Monday, 4 April 2016

Stive hobs vs Technology

সম্পূর্ণ অজানা এক স্টিভ জবস

শাহিদুল ইসলাম : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:04 Apr 2016   01:03:04 PM   Monday   ||   Updated:04 Apr 2016   02:33:20 PM   Monday
সম্পূর্ণ অজানা এক স্টিভ জবস
শাহিদুল ইসলাম : স্টিভেন পল জবস! যাকে বিশ্ববাসী চেনে স্টিভ জবস নামে। বিল গেটস অার ওয়াল্টার ডিজনীর নাম বিবেচনায় রেখে যাকে বলা যায় বিশ শতকের সবচেয়ে প্রগতিশীল, প্রভাবশালী, প্রতিভাবান অার সফল প্রযুক্তিক ভাবনার অধিকারী মানুষ।

যার দূরদৃষ্টি উদ্ভাবনী ক্ষমতা ‘পারসোনাল’ কম্পিউটারকে করেছে পারসোনাল, এনেছে মানুষের হাতের নাগালে। অাজকের দিনে অামরা যে এত সহজে কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারি সেটা স্টিভ জবসেরই অবদান।

স্মার্টফোনকে কে এত জনপ্রিয় করেছে? সেটাও স্টিভ জবস। প্রকৃতপক্ষে তিনি না থাকলে বহু প্রযুক্তি পণ্যের উন্নয়ন অাটকে যেত। এতক্ষন যা বললাম তা অামার একার কোনো মনগড়া কথা নয়, সিলিকন ভ্যালির বড় বড় রথী মহা রথীর কথা।

টেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের সহ প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। ২০১১ সালের ৫ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

অাপদমস্তক প্রযুক্তি অন্তপ্রাণ এই মানুষটি ব্যক্তি জীবনে ছিলেন প্রচন্ড রকমের নিভৃতচারী। তাই তাকে কাছ থেকে জানার বোঝার দেখার সুযোগ হয়েছে খুব কম মানুষের। ফলে তার ব্যক্তিগত জীবন, তার দাপ্তরিক অাচার-ব্যবহার নিয়ে বেরিয়েছে নানা গুজব।

অনেকের ধারণা, তিনি ছিলেন বদমেজাজি, লোভি এবং প্রচন্ড রকমের অাত্বকেন্দ্রিক মানুষ। কিন্তু এর কিয়দংশই সত্য।

এ সম্পর্কে অ্যাপেলের প্রাক্তন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জন স্কুলি বিজনেস ইনসাইডারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, স্টিভ ছিলেন চমৎকার মানবিক গুণ সম্পন্ন একজন মানুষ। বিভিন্ন সিনেমা বা অালোকচিত্রে তাকে যেভাবে চিত্রিত করা হয়েছে তা সঠিক নয়।

স্কুলি অারো বলেন, স্টিভ ছিলেন একজন প্রচন্ড সংবেদনশীল মানুষ। তিনি বেশ কয়েকবার জবসকে তার সহকর্মীদের সামনে শিশুদের মত কাঁদতে দেখেছেন!

তিনি অারো বলেন, যে স্টিভ জবসকে অাপনি জানেন না তিনি ছিলেন, দয়াবান, মানবিক, ধৈর্যশীল।

জন স্কুলির মুখের এ তথ্য আসলেই বিস্ময়কর। কেননা পাঠকরা এখন এটা জেনে নিশ্চয়ই অবাক হবেন যে, জন স্কুলির সঙ্গে কিন্তু স্টিভ জবসের ছিল সাপে নেউলে সম্পর্ক। অথচ জন স্কুলি-ই জানিয়েছে স্টিভ জবসের অজানা দিকের এ তথ্য।



বিজনেস ইনসাইডার স্টিভ জবসের বোন, অ্যাপলের প্রধান ডিজাইন কর্মকর্তা সহ আরো বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তারা প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, স্টিভ জবস খুবই আবেগী ছিলেন। এবং অ্যাপলের নানা ঘটনায় বেশ কয়েকবার কান্নার সাক্ষী তারা।


স্টিভ জবস কতটা অাবেগি ছিলেন তা অ্যাপলের ইঞ্জিনিয়ার জন অাইজাকসনের বায়োগ্রাফি থেকেই কিছুট জানা যায়। অ্যাপেলের সহ প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওজনিয়াক যখন তার সন্তানকে অ্যাপেলের শেয়ার অারও বেশি করে নেওয়ার ব্যাপারে প্ররোচিত করেন তখন এ খবর শুনে স্টিভ জবস শিশুদের মত কাঁদতে থাকেন। কারণ অ্যাপেল ছিল তার ভালোবাসার জায়গা। তার সমস্ত সত্তা জুড়ে তিনি অ্যাপেলকে ধারণ করতেন।

অন্য এক বর্ণনা থেকে জানা যায়, প্রথমবারের মত যখন অ্যাপলের প্রকৌশলীরা অাই ম্যাকে অাপ ডাউন সিডি স্লটের বদলে সিডি ট্রে বসান সেদিন তিনি খুশিতে অাই ম্যাক টিমের সদস্যদের জড়িয়ে ধরে কেদেঁছিলেন। এরকম অসংখ্য ঘটনা রয়েছে যেগুলো প্রমান করে মানুষ হিসাবে তিনি কতটা মানবিক ছিলেন।

তিনি অাসলেই এমন একজন মানুষ ছিলেন যিনি খ্যাতির চূড়াতে অাসীন হলেও কখনো তা উপভোগ করেননি। কাজ পাগল এই মানুষটি জীবনের শেষ দিন অবদি কাজ নিয়েই ডুবে ছিলেন। তিনি প্রায় বলতেন অামি প্রযুক্তিকে মানুষের হাতে হাতে পৌঁছে দিতে চাই। এর জন্য অামি জীবন উৎসর্গ করতেও রাজি।

একবার এক সাক্ষাৎকারে মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিল গেটস বলেছিলেন, তার দৃষ্টিতে বিশ্বের সেরা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হলেন স্টিভ জবস। যিনি সেরা পণ্য নির্মাণে বিশ্বাস করেন এবং বাস্তবায়ন করেন। পুরোপুরি প্রযুক্তি অন্তপ্রাণ এই মানুষটি মাত্র ৫৬ বছর বয়সে অামাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন না ফেরার দেশে। এর মধ্যে ৩৮ বছরে তিনি যা করেছেন তার সবটুকু গল্প করার মতো। বিংশ শতকের তরুণ-তরুণীদের চাহিদা বোঝার ক্ষেত্রে তিনিই ছিলেন এই শতকের সেরা মানুষ। তিনি ছিলেন একাই একটি প্রতিষ্ঠান।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ এপ্রিল ২০১৬/ফিরোজ

No comments:

Post a Comment