মানব শরীর থেকে এইচআইভি ভাইরাস সরানো সম্ভব হয়েছে!
মোখলেছুর রহমান : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:25 Mar 2016 08:17:22 AM Friday || Updated:25 Mar 2016 10:21:18 AM Friday

অনেক বছর ধরে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে আসছেন যে, কীভাবে এই মরণঘাতক এইচআইভি ভাইরাসকে মানব শরীর থেকে উৎখাত করা যায়।
অবশেষে বিজ্ঞানীরা তাদের এতদিনের পরিশ্রম এবং গবেষণায় সফলতার দেখা পেয়েছেন।
কারণ আলোচিত সিআরআইএসপিআর/সিএএস ৯ জিন সম্পাদনা পদ্ধতি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা অবশেষে মানুষের ইমিউন কোষ ডিএনএ থেকে এইচআইভি ভাইরাস দূর করার পদ্ধতি জানতে পেরেছে এবং এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অসম্পাদিত কোষকেও সংক্রমণ প্রতিরোধ রুপে গড়া যাবে।
আপনি যদি এই আলোচিত সিআরআইএসপিআর/সিএএস ৯ জিন সম্পাদনা কৌশল সম্পর্কে আগে শুনে না থাকেন, তাহলে ২০১৬ সালে এটি সম্পর্কে অনেক বেশি শুনতে প্রস্তুত হয়ে থাকতে পারেন। কারণ এটি একটি বিপ্লব ঘটাতে যাচ্ছে যার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা জেনেটিক রোগের মূল কারণ অনুসন্ধান করতে পারবে। এটি বিজ্ঞানীদের একটি নির্দিষ্ট জিন এর ওপর অল্প পরিসরে অনুসন্ধান করতে এবং কাট এবং পেস্ট করে ডিএনএ এর অংশ এবং তার ফাংশন পরিবর্তন করতে সক্ষম করে তুলবে।
সিআরআইএসপিআর/সিএএস ৯ হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি, যা যুক্তরাজ্যের গবেষকরা সম্প্রতি মানব ভ্রূনের ওপর ব্যবহার করার অনুমতি পেয়েছে, যাতে তারা আইভিএফ সাফল্যের হার উন্নত করার কৌশল রপ্ত করতে পারে এবং গর্ভপাতের হার কমাতে পারে এবং চীনা বিজ্ঞানীরা এটি ২০১৫ সালে মানব ভ্রূণে নিম্নহারে ব্যবহার করে ধরা খেয়েছিলেন।
এ বছরের শুরুর দিকে বিজ্ঞানীরা সিআরআইএসপিআর/সিএএস ৯ সফলভাবে ব্যবহার শুরু করে ‘ডাচেন্নে মাসকুলার ডেস্ট্রোপি’ নামক একটি জেনেটিক রোগের চিকিৎসা করতে, যেখানে প্রথমবারের মতো একটি জীবন্ত স্তন্যপায়ীর ওপর করা হয় এবং এখন এটি ভবিষ্যতে এইচআইভির জন্য একটি সম্ভাব্য চিকিৎসা হিসেবে বাস্তব সম্ভাবনা দেখাচ্ছে।
এই কৌশলে একটি কোষের মধ্যে ডিএনএ লক্ষ্যবস্তু ধরে তাতে ‘কাঁচি দিয়া কাটার-মতো করে’ প্রোটিন আলাদা করা হয় এবং তারপর কিছু উপায়ে তাদের পরিবর্তন অথবা সম্পাদনা করা হয়।
সিআরআইএসপিআর একটি প্রোক্যারিওট থেকে নিষ্কাশিত ডিএনএ’র নির্দিষ্ট পুণরাবৃত্তি ক্রম বোঝায়। যেমন ব্যাকটেরিয়া একটি এককোষী জীব একটি সিএএস ৯ নামক আরএনএ-নির্দেশিত এনজাইমের সঙ্গে জোড়া লাগে।
তাই মূলত যদি আপনি একটি মানুষের কোষের মধ্যে একটি ভাইরাসের ডিএনএ সম্পাদনা করতে চান তাহলে আপনার একটি ব্যাকটিরিয়া যা ভাইরাসের বিপরীত এবং ভার্চুয়াল ডিএনএ যা একটি আরএনএ এর অভিন্ন ক্রম- তা লাগবে।
এই সহায়িকা আরএনএ তারপর সিএএস ৯ এনজাইম এ হুড়কা হবে এবং তারা একসঙ্গে ম্যাচিং ভাইরাস অনুসন্ধান করতে থাকবে। তারা একবার একটি ম্যাচিং ভাইরাস শনাক্ত করতে পারলে সিএএস ৯ কাটা পড়বে এবং এটি ধ্বংস হয়ে যাবে।
এই পদ্ধতির সাহায্যে টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা মানুষের ল্যাব সংস্কৃতির মধ্যে টি কোষ জিনোম থেকে এইচআইভি-১ ডিএনএ নিষ্কাশন করতে সক্ষম হয়েছেন। এবং যখন পরবর্তীতে এই কোষে ভাইরাস আক্রমণ করেছিল তখন আবার সংক্রমণ থেকে কোষ নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছিল।
গবেষক কামেল খলিলি বলেন, এই গবেষণার ফলাফল একাধিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ। ‘এই ফলাফল সিডি৪ টি-কোষের ডিএনএ থেকে এইচআইভি দূর করতে আমাদের জিন এডিটিং সিস্টেমের কার্যকারিতা প্রদর্শন করে এবং এটি ভাইরাল জিনোমে পরিব্যক্তির উপস্থাপনের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে তার কার্যকারীতা নষ্ট করে।’
গবেষণার বিস্তারিত ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ অনলাইন জার্নালে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ মার্চ ২০১৬/ফিরোজ
No comments:
Post a Comment