মৌমাছি ভন ভন করে যে কারণে
আরিফ সাওন : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:06 Mar 2016 11:09:48 AM Sunday || Updated:06 Mar 2016 01:29:10 PM Sunday

মানুষের দেহে যদি ১১ শ বার মৌমাছি হুল ফোটায় তাহলে মৃত্যু হয়
দেশে প্রথমবারের মত হয়ে গেলো মৌ-মেলা। ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজধানীর ফার্মগেটে খামারবাড়িতে এ মেলার আয়োজন করে। মেলায় ঢুকেই বাম পাশে একটি গোলঘরে মৌমাছি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সংবলিত পোস্টার লাগানো ছিল। সেগুলোর মধ্যে একটি পোস্টারে ছিল ‘মৌমাছিদের মজার কথা’। যাদের চোখ পড়েছে তারা হয়তো বিষয়টি জেনেছেন। আর যারা জানতে পারেন নি, তাদের জন্য রাইজিংবিডির এ আয়োজন- মৌমাছিদের মজার কথা।
জানা যায়, একটি চাকের মৌমাছিদের এক কেজি মধু উৎপাদনের জন্য প্রায় ৯০ হাজার কিলোমিটার উড়তে হয়। যা এই ভূগোলককে তিনবার প্রদক্ষিণ করার সমান। একটি মৌচাকে প্রায় ২০ থেকে ৬০ হাজার মৌমাছি থাকে। তবে রানী থাকে একটাই। এ ছাড়া থাকে শ্রমিক ও পুরুষ মাছি। রানী মৌমাছি পাঁচ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। রানীর বয়স ৫ থেকে ৬ সপ্তাহ হলে তারা মিলনে সক্ষম হয়। পুরুষের সাথে রানীর মিলন হয় রৌদ্রজ্জ্বল দিনে মুক্ত বাতাসে নেচে নেচে। একটি রানী দিনে ২ জাহার ৫ শ ডিম পাড়তে পারে।
একটি শ্রমিক মাছি তার জীবনে মাত্র এক চা চামচের ১২ ভাগের একভাগ মধু উৎপাদন করতে পারে। এবং তারা মাত্র ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ বেঁচে থাকে। অথচ এই সময়ের মধ্যে তারা মধু সংগ্রহের জন্য যে দুরত্ব অতিক্রম করে তা প্রায় ১২ বার পৃথিবীকে চক্কর দেওয়ার সমান। শুধু শ্রমিক মাছিরাই হুল ফোটায়। মানুষের দেহে যদি ১১ শ বার মৌমাছি হুল ফোটায় তাহলে মৃত্যু হয়। মৌচাকে সবচেয়ে অলস হল পুরুষ মৌমাছি। ওরা শুধু বসে থাকে আর খায়।
মৌমাছির দুটি আলাদা পাকস্থলি আছে। একটায় খাবার থাকে অন্যটায় মধু। চাক থেকে বেরিয়ে একবার মধু সংগ্রহের জন্য একটি মৌমাছি ৫০ থেকে ১০০টি ফুলে ঘোরে। মাত্র এক কেজি মধু উৎপাদনের জন্য ১১শ মৌমাছির অন্তত ৪০ লক্ষ ফুলে ঘুরতে হয়।
কয়েক লক্ষ বছর আগে থেকে পৃথিবীতে মৌমাছিরা আছে। মৌমাছি হল একমাত্র পোকা যারা মানুষের খাদ্য উৎপাদন করে। আমাদের প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগ খাদ্য উৎপন্ন হয় মৌমাছিদের পরাগায়নের মাধ্যমে। অনেক গাছের বংশ বিস্তৃতি মৌমাছির উপর নির্ভরশীল। মৌমাছির মস্তিষ্ক খুব ছোট, একটা তিল দানার মত। অথচ ওইটুকু ঘিলু নিয়েই ওরা অনেক কিছু শিখতে ও মনে রাখতে পারে। এমনকি ওরা গণিত ও জ্যামিতির হিসাবও বোঝে। দুরত্ব হিসাব করতে পারে। প্রতিটি মৌচাকের গন্ধ আলাদা, যার দ্বারা একই চাকের মৌমাছিরা আবার সেই চাকেই ফিরে আসে। মৌমাছিরা একে অপরের সাথে নেচে নেচে ভাবের আদান প্রদান করে। শীতের সময় তারা চাকে জমানো মধু খেয়ে বেঁচে থাকে।
মৌমাছিরা প্রায় ১৭০ রকমের ঘ্রাণ নিতে পারে। যা অন্য কোন মাছি বা বোলতা পারে না। ঘ্রাণ শুকেই মৌমাছিরা বুঝতে পারে সেটি কোন ফুল আর তাতে মধু ও পরাগরেণু আছে কিনা? মৌমাছিরা প্রতি সেকেন্ডে ২ শ বার পাখা নাড়তে পারে। এতে ভন ভন আওয়াজ হয়। শুধু তাই নয়, তারা ঘণ্টায় ১৫ মাইল বেগে উড়তেও পারে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ মার্চ ২০১৬/ আরিফ/তারা
No comments:
Post a Comment