনি বরঞ্চ উল্টো ব্যাখ্যায় বলেন যে, কুইপার বেল্ট গ্রহাণু ও বামনগ্রহের মতো বড় গোলাকার কিছু নির্দেশ করতে পারে, যার অর্থ আদতে নবম গ্রহ নেই।’

অ্যান-মেরি ম্যাডিগান বলেন, ‘বর্তমানে কুইপার বেল্টের তুলনায় অনেক দূরে অবস্থিত নতুন কোনো কুইপার বেল্ট থাকতে পারে, তবে তা গ্রহের অস্তিত্ব বোঝাচ্ছে না।’

হাওয়াই টেলিস্কোপ মাধ্যমে বর্তমানে এ ব্যাপারে আরো বেশি তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা, কুইপারে বেল্টে যদি আরো বেশি কোনো বস্তুর উপস্থিতি পাওয়া যায়, তাহলে হয়তো নবম গ্রহের অস্তিত্ব সত্যি বলে মেনে নেওয়া হবে।

যদি নবম গ্রহের অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়, তাহলে সৌরজগতের মডেল আবারও নতুন করে সাজাতে হবে বিজ্ঞানীদের। এর আগে ২০০৬ সালে একবার তাদেরকে এ কাজ করতে হয় গ্রহের তালিকা থেকে প্লুটোকে বাদ দেওয়ার সময়। সে বছর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রনমিক্যাল ইউনিয়ন নতুন করে গ্রহের সংজ্ঞা নির্ধারণ করায় তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায় সৌরজগতের সাবেক এই নবম গ্রহ। ১৯৩০ সালে আবিষ্কারের পর ৭৫ বছর এটি গ্রহের মর্যাদা ধরে রাখে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ মার্চ ২০১৬/ফিরোজ

No comments:

Post a Comment