Friday, 10 February 2017

Antertica create info

যেভাবে হলো অ্যান্টার্কটিকা

স্বপ্নীল মাহফুজ : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০২-১০ ৮:১১:৫১ এএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০২-১০ ১২:১১:২১ পিএম
প্রতীকী ছবি
স্বপ্নীল মাহফুজ : বিজ্ঞানীরা মনে করছেন পরিশেষে তারা জানতে পেরেছেন অ্যান্টার্কটিকা কীভাবে গঠিত হয়েছে এবং সেখানে আমাদের ভবিষ্যত সম্পর্কে একটা মজার শিক্ষা রয়েছে।

পৃথিবীর দক্ষিণে- অধিকাংশ জায়গাজুড়ে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ অবস্থিত এবং এটি শীতলতম, শুষ্কতম এবং ঝড়ো এলাকা। বিশ্বের প্রায় চার হাজার বিজ্ঞানী অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে বিভিন্ন রকম গবেষণা চালিয়ে আসছেন, সেগুলোর মধ্যে একটি ছিল উল্কাপিন্ডের অনুসন্ধান বা অনুসরণ।

তা সত্ত্বেও, বরফের চাদর বেষ্টিত এ মহাদেশ কিভাবে তৈরি হয়েছে এটা এখনো একটা রহস্য। প্রায় ৩৪ মিলিয়ন বছর আগে খুব দ্রুত বরফের আস্তরণের মাধ্যমে অ্যান্টার্কটিকা গঠিত হয়েছে, যা বিজ্ঞানীদেরকে ভাবনায় ফেলে দেয়।

এই বরফ চাদর গঠনের পেছনে দুটি প্রধান তত্ত্ব রয়েছে যার ফলে এমনটি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। একটি হচ্ছে- বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন এবং অপরটি হচ্ছে- সমুদ্রের গতি পথের ওপর ভিত্তি করে।

কিন্তু সম্প্রতি একটি নতুন গবেষণার পর ‘নেচার জিওসাইন্স’ সাময়িকীতে  একটি বিশেষ তথ্য প্রকাশিত হয়। একদল গবেষক ধারণা করেন, ‘যদি দুটি তত্ত্বকে একত্রে মিলিত করা হয় তাহলে কেমন হয়?’

এ বিষয়ে প্রথম তত্ত্বটি ছিল- প্রায় ৬৬ মিলিয়ন বছর আগে সিনোজোয়িক যুগের পর থেকে বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা স্থিরভাবে কমতে থাকে। এভাবে যখন এটি একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে পৌঁছে যায় তখনই বরফ জমে অ্যান্টার্কটিকা গঠন করে।

দ্বিতীয় তত্ত্বটি হল- হয়তো ড্রেক প্যাসেজ এর পরিবর্তনের ফলে এমন হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকা এবং অ্যান্টার্কটিকার সমুদ্র মধ্যে জলের গভীরতা ও স্রোতের পরিবর্তন আনে। অ্যান্টার্কটিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যে যখন দূরত্ব বাড়ছিল তখন জলের তলদেশে একটি শক্তিশালী বলের আবির্ভাব ঘটে। একে অ্যান্টার্কটিক সারকুম্পলার কারেন্ট (এসিসি) বলা হয়। এটির ফলে উত্তর আটলান্টিক ও মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় উষ্ণ জল অ্যান্টার্কটিকা দিকে যেতে থাকে।

ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথিবী ও গ্রহ বিজ্ঞান বিভাগের কিছু বিজ্ঞানী এ বিষয় নিয়ে তাদের নতুন গবেষণায় বলেছেন, ড্রেগ প্যাসেজ পরিবর্তন এর ফলে প্রথমত উষ্ণ জল উত্তরের দিকে প্রবাহিত হয়েছে যার ফলে ৩৫ মিলিয়ন বছর আগে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ অধিক বৃষ্টির ফলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান প্রচুর হ্রাস পেয়েছে কারণ বৃষ্টির ফলে প্রচুর গাছপালা জন্মেছে যা কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান কমিয়ে এনেছে। এবং সিলিকেট নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আবহাওয়া জনিত কারণে কার্বন ডাই অক্সাইড নবগঠিত চুনাপাথরে ভেতরে আটকা পড়েছে। অবশেষে, কার্বন ডাই অক্সাইডের এতো কমে গিয়েছে যে, অ্যান্টার্কটিকাকে দ্রুত বরফের চাদরে ঢেকে দিতে যথেষ্ট ছিল।

‘এটা আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে।’- ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথিবী ও গ্রহ বিজ্ঞান বিভাগের বিজ্ঞানী ড. গ্যালেন হালভারসন এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরিবেশের অনেক পরিবর্তন ঘটতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি খুবই জটিল কিন্তু এর প্রভাব অনেক। সমুদ্রের স্রোতের গতি পরিবর্তনের ফলে একটি মহাদেশ গঠিত হয়েছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের ফল।

তথ্যসূত্র: বিজনেস ইনসাইডার



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/ফিরোজ

No comments:

Post a Comment