Monday, 4 April 2016

Delhi bangla food restaurant


নয়াদিল্লিতে চমকে যাবার মতোই বাংলা খাবারের হোটেল

শাহ মতিন টিপু : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:04 Apr 2016   03:01:59 PM   Monday   ||   Updated:04 Apr 2016   03:03:46 PM   Monday
নয়াদিল্লিতে চমকে যাবার মতোই বাংলা খাবারের হোটেল
ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশাল-খুলনা-চট্টগ্রামের স্বাদ, গন্ধ, ঝাঁঝ ও মশল্লা নিয়ে পাতে উঠে আসছে চালতা দিয়ে মুগ ডাল, কুমড়ো ফুলের বড়া, কচুর লতি। সঙ্গে চিতলের মুইঠ্যা অথবা লইট্যা মাছের ঝাল। এতো গেল বাংলাদেশের রসনা। আছে  কলকাতার বর্ণ-গন্ধ নিয়ে শুকতুনি, পেঁয়াজ-পোস্ত, চিংড়ি মালাইকারী, কামিনী আতপের পায়েস। এমনই একটি রসনার রেস্তোরা খোলা হয়েছে নয়াদিল্লিতে।

নয়াদিল্লি বলতে নয়াদিল্লির সিরি ফোর্ট অডিটোরিয়ামের উল্টো দিকের বসতি শাহপুর জাট।ভোজনবিলাসীদের জন্য এই সুব্যবস্থা। এই বঙ্গ রেস্তোরাটি খুলেছেন অনুমিত্রা ঘোষদস্তিদার। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষা বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা শেষ করেই এই রেস্তোরাটি খুলেছেন তিনি। রেস্তোরার নাম দিয়েছেন ‘বিগ বং থিওরি’।

অনুমিত্রা ঘোষদস্তিদারের কথায়, ‘আজকের ফাস্ট ফুড আর দ্রুত ধাবমান যাপনে অনেক বাংলা খাবারই বাস্তবে আর পাওয়া যা না। স্মৃতিতে যার স্বাদ লেগে রয়েছে। আমি ছোট থেকেই বয়স্কাদের হাতের রান্না খেয়েছি। তাদের রান্নার বিবিধ কৌশল, যত্ন ও স্বাদ মনে করে রেখে দিয়েছিলাম। সেটাই এবার চেষ্টা করছি ফিরিয়ে আনার।’

 কিন্তু সেই চেষ্টাটা পাঞ্জাবি, হরিয়ানভি, জাঠ অধ্যুষিত এলাকায় কেন? যেখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে রূপসী বাংলার বিস্তর ব্যবধান। অনুমিত্রা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘খাবারের ক্ষেত্রে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে বর্ণ রাজ্যভেদ বিশেষ থাকছে না আর। পছন্দসই হলে বাংলার খাবার চেটেপুটে খাচ্ছেন একজন পাঞ্জাবি অথবা মহারাষ্ট্রের মানুষও। আর শুধু বাংলা বলেই নয়, সর্বত্রই বিভিন্ন আঞ্চলিক খাবারের চাহিদা খুব বাড়ছে।’

 বছর দেড়েক হতে চলল বিগ বং-এর বয়স। অবাঙালি খাদকের ভিড় ক্রমশ বেড়েই চলেছে এখানে।



দিল্লি চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার শহর। তাই চরম লু এবং হাড়কাঁপানো ঠান্ডার কথা মাথায় রেখে সেই ভাবেই বদলানো হয় এর মেনু।  যেমন শীতকালে- হাঁসের ডিম, কষা মাংস, শুটকি মাছ লইট্যা  সবই একটু বেশি তেল-মশলায় গরগরে। আবার ঘোর গরমে গত বছর করা হয়েছিল পাঁচদিনের পান্তা উৎসব! সঙ্গে কাগজি লেবু, চিংড়ি মাছের চাট, ডালের বড়া। গ্রীষ্মকালে প্রত্যেকদিন তেতো এবং টক থাকবেই পাতে। বর্ষশেষে করা হয় পিঠা উৎসব।

বাংলা নিয়ে কলকাতায় স্নাতক পর্ব সেরে হায়দারাবাদে অ্যাপ্লায়েড লিঙ্গুইস্টিকস নিয়ে স্নাতকোত্তর পড়াশুনা। তারপর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল। পড়াশুনার পাশাপাশি অনুমিত্রা গভীরভাবে ভেবেছেন, পড়েছেন রান্না নিয়ে। বিশেষ করে বাংলার ক্রমশ হারিয়ে যাওয়া পদগুলি নিয়ে।

বিভূতিভূষণ, তারাশঙ্কর সাহিত্যে বর্ণিত প্রাচীন বাংলার বিভিন্ন ঘরোয়া পদ, কর্মসূত্রে উত্তরবঙ্গের গ্রামে গ্রামে ঘুরে পরখ করা কচু, বাঁশপাতা, বোরোলি মাছের মহিমা, বিদেশি রান্নার সঙ্গে বাংলার গ্রামীণ মশলার আশ্চর্যজনক মিল খুঁজে নেওয়া— এই সব মিলিয়েই জন্ম নিয়েছে বিগ বং থিওরি।

আপাতত খুব স্বল্প পরিসরে শুরু করলেও, খদ্দেরের চাপে বি বং থিওরিকে খুব শীঘ্রই বড় করতে চলেছেন অনুমিত্রা।

তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ এপ্রিল ২০১৬/টিপু

No comments:

Post a Comment