ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পথে চীন
রাসেল পারভেজ : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:23 Apr 2016 06:26:33 PM Saturday
দক্ষিণ চীন সাগরের মালিকানাবিরোধ সত্ত্বেও বিতর্কিত অঞ্চলে মানুষের তৈরি কৃত্রিম দ্বীপ চীনের সামরিক শক্তি বাড়ানোর ইঙ্গিত দেয়। তবে চীনের দাবি, বেসামরিক উন্নয়নে কৃত্রিম দ্বীপগুলো ব্যবহার করা হবে।
কৃত্রিম দ্বীপে কাজকর্মের জন্য বিদ্যুৎ অপরিহার্য। সেখানে গড়ে তোলা অবকাঠামো, রাডার সিস্টেম, লাইটহাউস, সেনা ব্যারাক, নৌবন্দর ও বিমানবন্দরের জন্য বিদ্যুতের দরকার। কিন্তু হাজারো কিলোমিটার দূরে চীনের জাতীয় গ্রিড থেকে কৃত্রিম দ্বীপে বিদ্যুৎ নেওয়া প্রায় অসম্ভব। এ জন্য বিকল্প উৎস থেকে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে দেশটি।
চীনের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিক সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাষ্ট্র মালিকানাধীন চীনা শিপবিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশন ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্দেশে নৌবহর তৈরি করছে। এ নৌবহরে উৎপাদিত পারমাণবিক বিদ্যুৎ কৃত্রিম দ্বীপ ও চীনের অফশোর তেল কোম্পানিগুলোতে সরবরাহ করা হবে।
একটি কোম্পানির নির্বাহী লিউ ঝেংগুয়োর উদ্ধৃতি দিয়েছে গ্লোবাল টামইস। লিউ ঝেংগুয়ো বলেছেন, ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চাহিদা ‘ভীষণ শক্তিশালী’।
চীনা পারমাণবিক শক্তি কর্তৃপক্ষের পরিচালক ঝু দাজহে জানুয়ারি মাসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছে চীন। এ জন্য কঠোরভাবে বৈজ্ঞানিক মূল্যায়ন করা হবে।’ তবে ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চীনের সেরা ‘সমুদ্র শক্তি’ হওয়ার উচ্চাকাক্সক্ষার সঙ্গে যুক্ত করা হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।
ঝু দাজহে সে সময় আরো বলেন, ‘চীনের পঞ্চবার্ষিকী উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন-সক্ষমতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০২০ সাল নাগাদ কেন্দ্রগুলো উৎপাদনে যাবে।’ অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় চীনে নির্মাণাধীন বেসামরিক পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা বেশি।
ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ইতিহাসে চীনই প্রথম দেশ নয়। ১৯৬০-এর দশকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর উত্তেজনার মধ্যেই পানামা খাল অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সেনা বাহিনী ভাসমান পরমাণু চুল্লি ব্যবহার করে। জাহাজে পরমাণু শক্তির ব্যবহার হচ্ছে সেই ১৯৫৫ সাল থেকে। মার্কিন সাবমেরিন নটিলাসে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়। তখন থেকে জাহাজের জন্য বিদ্যুৎউৎস হিসেবে পরমাণু চুল্লির ব্যবহার দেখা যাচ্ছে।
তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ এপ্রিল ২০১৬/রাসেল পারভেজ
No comments:
Post a Comment