Tuesday, 30 January 2018

brain exercise info

 মস্তিষ্কের অদ্ভুত কিছু ব্যায়াম (শেষ পর্ব)

আফরিনা ফেরদৌস : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৮-০১-৩০ ৯:২৩:৫৩ এএম     ||     আপডেট: ২০১৮-০১-৩০ ১১:৪৪:১৭ এএম
প্রতীকী ছবি
আফরিনা ফেরদৌস : আপনার মস্তিষ্ককে নতুন অভিজ্ঞতা প্রদান করলে, তা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য আরো ভালো রাখবে।

স্মৃতিক্ষয় প্রতিরোধ এবং মনকে উৎফুল্ল রাখার জন্য ছোট ছোট কিছু মানসিক ব্যায়াম নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে শেষ পর্ব।

নাকের সঙ্গে মস্তিষ্কের সম্পর্ক তৈরি
কফি শব্দটা মাথায় এলেই কেমন জানি মনে হয় এর গন্ধ পাচ্ছি আমরা। এটা নাকের সঙ্গে মস্তিষ্কের একটা সম্পর্ক। মস্তিষ্ককে আরো নতুন গন্ধের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিন। তবে সেটা যেন এমন হয় যে আপনি মুখে একটি নাম বলছেন এবং আপনার মনে হচ্ছে যে আপনি সেটার গন্ধ পাচ্ছেন। এটার অনুশীলন হিসেবে আপনি আপনার পছন্দের কোনো সেন্ট আপনার বালিশের পাশে রেখে দিতে পারেন এবং প্রতিদিন সকালে উঠে সেটার গন্ধ নিয়ে তারপর অন্য কাজ করবেন।

গাড়ির জানালা খুলে দিন
হিপোক্যাম্পাস আমাদের মস্তিষ্কের এমন একটি জায়গা যেটি গন্ধ এং শব্দের স্মৃতি প্রক্রিয়া করে। তাই চেষ্টা করুন চলতি পথের বিভিন্ন গন্ধ এবং শব্দগুলোকে বুঝতে এবং মনে রাখতে। তার জন্য খুলে রাখুন আপনার গাড়ির জালানা অথবা বের হয়ে একটু হেঁটে বেড়ান।

সুপার মার্কেটে পর্যবেক্ষণ
সুপার মার্কেটে বা অন্যান্য দোকানে অনেক জিনিস সাজানো থাকে কিন্তু আমরা কখনোই তা ভালো করে খেয়াল করি না। মস্তিষ্কের অনুশীলন হিসেবে সময় নিয়ে দোকানে সাজানো সব জিনিসের প্রতি ধীরে ধীরে চোখ বুলান। কি লেখা আছে সেটা পড়ার চেষ্টা করুন। কোনো কিছু কেনার পূর্বে উক্ত পণ্যের গায়ে থাকা তথ্যগুলো ভালো করে পড়ে দেখুন। এমন অনেক পণ্য আছে যা আপনি কিনবেন না কিন্তু মস্তিষ্কের অনুশীলনের জন্য তা পড়ে দেখতে পারেন।

দলবদ্ধ হয়ে ছবি আঁকুন
ছবি আঁকা মস্তিষ্কের নন ভারবাল এবং ইমোশনাল অংশকে কর্মক্ষম করে তোলে। যখন আপনি কোনো ছবি আঁকেন, তখন আপনি তাই আঁকেন যা আপনার মস্তিষ্ক চিন্তা করে। মস্তিষ্কের অনুশীলন হিসেবে কয়েকজন একত্রিত হয়ে নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের ওপর ছবি আকুঁন।

সামাজিক যোগাযোগ বৃদ্ধি
চিকিৎসাবিজ্ঞান এটি বেশ গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করেছে যে, সামাজিক যোগাযোগ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখলে তার খারাপ প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কে। মস্তিষ্ককে নতুন অভিজ্ঞতা দিতে চাইলে সামাজিক যোগাযোগগুলো বাড়ান। বেশি করে কথা বলুন আশপাশের মানুষের সঙ্গে।

ভিন্ন ভাবে পড়া
যখন আমাদের পাশে বসে কেউ কিছু জোরে জোরে পড়ে এবং আমরা শুনতে থাকি তখন মস্তিষ্ক তার আলাদা আলাদা অংশ একই সঙ্গে ব্যবহার করে। কিন্তু যখন আমরা নীরবে একা একা পড়ি তখন এটি ঘটে না। তাই নীরবে পড়ার থেকে জোরে পড়ুন। এতে করে মস্তিষ্কের অনুশীলন হবে। আর যদি আপনার সঙ্গী আপনাকে কোনো কিছু পড়ে শোনায় তাহলে অতিরিক্ত লাভ হিসেবে আপনার কিছু ভালো মুহূর্ত কাটানোর সুযোগ পাবেন।

অপরিচিত খাবার খাওয়া
আমাদের মস্তিষ্ক একটি খাবারকে শণাক্ত করে তার গন্ধের মাধ্যমে। এবং এটি সরাসরি মস্তিষ্কের ইমোশনাল সেন্টারের সঙ্গে সংযুক্ত। তাই এখন থেকে কোথাও খেতে গেলে অপরিচিত খাবার রাখুন খাদ্য তালিকায়। কিছু অপরিচিত খাবারের রেসিপি শিখে নিতে পারেন অন্যদের কাছ থেকে। এতে করে নতুন খাবারের স্বাদও নেওয়া হবে এবং মস্তিষ্কের অনুশীলনও হবে।

টেন থিংস খেলা
আমরা কোনো কিছু দেখার সঙ্গে সঙ্গে সেটি আমাদের ঠিক কি কাজে লাগে তা চিন্তা করে ফেলতে পারি তার কারণ আমাদের মস্তিষ্ক আগে থেকেই ওই জিনিসটির সঙ্গে পরিচিত। মস্তিষ্কের অনুশীলন হিসেবে কোনো কিছু দেখলে ‘টেন থিংস’ বা দশ কাজ খেলাটি খেলবেন অর্থাৎ ওই জিনিসটি দিয়ে আরো কি কি কাজ করা যায় বা ওই জিনিসটি আরো কত ভাবে ব্যবহার করা যায় তা চিন্তা করা।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট

পড়ুন : মস্তিষ্কের অদ্ভুত কিছু ব্যায়াম (প্রথম পর্ব)



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জানুয়ারি ২০১৮/ফিরোজ

মস্তিষ্কের অদ্ভুত ব্যায়াম, যা স্মৃতি বাড়াবে

আফরিনা ফেরদৌস : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৮-০১-১১ ১১:১৬:৫১ এএম     ||     আপডেট: ২০১৮-০১-৩০ ১১:২২:০৪ এএম
প্রতীকী ছবি
আফরিনা ফেরদৌস : মস্তিষ্ককে নতুন অভিজ্ঞতা দিলে এটি ভালো থাকে। আমরা বার বার যা করি মস্তিষ্ক তাই ধারণ করে এবং স্মৃতি হিসেবে রেখে দেয়। অভ্যাসের বাইরে গিয়ে কিছু করাটাই মস্তিষ্কে নতুন অভিজ্ঞতা প্রদান। এতে মস্তিষ্কের স্মৃতিক্ষয় হওয়া রোধ পায়।

স্মৃতিক্ষয় প্রতিরোধ এবং আপনার মনকে উৎফুল্ল রাখার জন্য ছোট ছোট কিছু মানসিক ব্যায়াম নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে প্রথম পর্ব।

মস্তিষ্ককে সজাগ রাখা
মস্তিষ্ককে নতুন অভিজ্ঞা দিলে শারীরিক অনুভূতি- শোনা, দেখা, স্বাদ নেওয়া, গন্ধ নেওয়া, স্পর্শ করা- এসব সঙ্গে মানসিক অনুভূতি যুক্ত হয়ে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশগুলোর মধ্যে আরো বেশি সংযোগ সৃষ্টি করে। নার্ভ কোষগুলো মস্তিষ্কের পুষ্টি উৎপাদন করে যা নাটকীয় ভাবে স্মৃতি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং পার্শ্ববর্তী কোষগুলোকে শক্তিশালী করে তোলে এবং বার্ধক্যজনিত প্রভাবগুলো অনেক বেশি প্রতিরোধী করে তোলে।

বাম হাত দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা
আমরা বেশিরভাগ মানুষ আমাদের প্রায় সব কাজই ডান হাত দিয়ে করি। এর কারণ আমাদের মস্তিষ্কের ডান অংশ বেশি অনুভূতিশীল। গবেষণার মাধ্যমে বলা হয়, মস্তিষ্কের অপর পাশের ব্যবহার করটেক্সের বিভিন্ন অংশের দ্রুত এবং উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণ ঘটায়। তাই আপনি যদি ডানহাতি হন তাহলে বাম হাত দিয়ে ব্রাশে টুথপেস্ট লাগান এবং বাম হাত দিয়েই দাঁত ব্রাশ করুন। এবং বামহাতি হলে ডান হাত দিয়ে কাজগুলো করুন।

চোখ বন্ধ করে গোসল করা
আমাদের হাত শরীরের বিভিন্ন অঙ্গবিন্যাস পর্যবেক্ষণ করতে পারে যা আমাদের চোখ দেখতে পারে না এবং সেই তথ্য মস্তিষ্কে প্রদান করে। মস্তিষ্ককে নতুন অভিজ্ঞতা প্রদান করার জন্য চোখ বন্ধ করে গোসল করুন। তবে পানির তাপমাত্রা চোখ খোলা অবস্থায় ঠিক করে নিন।

সকালের কার্যক্রমে পরিবর্তন আনা
আমরা যে কাজগুলো নিয়মিত এবং বার বার করি, মস্তিষ্ক সেই কাজগুলোর নির্দেশনা দেয় বেশি বা মস্তিষ্কে সেই কাজের অনুশীলন হয় বেশি। আপনার মস্তিষ্ক ততক্ষণ পর্যন্ত নতুন কাজের কথা ভাববে না যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি তাকে নতুন কোনো কাজ দিবেন। তাই সকালের শুরুতেই কাজের কিছুটা পরিবর্তন আনুন। যেমন নাস্তা করার পর আপনার পোষা প্রাণীকে নিয়ে একটু হেঁটে আসতে পারেন অথবা টেলিভিশনে বাচ্চাদের কোনো অনুষ্ঠান দেখতে পারেন।

পরিচিত জিনিসগুলো উল্টে রাখুন
আমরা যখন কোনো কিছু ঠিক ভাবে দেখি তখন আমাদের মস্তিষ্কের যে অংশ কম সাড়া দেয়, যেমন সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বাম অংশ চেষ্টা করে আমাদের মনোযোগ অন্যত্র সরানোর। কিন্তু যখন আমরা কোনো কিছু উল্টানো অবস্থায় দেখি তখন আমাদের মস্তিষ্কের ডান অংশের মনোযোগ বেড়ে যায় সেই জিনিসটির প্রতি এবং এটি তখন তার আকার, বর্ণ বিশ্লেষণ করতে থাকে। তাই আপনার মস্তিষ্ককে নতুন অভিজ্ঞতা দিতে চাইলে ঘরে রাখা পারিবারিক ছবি, টেবিলে রাখা ঘড়ি এবং ক্যালেন্ডার উল্টে রাখুন।

খাবার টেবিলের চেয়ার পরিবর্তন করা
প্রায় প্রত্যেক পরিবারে সবার আলাদা আলাদা চেয়ার থাকে যেটাতে বসে খাওয়া হয়। আপনার ও থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু নতুন অভিজ্ঞতা আপনার মস্তিষ্কের জন্য ভালো তাই আপনার ঘরের খাবার টেবিলের চেয়ারগুলো উল্টিয়ে পাল্টিয়ে বা পরিবর্তন করুন নিজের ইচ্ছামতো।

(আগামী পর্বে সমাপ্য)

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ জানুয়ারি ২০১৮/ফিরোজ 

No comments:

Post a Comment