Tuesday, 8 March 2016

Internet vs @

@ (অ্যাট) নিয়ে যত রহস্য

আবু সাইদ নয়ন : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:09 Mar 2016   12:01:48 AM   Wednesday   ||   Updated:09 Mar 2016   11:37:57 AM   Wednesday
@ (অ্যাট) নিয়ে যত রহস্য
আবু সাইদ নয়ন : ইন্টারনেট যোগাযোগে ইমেইল অপরিহার্য। ভার্চুয়াল জগতে যেকোনো ধরনের যোগযোগ রক্ষায় ইমেইলের বিকল্প কিছু নেই। যে কারণে কোটি কোটি ইমেইল ব্যবহৃত হচ্ছে তথ্য আদান-প্রদানে। আর এ ইমেইল খুলতে সবাইকে যে প্রতীকটি ব্যবহার করতে হয়, তা হলো @।ইন্টারনেট দুনিয়ায় এ প্রতীকের উচ্চারণ ‘অ্যাট’।

এই যে @ । জানেন কি কোথা থেকে, কীভাবে এলো ইমেইলের অপরিহার্য এ প্রতীক? অথবা কে, কেন, কখন, কোথায় ইমেইলে ‘অ্যাট’ প্রতীকটি ব্যবহার করেন? এক কথায় এর উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। অ্যাট নিয়ে রয়েছে বিশাল রহস্যের পাহাড়।

রে টমলিনসন ইমেইলের উদ্ভাবক হিসেবে বিশ্বস্বীকৃত। তিনিই @ প্রতীকটি ইমেইলে প্রথম ব্যবহার করেন। এই প্রতীকসহ প্রথম ইমেইল পাঠানো ব্যক্তিও রে টমলিনসন। ১৯৭১ সালে তিনি ইমেইলে প্রতীকটি ব্যবহার করেন। ইমেইল ব্যবহারকারী ও গন্তব্যের মধ্যে অ্যাট প্রতীক ব্যবহার করে প্রথম ইমেইল পাঠালেও তিনি সেদিন ভাবেননি তার ব্যবহৃত এ প্রতীক ইন্টারনেট দুনিয়ার অপরিহার্য উপাদান হয়ে উঠবে।  রে টললিনসন সম্প্রতি না ফেরার দেশে চলে গেছেন। কিন্তু তিনি কোটি কোটি ইমেইল ব্যবহারকারীর মাধ্যে বেঁচে আছেন, হয়তো থাকবেন বহুকাল।

টমলিনসন কম্পিউটারের ‘কি বোর্ড’ থেকে @  প্রতীকটি বাছাই করেন। কারণ তখনো প্রতীকটি কম্পিউটারের প্রোগামিংয়ে ব্যবহৃত হয়নি বললেই চলে। যার ফলে ইন্টারনেট যোগাযোগে তা ব্যঘাত সৃষ্টি করবে না ধরে নিয়ে ইমেইল তৈরি করেন টমলিনসন। এই ইমেইলের কারণে হাতে লেখা চিঠির ঠিকানা হয়েছে জাদুঘরে।

এবার দেখে নেওয়া যাক, @-এর উদ্ভব কবে, কোথায়। এই প্রতীক দিয়ে কোন দেশে কী বোঝানো হতো।



কেইথ হাউস্টন তারর্ শেডি ক্যারেক্টারস : সিক্রেট লাইফ অব পাঙ্কচুয়েশন বইয়ে বলেছেন, মোটামুটি ১৯ শতকের আগেই ‘অ্যাট’ প্রতীকটি টাইপরাইটারে ব্যবহৃত হতো। কম্পিউটার এলো আর টাইপরাইটার বিদায় নিল। কিন্তু কম্পিউটারের ‘কি বোর্ডে’ ঠিকই স্থান পেয়ে গেল @ প্রতীকটি। কারণ প্রতীকটি আগে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হতো। হাউস্টন বলেছেন, একগুচ্ছ পণ্যের প্রতিটির একই দাম বোঝাতে ‘অ্যাট’ ব্যবহৃত হতো। যেমন : এক ছড়া কলার প্রতিটির দাম ৫ পাউন্ড বোঝাতে লেখা হতো ‘@ ৫’।

২০০০ সালে ইতালীয় গবেষক জর্জিও স্ট্যাবাইল এক লেখায় বলেন, ‘অ্যাট’ প্রতীকের ব্যবহার ও অর্থ একেক দেশে একেক রকম। তুরস্কে @ প্রতীকের অর্থ গোলাপ। কাউকে এই প্রতীক পাঠালে তুর্কিরা সহজেই বুঝে যায় ভালোবাসা নিবেদন করা হচ্ছে। কিন্তু নরওয়েতে এই প্রতীকের অর্থ ‘শূকরের লেজ’। গ্রিসে এর অর্থ হাসের ছানা। হাঙ্গেরিতে @-এর অর্থ ‘গরম’।

স্ট্যাবাইল আরো জানিয়েছেন, ফ্রান্স, স্পেন ও পর্তুগালে @-এর অর্থ ওজন পরিমাপক একক। আবার ইতালিতে ‘অ্যাট’-কে বলা হয় অ্যাম্ফোরা। এর মানে লম্বা গলাযুক্ত পাত্রের মজুদ।

কিন্তু @-এর আদি ব্যবহার দেখা যায় ধর্মে। গ্রিক পৌরাণিক কাহিনীর বুলগেরীয় অনুবাদে ১৩৪৫ সালে অ্যাট প্রতীক দেখা যায়। ভ্যাটিকান অ্যাপোস্টলিক লাইব্রেরিতে যা আজো সংরক্ষিত আছে। প্রতীকটি amen (আমিন)-এর a পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু তা এভাবে @-এর ব্যবহার করা হয়েছে, তা আজো অজানা এবং রহস্যঘেরা।

এই রহস্যেঘেরা অ্যাট দিয়ে আমরা প্রতিদিন যোগাযোগ করে যাচ্ছি। সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে ইমেইল লাগে। অর্থাৎ অ্যাট এখন আমাদের প্রতিদিনের সঙ্গী। উল্লেখ্য, বিশ্বের প্রথম ইমেইল : tomlinson@bbn.tenexa।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ মার্চ ২০১৬/রাসেল পারভেজ

No comments:

Post a Comment