Sunday, 1 January 2017

After 20 years talk a Japany couple !!!!!!

২০ বছর নীরবতার পর

সাইফ বরকতুল্লাহ : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:02 Jan 2017   11:48:43 AM   Monday   ||   Updated:02 Jan 2017   12:01:17 PM   Monday
জাপানি কাতায়ামু-ইয়ুমি দম্পতি

জাপানি কাতায়ামু-ইয়ুমি দম্পতি

সাইফ বরকতুল্লাহ : কেন এই নিঃসঙ্গতা, কেন এই মৌনতা, আমাকে ঘিরে.../কেউ না জানুক কার কারণে/কেউ না জানুক কার স্মরণে, মন পিছু টানে.../তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে.../তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে...। এই গানের মতোই জীবন ইয়ুমির। সম্পর্ক কত যে কঠিন হতে পারে ইয়ুমির চেয়ে পৃথিবীতে মনে হয় আর কেউ উপলব্ধি করেনি।

জাপানি কাতায়ামু-ইয়ুমি দম্পতি। ২৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে সংসার করছেন। তিন সন্তানের বাবা কাতায়ামু ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথা বলেছেন। অথচ দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে স্ত্রী ইয়ুমির সঙ্গে কথা বলেননি তিনি।

সময় বয়ে যায়, দেখা হয় প্রতিদিনই, থাকা হয় একসঙ্গে। খাওয়া-দাওয়া, ঘুম, সন্তানদের পালন-  সবই হয়েছে নিয়মমতো। শুধু অভিমানে স্বামী কথা বলেননি। অনেক চেষ্টা করেছেন স্ত্রী, প্রিয়তম স্বামীকে বুঝিয়েছেন, কিন্তু স্বামী সবই শুনেছেন, হাত নেড়েছেন, অথচ কথা বলেননি।

Top_Photo
নারা পার্কে কথা বলছেন কাতায়ামু-ইয়ুমি

কাতায়ামু কথা না বললেও ইয়ুমি সব সময় ভালোবেসে গেছেন তাকে। শত কষ্ট সহ্য করেছেন। সব সময় ভাবতেন একসময় কথা বলবেন কাতায়ামু। ভুল ভেঙে যাবে তার। ফিরে আসবেন অভিমান থেকে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না।

এভাবে চলতে চলতে একপর্যায়ে এই দম্পতির সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার উপক্রম। উপায় না পেয়ে বাবা-মায়ের এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ১৮ বছরের ছেলে ইয়োশিকি সাহায্য চেয়ে দেশটির একটি টিভি শোতে চিঠি লেখেন। তিনি বলেন, তাদের বাবা ২০ বছর ধরে তাদের মায়ের সঙ্গে কথা বলছেন না। ইয়োশিকির ২১ ও ২৫ বছরের দুটি বড় বোন রয়েছে। তারাও একই কথা বলেন।

টিভি কর্তৃপক্ষ (হোক্কাইডো টিভি) ঘটনা জানার পর এই দম্পতির মধ্যে কথা বলার জন্য উদ্যোগ নেন। একপর্যায়ে স্বামী কাতায়ামু রাজি হয়ে যান। পরে আয়োজন করা হয় কথোপকথনের। জাপানের দক্ষিণাঞ্চলে নারা পার্কে বসে এই দম্পতি অবশেষে কথা বলেন। নীরবতা ভাঙেন দুই দশকের।

Top_Photo
হোক্কাইডো টিভিতে বাবা-মায়ের কথোপকথন দেখে আবেগাপ্লুত সন্তানরা

কাতায়ামু তার স্ত্রীকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর আমি তোমার সঙ্গে কথা বলছি। সন্তানদের নিয়ে তুমি খুব উদ্বিগ্ন ছিলে। ইয়ুমি, এখন পর্যন্ত তুমি অনেক কষ্ট সহ্য করেছে। আমি তোমাকে জানাতে চাই, সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞ আমি। তবে এখন থেকে আমরা একত্রে কাজ করব। আর পিছু ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই।’

কাতায়ামু বলেন, ছেলে-মেয়েদের প্রতি স্ত্রীর বেশি মনোযোগের কারণে তিনি অভিমান করে এত দিন ইয়ুমির সঙ্গে কথা বলেননি। তিনি বলেন, সন্তান জন্মের পর তাদের লালন-পালনে স্ত্রী অতিমাত্রায় ব্যস্ত হয়ে পড়ত। যা দেখে তার খুব খারাপ লাগত। এ জন্য তিনি মুখ গোমড়া করে থাকতেন।

হোক্কাইডো টেলিভিশনে যখন বাবা-মায়ের কথা বলার দৃশ্য দেখাচ্ছিল, তখন সন্তানরা তা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তারা।


ভিডিও লিংক :




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ জানুয়ারি ২০১৭/সাইফ/এনএ

No comments:

Post a Comment