মাগুরার ‘বৃদ্ধ শিশু’ বায়োজিদ গুরুতর অসুস্থ
মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন
: রাইজিংবিডি ডট কম
প্রকাশ: ২০১৭-০২-০৮ ৩:২৮:৪৬ পিএম || আপডেট: ২০১৭-০২-০৮ ৩:৩০:৩২ পিএম
![]() |
মাগুরা প্রতিনিধি : দেশজুড়ে
ব্যাপক আলোচিত মাগুরার সেই ‘বৃদ্ধ শিশু’ বায়োজিদ এখন গুরুতর অসুস্থ। তার
বয়স এখন ৫ বছর। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে নানা পরিবর্তন এসেছে। সাথে
বাড়ছে অসুস্থতাও।
বিরল রোগ প্রজেরিয়া-য় আক্রান্ত মাগুরার আলোচিত অশীতিপর বৃদ্ধের মত চেহারার জন্য খ্যাত বায়েজিদ আবারও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আজ বুধবার দুপুরে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের খালিয়া উত্তর পাড়া গ্রামে বায়েজিদের বাবা-মা তার এই অসুস্থতার কথা জানালেন।
বায়েজিদের বাবা লাভলু শিকদার জানান, বায়েজিদ প্র¯্রাবে কষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া সর্দি, কাশি এবং প্রচন্ড শ্বাস-কষ্টসহ নানা ধরণের জটিলতায় ভূগছে। বায়েজিদের বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রী। দারিদ্রতার কারণে তাদের পক্ষে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। শিশুটির চিকিৎসা চালিয়ে যেতে তিনি সবার সহযোগিতা চেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২২ মে রাইজিংবিডি ডটকমে ‘মায়ের কোলে বৃদ্ধ শিশু’ শিরোনামে সর্বপ্রথম বায়েজিদকে নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর দেশ-বিদেশের প্রায় সব গণমাধ্যমে বিষয়টি গুরুত্ব পায়। খবরটি ব্যাপক আলোচিত হলে সরকার বায়েজিদের চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রায় দেড় মাস ধরে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা চলে। বেশ কিছু দিন সুস্থ থাকার পর বায়েজিদ আবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
মাগুরা সদর হাসপাতালের মেডিসিন রোগ বিশেষজ্ঞ দেবাশিষ বিশ্বাস জানান, নানাবিধ শারীরিক সমস্যার সাথে সাথে বিরল রোগ প্রজেরিয়া-য় আক্রান্ত বায়েজিদের পুরুষাঙ্গের চামড়া নীচের দিকে ঝুলে গেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এ ধরণের শারীরিক জটিলতাকে ’প্রিরিপিউস’ বলা হয়।
তার মতে, এ জটিলতা নিরসনে অপারেশন প্রয়োজন। তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে সার্জারি কনসালটেন্ট-এর সাথে পরামর্শ করা হলে তিনি বায়েজিদের ক্ষেত্রে এ অপারেশন ঝুঁকিপূর্ণ বলে মতামত দিয়েছেন।

২০১২ সালের মে মাসে মাগুরার মাতৃসদন হাসপাতালে তৃপ্তি খাতুন বৃদ্ধ মানুষের চেহারা সম্বলিত বায়েজিদের জন্ম দেন। দিনে দিনে বায়েজিদের শরীরে বার্ধক্যের ছাপ আরো প্রকট হতে থাকে। জন্মের তিন মাসের মধ্যেই তার দাঁত ওঠে। জন্মের পর বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসকদের স্মরণাপন্ন হলেও স্বাভাবিক চেহারায় ফিরে আসেনি শিশুটির।
গত বছর ২৯ মে মাগুরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত ৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড জানায় বায়োজিদ বিরল প্রজেরিয়া রোগে আক্রান্ত। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সে সময় তাকে তারা উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরিক্ষা ও দেড় মাস ধরে চিকিৎসা করানোর পর কোন ফল না পেয়ে বাবা লাবলু শিকদার শিশুপুত্র বায়োজিদকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।
মাগুরা সদর হাসপাতালের মেডিসিন রোগ বিশেষজ্ঞ দেবাশিষ বিশ্বাস বললেন, প্রজেরিয়া রোগটি একটি বিরল জেনেটিক অসঙ্গতি। এক কোটি শিশুর মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত একজন শিশুর অস্তিত্ব পাওয়া যেতে পারে। পৃথিবীতে এ পর্যন্ত প্রজেরিয়া রোগে আক্রান্ত ১০০টির মতো রোগী শনাক্ত হয়েছে।
দৈহিক বৃদ্ধি এবং দৃষ্টিশক্তিসহ অন্যান্য বিষয় স্বাভাবিক থাকলেও এ রোগে আক্রান্ত শিশুদের শরীরের চামড়া বৃদ্ধ মানুষদের মত কুচকানো হয়। তবে, এ রোগে আক্রান্ত শিশুরা সাধারণত: ১৩/১৪ বছরের বেশিদিন বাঁচে না বলে জানান তিনি।
রাইজিংবিডি/মাগুরা/ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/ মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন/টিপু
বিরল রোগ প্রজেরিয়া-য় আক্রান্ত মাগুরার আলোচিত অশীতিপর বৃদ্ধের মত চেহারার জন্য খ্যাত বায়েজিদ আবারও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আজ বুধবার দুপুরে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের খালিয়া উত্তর পাড়া গ্রামে বায়েজিদের বাবা-মা তার এই অসুস্থতার কথা জানালেন।
বায়েজিদের বাবা লাভলু শিকদার জানান, বায়েজিদ প্র¯্রাবে কষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া সর্দি, কাশি এবং প্রচন্ড শ্বাস-কষ্টসহ নানা ধরণের জটিলতায় ভূগছে। বায়েজিদের বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রী। দারিদ্রতার কারণে তাদের পক্ষে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। শিশুটির চিকিৎসা চালিয়ে যেতে তিনি সবার সহযোগিতা চেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২২ মে রাইজিংবিডি ডটকমে ‘মায়ের কোলে বৃদ্ধ শিশু’ শিরোনামে সর্বপ্রথম বায়েজিদকে নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর দেশ-বিদেশের প্রায় সব গণমাধ্যমে বিষয়টি গুরুত্ব পায়। খবরটি ব্যাপক আলোচিত হলে সরকার বায়েজিদের চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রায় দেড় মাস ধরে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা চলে। বেশ কিছু দিন সুস্থ থাকার পর বায়েজিদ আবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
মাগুরা সদর হাসপাতালের মেডিসিন রোগ বিশেষজ্ঞ দেবাশিষ বিশ্বাস জানান, নানাবিধ শারীরিক সমস্যার সাথে সাথে বিরল রোগ প্রজেরিয়া-য় আক্রান্ত বায়েজিদের পুরুষাঙ্গের চামড়া নীচের দিকে ঝুলে গেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এ ধরণের শারীরিক জটিলতাকে ’প্রিরিপিউস’ বলা হয়।
তার মতে, এ জটিলতা নিরসনে অপারেশন প্রয়োজন। তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে সার্জারি কনসালটেন্ট-এর সাথে পরামর্শ করা হলে তিনি বায়েজিদের ক্ষেত্রে এ অপারেশন ঝুঁকিপূর্ণ বলে মতামত দিয়েছেন।

২০১২ সালের মে মাসে মাগুরার মাতৃসদন হাসপাতালে তৃপ্তি খাতুন বৃদ্ধ মানুষের চেহারা সম্বলিত বায়েজিদের জন্ম দেন। দিনে দিনে বায়েজিদের শরীরে বার্ধক্যের ছাপ আরো প্রকট হতে থাকে। জন্মের তিন মাসের মধ্যেই তার দাঁত ওঠে। জন্মের পর বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসকদের স্মরণাপন্ন হলেও স্বাভাবিক চেহারায় ফিরে আসেনি শিশুটির।
গত বছর ২৯ মে মাগুরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত ৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড জানায় বায়োজিদ বিরল প্রজেরিয়া রোগে আক্রান্ত। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সে সময় তাকে তারা উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরিক্ষা ও দেড় মাস ধরে চিকিৎসা করানোর পর কোন ফল না পেয়ে বাবা লাবলু শিকদার শিশুপুত্র বায়োজিদকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।
মাগুরা সদর হাসপাতালের মেডিসিন রোগ বিশেষজ্ঞ দেবাশিষ বিশ্বাস বললেন, প্রজেরিয়া রোগটি একটি বিরল জেনেটিক অসঙ্গতি। এক কোটি শিশুর মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত একজন শিশুর অস্তিত্ব পাওয়া যেতে পারে। পৃথিবীতে এ পর্যন্ত প্রজেরিয়া রোগে আক্রান্ত ১০০টির মতো রোগী শনাক্ত হয়েছে।
দৈহিক বৃদ্ধি এবং দৃষ্টিশক্তিসহ অন্যান্য বিষয় স্বাভাবিক থাকলেও এ রোগে আক্রান্ত শিশুদের শরীরের চামড়া বৃদ্ধ মানুষদের মত কুচকানো হয়। তবে, এ রোগে আক্রান্ত শিশুরা সাধারণত: ১৩/১৪ বছরের বেশিদিন বাঁচে না বলে জানান তিনি।
রাইজিংবিডি/মাগুরা/ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/ মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন/টিপু
No comments:
Post a Comment