তারার মৃত্যু দেখা বিরল মুহূর্ত
মেহেদী হাসান : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:24 Mar 2016 01:10:17 AM Thursday || Updated:24 Mar 2016 11:24:21 AM Thursday

প্রচণ্ড শক্তিতে বিস্ফোরিত হয়ে প্রলয়ের মুহূর্তে তারার অবস্থা
মানুষের চোখে ধরা না পড়লেও কেপলার টেলিস্কোপের চোখ ফাঁকি দিতে পারেনি ধ্বংস উন্মুখ তারা। সম্প্রতি নাসার বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, কেপলার টেলিস্কোপে ধ্বংসের মুহূর্তে দুটি তারা শনাক্ত হয়েছে।
পৃথিবী থেকে ১২০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে এ দুটি তারার অবস্থান। মহাকাশের গভীরে নতুন তারা বা নক্ষত্রের সন্ধান করার সময় কেপলার টেলিস্কোপে ধরা পড়ে দুটি তারা প্রচ- বিস্ফোরণে বিদীর্ণ হচ্ছে। তারা দুটিতে মহাপ্রলয় হচ্ছে। তারা পৃষ্ঠ ফেঁটে প্রচ- গতিতে বিভিন্ন উপাদানের উদগিরণ হচ্ছে। প্রায় ২০ মিনিট ধরে চলে এই মহাপ্রলয়। মাত্র কয়েকটি মিনিটেই সব ল-ভ-।
বিস্ফোরিত উপাদান তারা থেকে ছিটকে যাচ্ছে
মহাবিশ্বের এমন দৃশ্য আগে কখনো দেখা যায়নি- যেখানে একটি নক্ষত্রে প্রলয় চলছে। বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, তারার ধ্বংসপ্রলয় থেকে হয়তো ব্যাখ্যা করার যাবে, পৃথিবীর সৃষ্টি ও মানুষের উৎপত্তি সম্পর্কে। তারার ধ্বংস দেখা মানবগ্রহের জন্য নতুন এক বিস্ময়। এই বিস্ময়ের কিনারা খুঁজতে আদাজল খেয়ে লেগেছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।
কেপলার টেলিস্কোপের তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, প্রচ- গতিতে বিস্ফোরিত হচ্ছে তারা দুটি। আলোকোজ্জ্বল হয়ে বিদীর্ণ হচ্ছে নক্ষত্রীয় উপাদান। বিশাল আলোর কু-লী ছড়িয়ে এভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চলতে থাকে। ধীরে ধীরে আলো কমতে থাকে। ২০ মিনিট পরে আলো নিভে যায়। গভীর অন্ধকারে ডুবে যায়া তারা দুটি। অর্থাৎ মহাপ্রলয় ঘটিয়ে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে দুটি তারা। এ দুটি তারা এখন মহাকাশের নিষ্ক্রিয় বস্তু।
ধীরে ধীরে প্রলয় থেমে যাচ্ছে
কেপলার মহাকাশ টেলিস্কোপ মহাকাশের গভীরে অর্থাৎ বহু দূরের মহাকাশে নতুন নক্ষত্রের খোঁজ করে থাকে। এই সন্ধানের সময় মহাজগতের অজানা নানা ঘটনা ধরা পড়ে টেলিস্কোপের চোখে। তবে তারার মৃত্যু ধারণা করা একেবারেই বিরল ঘটনা।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, তারার মৃত্যু বিশ্লেষণ করে যে বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে, তা হলো- মহাবিশ্বের মহাপ্রলয়। মহাপ্রলয় অর্থাৎ কেয়ামত সম্পর্কেও বিজ্ঞানীরা গবেষণার সুযোগ পাবেন।
এ ছাড়া পৃথিবীতে মানুষের উৎপত্তি নিয়েও গবেষণার পরিসর বাড়াতে পারবেন বিজ্ঞানীরা। মানবগ্রহের ভূতাত্ত্বিক গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন গবেষণার দ্বার উন্মোচিত হবে। পৃথিবীর ভূতাত্ত্বিক উপাদান সিলভার, কপারসহ আরো সব উপাদানের বিষয়ে বিস্ময়কর তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মৃত্যুর পর তারার অবস্থা
পৃথিবী যদি সত্যিই মহাজাগতির বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্টি হয়, তাহলে পৃথিবীর গঠনে থাকা মৌলিক উপাদান সম্পর্কে অজানা অনেক তথ্য জানা যেতে পারে তারার মৃত্যু বিশ্লেষণ করে। এমন কি মানবদেহের বিভিন্ন উপাদান, যা দিয়ে আমাদের দেহ গঠিত, সেই সব গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক উপাদানেরও খোঁজ নেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ মার্চ ২০১৬/রাসেল পারভেজ
No comments:
Post a Comment