Monday, 2 May 2016

Big ben Renovation

থেমে যাবে বিগ বেনের পেন্ডুলাম

সৃষ্টি ঘটক : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:02 May 2016   04:57:54 PM   Monday   
থেমে যাবে বিগ বেনের পেন্ডুলাম
সৃষ্টি ঘটক : চলছে বিরামহীন, ষার্ধশত বছরের বেশি সময় ধরে। কিন্তু আর কত! এবার একটু জিড়িয়ে নিতে চায় ‘বিগ বেন’। শুধু জিড়াতেই নয়, সংস্কার আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে এটির।

১৫৭ বছর টানা চলতে থাকা লন্ডনের জগতখ্যাত ঘণ্টাঘড়ি ‘বিগ বেন’ মূলত সংস্কার কাজের প্রয়োজনেই থেমে যাবে।

বিগ বেন যে টাওয়ারটিতে অবস্থান করছে অর্থাৎ এলিজাবেথ টাওয়ারটিও ঠিকঠাক করা হবে। এ জন্য লাগবে তিন বছর। এই সংস্কারের কাজ শুরু হবে আগামী বছর। কিন্তু পুরো তিন বছরই নয়, বিগ বেনের ঘণ্টাধ্বনি বন্ধ থাকবে মাত্র কয়েক মাস।

লন্ডনের ওয়েস্টমিন্সটার এলাকার সংসদ ভবনের উত্তরাংশের এলিজাবেথ টাওয়ার বা ক্লক টাওয়ারে অবস্থিত বিগ বেন। সুবিশাল ঘড়ি ‘বিগ বেন’ নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক। প্রথমে এটির ডাকনাম ছিল ‘গ্রেট বেল’। অনেকের ধারণা, যেহেতু বেঞ্জামিন হল গ্রেট বেলের নির্মাণ কাজের তদারক ছিলেন তাই তার নামানুসারে এই নামকরণ করা হয়। আবার কেউ মনে করেন, ইংরেজ মুক্তিযোদ্ধা বেঞ্জামিন কন্টের নামানুসারে বিগ বেন নামকরণ করা হয়।

বিগ বেন তৈরি করা হয় ১৮৫০ সালে। ক্লক টাওয়ারের স্থপতি চার্লস ব্যারি এবং বিগ বেনের স্থপতি অগাস্টাস পাগিন। এটি নির্মাণ করতে সময় লাগে পুরো ১৩ বছর। আশ্চর্যের বিষয় এই যে, নির্মাণের পর আজ পর্যন্ত কোনো মেরামত ছাড়াই নির্ভুলভাবে পার্লামেন্ট ভবনে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঘণ্টাধ্বনি দিয়ে যাচ্ছে বিগ বেন। কিন্তু এখন সময় এসেছে, এটি মেরামতের।

জানা গেছে, এই ক্লক টাওয়ারের ঢালাই করা ছাদ মরীচায় জর্জরিত হওয়ার পথে। শুধু তাই নয়, সিমেন্টের যে কাঠামো তাতে দেখা দিয়েছে ফাঁটল। ক্লক টাওয়ারের কাচের খণ্ডগুলোও পরিবর্তন করা দরকার।

ঘড়ির পেন্ডুলামটি ঠিকমতো কাজ করছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। পেন্ডুলামটি যে স্প্রিং দিয়ে ঝোলানো আছে সেটিও পরিবর্তন করা অত্যন্ত জরুরি। সংস্কার করা না হলে হয়তো নষ্ট হতে শুরু করবে পেন্ডুলামটি। ফলে কিছু দিনের জন্য থমকে যাবে বিগ বেনের পেন্ডুলাম।

ক্লক টাওয়ারের ঘণ্টাটির ওজন সাড়ে ১৩ টন! প্রথমে বিগ বেন বলতে মূলত এই বিশাল ঘণ্টাটিকেই বোঝানো হতো। কিন্তু এখন পুরো ক্লক টাওয়ারটিকেই বিগ বেন বলা হয়। বর্তমানে এটির সংস্কার কাজে খরচ হবে ৪ কোটি পাউন্ডের বেশি।

এটি নির্মাণে ২৬০০ কিউবিক মিটার ইট এবং ৮৫০ কিউবিক মিটার পাথর ব্যবহার করা হয় এবং এগুলো সবই সংগ্রহ করা হয় ওয়েস্টমিন্সটার নদী থেকে।

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সিংহাসনে বসার সুবর্ণজয়ন্তি উপলক্ষে তার সম্মানে ২০১২ সালে ক্লক টাওয়ারের নাম পরিবর্তন করে এলিজাবেথ টাওয়ার রাখা হয়। এখন দুই নামেই টাওয়ারটি পরিচিত। জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেসকো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করে।
 
এডমন্ড বাকেটের নকশা করা ঘড়িটি ১৮৫৯ সালের ৩১ মে থেকে বিরামহীন সময় জানাতে শুরু করে। বিবিসি রেডিও ফোর-এ ঘড়িটির ঘণ্টাধ্বনি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। 

হাউস অব কমন্স কমিশনের মুখপাত্র ও লিব ডেম পার্টির এমপি টম ব্রেক এলিজাবেথ টাওয়ারটিকে ‘যুক্তরাজ্যের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের প্রতীক’ বলে অভিহিত করেন। তিনি আরো বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পূর্বপুরুষের নির্মিত এই স্থাপত্যের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ণ রাখা আমাদের কর্তব্য। যদিও এই সংস্কার কাজ করতে সময় লাগছে, তবে এর স্থায়ীত্বকাল হবে দীর্ঘ। ফলে বিগ বেন পরবর্তী প্রজন্মের জন্য থাকবে অক্ষত।’


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ মে ২০১৬/রাসেল পারভেজ

No comments:

Post a Comment