ভূমিকম্প হলে কীভাবে বাঁচার চেষ্টা করবেন?
টিপু : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:04 Jan 2016 01:25:19 PM Monday || Updated:04 Jan 2016 06:22:53 PM Monday

রেডক্রসের পরামর্শ মতে, ভূমিকম্পের সময় ‘ড্রপ’ ‘কাভার’ ‘হোল্ড অন’ পদ্ধতি আত্মরক্ষার সবচেয়ে ভালো উপায়। এতে তিনটা বিষয় মাথায় রাখবেন। এক. কম্পন শুরু হলে মেঝেতে বসে পড়ুন (ড্রপ), দুই. কোনো শক্ত টেবিল, ডেস্ক বা নিচে জায়গা আছে এমন শক্ত ও দৃঢ় আসবাবের নিচে আশ্রয় নিন (কাভার)। তিন. গুটিশুটি হয়ে বসে থাকুন (হোল্ড অন)।
এই আত্মরক্ষা পদ্ধতি যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলোতে বেশি কার্যকর। সেখানে ভবন পুরো ধসের পড়ার চেয়ে আংশিক ধসে বা আসবাবপত্র পড়ে আহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
যদিমনে করেন ভবন নির্মাণে ভূমিকম্পের বিষয়টি অবহেলা করা হয়েছে, সম্ভব হলে দ্রুত ভবন থেকে বেরিয়ে পড়–ন। লিফট ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ ভূমিকম্পের পর পরই আবারও কম্পন হতে পারে, যাকে বলা হয় ‘আফটার শক’ বা পরাঘাত। ঘটতে পারে বিদ্যুৎ বিপর্যয়। তখন লিফট হয়ে উঠবে মরণফাঁদ। তাই বেরিয়ে আসতে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। ভুল করেও সিঁড়িতে আশ্রয় নেবেন না। ভবন ধসে পড়লে সবার আগে সিঁড়ি ধসে পড়ার শঙ্কাই বেশি। তাড়াহুড়ো করবেন না। যথাসম্ভব মাথা ঠান্ডা রাখুন।
দেখা গেছে, ভূমিকম্পের আতঙ্ক থেকে হুট করে ভবন থেকে লাফিয়ে পড়া, তাড়াহুড়ো করতে দিয়ে আহত ও নিহতের ঘটনা অনেক।
ভবন ধসে পড়ার সময় ছাদ ধসে পড়লে সেটা যার ওপরে পড়ে, ঠিক তার পাশে একটা ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়। একে বলা হয় ‘সেফটি জোন’। তাই ভূমিকম্পের সময় সোফা বা এ ধরনের বড় শক্তিশালী আসবাবের পাশে গুটিশুটি মেরে বসে থাকুন।
ভবনের এমন কোনো দেয়ালের পাশেও আশ্রয় নিতে পারেন, যে দেয়ালটি বাইরের দিকে। যেন সেই একটি দেয়াল ভেঙে আপনাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। আশ্রয় নেওয়ার সময় মাথার ওপর এক বা একাধিক বালিশ নিয়ে রাখবেন। মাথার চোট বাঁচানো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
ঘরের কোণে এবং কলাম ও বিমের তৈরি ভবন হলে কলামের গোড়ায় আশ্রয় নিতে পারেন। নির্মাণের দিক দিয়ে এগুলো তুলনামূলক বেশি মজবুত হয়।
আধা পাকা বা টিন দিয়ে তৈরি ঘর থেকে বের হতে না পারলে শক্ত খাট বা চৌকির নিচে আশ্রয় নিন।
ভবনের উঁচু তলার দিকে থাকলে কিংবা ভূমিকম্প রাতে হলে দ্রুত বের হওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভবনের ভেতরে আশ্রয় নেওয়ার ওপরের পরামর্শগুলো মেনে চলুন।
গাড়িতে থাকলে যথাসম্ভব নিরাপদ স্থানে থাকুন। আশপাশে বড় ভবন নেই এমন জায়গায় গাড়ি পার্ক করুন। কখনো সেতুর ওপর গাড়ি থামাবেন না।
ভূমিকম্পের পর পরই গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগগুলো পরীক্ষা করে নিন। ভূমিকম্পের ফলে এসব সংযোগে সমস্যা হতে পারে। গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের প্রধান সংযোগগুলো বন্ধ করে দিন। কোথাও কোনো লিক বা ক্ষতি দেখলে আগে মেরামতের উপায় খুঁজুন।
টাকা বা অলঙ্কারের মতো কোনো কিছু সঙ্গে নেওয়ার জন্য অযথা সময় নষ্ট করবেন না। অধিকাংশ ভূমিকম্প মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই ভয়ংকর সর্বনাশ ঘটিয়ে দেয়।
বড় ভূমিকম্পের পর পরই আরেকটা ছোট ভূমিকম্প (আফটার শক) হয়। তাই একবার ভূমিকম্প থেমে গেলেই নিশ্চিত হবেন না। বরং সতর্ক থাকুন।
যদি ভবন ধসে আটকা পড়েন, বেরিয়ে আসার কোনো পথ খুঁজে না পান, আশা হারাবেন না। সাহস রাখুন। সাহস আর আশাই আপনাকে বাঁচিয়ে রাখবে। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন। উদ্ধারকারী পর্যন্ত আপনার চিৎকার বা সংকেত পৌঁছানো যায় কী করে, কৌশল খুঁজুন।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ জানুয়ারি ২০১৬/টিপু
ভূমিকম্পের সময় করণীয়
ফুয়াদ সৌরভ : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:11 May 2015 07:36:54 AM Monday || Updated:11 May 2015 09:32:40 AM Monday

ফাইল ফটো
ভূমিকম্পের সময় করণীয় কিছু পরামর্শ (অবশ্যই অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নেবেন) :
বাইরে থাকলে :
• আয়ত্বের ভেতর থাকলে দৌড়ে খোলা আকাশের নিচে চলে আসবেন, তবে তাড়াহুড়া করবেন না। পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার স্মরণ এবং সাহায্য কামনা করুন।
• কোনো বড় ধরনের স্থাপনার পাশে অবস্থান নেবেন না।
• নিজেকে নিরাপদ মনে করলে প্রথমেই খেয়াল করবেন কোথাও আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন কি-না।
• সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় বসবাস হলে সেখান হতে নিরাপদে প্রস্থান করুন।
• মোবাইল ফোন সঙ্গে থাকলে ইমারজেন্সি সহায়তার জন্য যোগাযোগ করুন এবং সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করুন।
• পরিবারের লোকজনকে নিজের পাশে রাখার চেষ্টা করবেন এবং তাদের সান্ত্বনা দেবেন।
ঘরের ভিতরে থাকলে :
• আয়ত্বের ভেতর থাকলে দৌড়ে খোলা আকাশের নিচে চলে আসবেন। তবে তাড়াহুড়া করবেন না এবং পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার স্মরণ এবং সাহায্য কামনা করুন।
• যদি বাসা থেকে বের হতে না পারেন তবে বাসার খাট বা এ জাতীয় কোনো আসবাবপত্রের নিচে অবস্থান নিন এবং ফ্লোরের ওপর শুয়ে পড়ুন।
• কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে নিন।
• পরিবারের লোকজনকে নিজের পাশে রাখার চেষ্টা করবেন এবং তাদের সান্ত্বনা দেবেন।
• ভূমিকম্প শেষ হয়ে গেলে দেখে নিন সব ঠিকঠাক আছে কি না। নিজে ঠিক থাকলে নিশ্চিত হোন কারো সাহায্য লাগবে কি-না।
• ভূমিকম্পের পর উদ্ধারকর্মীর সহায়তার জন্য মোবাইল সঙ্গে থাকলে যোগাযোগ করুন অথবা যথাসম্ভব মুখ দিয়ে আওয়াজ করে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করুন।
গাড়িতে থাকলে :
• গাড়িকে নিরাপদ অবস্থানে নিয়ে যাবেন। খেয়াল রাখবেন যাতে কোনো বড় ধরনের স্থাপনার বা গাছের পাশে অবস্থান না হয়।
• পার্কিং ব্রেক করে নেবেন।
• মোবাইল সঙ্গে থাকলে দ্রুত ইমারজেন্সি সহায়তাকেন্দ্রে যোগাযোগ করুন।
• পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন এবং তাদের আশ্বস্ত করুন আপনি নিরাপদে আছেন।
• পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার কাছে নিরাপদে দূর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন এজন্য শুকরিয়া জ্ঞাপন করুন।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ মে ২০১৫/ফুয়াদ সৌরভ/সাইফুল
No comments:
Post a Comment