Monday, 18 April 2016

Hand fan in Gopalpur Village in BD

তাল পাখা তৈরির গ্রাম ‘গোপালপুর’

বাদল : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:18 Apr 2016   01:02:28 PM   Monday   ||   Updated:18 Apr 2016   02:13:54 PM   Monday
তাল পাখা তৈরিতে ব্যস্ত গোপালপুরের একটি পরিবার

তাল পাখা তৈরিতে ব্যস্ত গোপালপুরের একটি পরিবার

বাদল সাহা, গোপালগঞ্জ : গরমে প্রাণ জুড়ানো শীতল বাতাস পেতে জুড়ি নেই তাল পাখার। গ্রামীণ জীবনে এখনো অপরিহার্য এই হাতপাখা। তাই গরম এলেই তাল পাখা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে গোপালপুর গ্রামের অন্তত ৩০টি পরিবার। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার এই গ্রামটি এখন তাল পাখা তৈরির গ্রাম হিসেবে পরিচিত।

মূলত নারীরাই এই পাখা তৈরির কারিগর। তাদের সহযোগিতা করছেন পরিবারের পুরুষ সদস্যরা। পাখা তৈরি করে আয়ও হচ্ছে ভালো। এ গ্রামের হাতে তৈরি তাল পাখা এলাকার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

গোপালপুর গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বাড়ির আঙিনায় কিংবা ঘরের দাওয়ায় নারীরা একসঙ্গে বসে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাল পাতা, বাঁশ আর সুতা দিয়ে হাত পাখা তৈরি করছেন। তাদের এ কাজে সহযোগিতা করছেন পরিবারের পুরুষ সদস্যরা। জানা যায়, এবারের গরমের মৌসুমে প্রায় ২ লাখ তাল পাখা তৈরি করবেন তারা।

এক একটি পাখা তৈরি করতে খরচ হয় ৬-৭ টাকা। আর বিক্রি করা হচ্ছে ৯ থেকে ১২ টাকা। শুধু গোপালগঞ্জ নয়, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যাবসায়ীরা এসে কিনে নেন পাখা।

এসব পাখা বিক্রি করে যতটুকু আয় হয় তা দিয়ে একদিকে যেমন চলছে সংসার অন্যদিকে চালাচ্ছেন সন্তানদের পড়ালেখা। আবার অর্থনৈতিকভাবেও স্বাবলম্বী হচ্ছেন ।

ভারতী বিশ্বাস ও ললিতা পোদ্দার জানান, একটি তাল পাতায় চারটি পাখা তৈরি করা যায়।  প্রতিদিন এক একজন নারী ২০০ পাখা তৈরি করতে পারেন।

যূথি বিশ্বাস ও মৌসুমী বিশ্বাস বলেন, ‘আগে আরো অনেক নারী পাখা শিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পুঁজির অভাবে অনেকে এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। তবে এবার গরম খুব বেশি পড়ায় ব্যবসা ভালো।’

রূপা বিশ্বাস বলেন, ‘এখন আর খুব একটা হাট-বাজারে গিয়ে আমাদের পাখা বিক্রি করতে হয় না। দূরদূরান্ত থেকে পাইকাররা এসে পাখা কিনে নিয়ে যায়।’

দীপ্তি রায় বলেন, ‘স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করলে আমরা আরো লাভবান হব। এ এলাকায় প্রচুর তালগাছ রয়েছে। তাই বাড়িতে বসে পাখা তৈরি করে অনেকে তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে পারবেন।’

গোপালগঞ্জ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের (বিসিক) সহকারী ব্যবস্থাপক মো. মোসেদ্দেকুল মহসিন বলেন, ‘এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা যোগাযোগ করলে তাদের স্বল্প সুদের ঋণের ব্যবস্থা করা হবে। এতে তারা মহাজনি সুদের হাত থেকে রেহাই পাবেন এবং লাভবান হবেন।’





রাইজিংবিডি/গোপালগঞ্জ/১৮ এপ্রিল ২০১৬/বাদল/টিপু/এএন

No comments:

Post a Comment