Saturday, 13 February 2016

God save them

God save them 

রাখে আল্লাহ মারে কে!

আবু সাইদ নয়ন : রাইজিংবিডি ডট কম
Published:11 Feb 2016   12:41:43 AM   Thursday   ||   Updated:11 Feb 2016   12:33:15 PM   Thursday
রাখে আল্লাহ মারে কে!
আবু সাইদ নয়ন : যেসব বিষয়ের ওপর মানুষের কোনো হাত নেই, তার মধ্যে মৃত্যু একটি। সহজে মানুষকে মারা যায় আবার মৃত্যুর দুয়ার থেকেও অনেকে ফিরে আসে। তখন মুখ থেকে অজান্তেই হয়তো বেরিয়ে আসে ‘রাখে আল্লাহ, মারে কে।’ অবশ্যম্ভাবী মৃত্যুর মুখ থেকে অলৌকিকভাবে যারা বেঁচে ফেরে, তাদের ক্ষেত্রেই এমন উক্তি করা হয়ে থাকে। এসব ক্ষেত্রে বেঁচে থাকার বিজ্ঞানসম্মত কোনো ব্যাখ্যা থাকে না। তখন বলা হয়ে থাকে ‘কপাল জোরে’ বেঁচে আছে।

এখানে আমরা এমন কিছু উদ্ধারকাহিনী নিয়ে আলোচনা করব, যেখানে মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও অনেককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। কাউকে উদ্ধার করা হয়েছে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তুূপ থেকে, বরফস্তূপের নিচ থেকে, ধসে পড়া খনি থেকে, ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ভবন থেকে। এসব ঘটনায় বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব অনুযায়ী তাদের বাঁচার কথা নয়। তাদের বেঁচে থাকাই যেন বারবার প্রমাণ করেছে, জন্ম-মৃত্যুর ওপর কারো নিয়ন্ত্রণ নেই।

মাইনাস ৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ৩৫ ফুট বরফের নিচ ৫ দিন
৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে বেঁচে থাকার কথা চিন্তা করা যায় কি? স্বাভাবিকভাবে চিন্তা করলে মোটেও না। তাও আবার বরফস্তূপের ৩৫ ফুট নিচে চাপা পড়ার পর? শুধু তাই নয়, এভাবে পাঁচ দিন চাপা থাকার পর কাউকে যদি জীবিত উদ্ধার করা হয়, তাহলে তা প্রকৃতির বিস্ময় ছাড়া কিই-বা হতে পারে? আল্লাহ, ঈশ্বর, ভগবান যদি তাকে নিজ হাতে রক্ষা না করেন, তবে তার বেঁচে থাকার কথা নয়।

সম্প্রতি হয়তো অনেকে শুনেছেন ভারত-পাকিস্তানের সীমান্তে সিয়াচেন হিমবাহে তুষারধসে ১০ ভারতীয় সেনা নিখোঁজ হন। এর দুই দিন পরে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হয়তো তারা আর কখনো ফিরবেন না। এই ঘোষণা দেওয়ার পরও সেখানে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখে ভারতের সেনাবাহিনী। এই উদ্ধারাভিযানের কল্যাণে ঘটনার পাঁচ দিনের দিন বরফের নিচে চাপা পড়া এক সেনা কর্মকর্তার সন্ধান মেলে।



ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৯ হাজার ৬০০ ফুট উঁচু হিমবাহে একটি সেনাচৌকিতে দায়িত্ব পালনকালে তুষারধসে চাপা পড়েন ল্যান্স নায়েক হনুমানথাপা কোপাদ। এমন অবস্থায় কারো ১৫ মিনিটের বেশি সময় বাঁচার কথা নয়। এমন ঘটনায় ২৭ শতাংশ লোক ৩৫ মিনিট বেঁচে থাকে। যেখানে ব্রেন ড্যামেজ শুরু হয় ১০ মিনিট থেকে। এ ঘটনা বৈজ্ঞানিক কোনো ব্যাখ্যা দিয়ে প্রমাণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু হনুমানথাপা বেঁচে ছিলেন পাঁচ দিন। তারপর তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তার বেঁচে থাকাটা নিতান্তই ‘রহস্য’।

২৪ দিন বরফের পাহাড়ে অবরুদ্ধ
এক দিন দুই দিন নয়, টানা ২৪ দিন বরফের পাহাড়ে আটকা পড়ার পরও বেঁচে ছিলেন জাপানের এক নাগরিক। তার নাম মিতসুতাকা ইউচুকোশি। এটি ২০০৬ সালের ঘটনা। এমন অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে কারো বাঁচার কথা নয়।

ধসে পড়া খনির মধ্যে ৩৬ দিন
একটি খনি ধসে পড়লে ধ্বংসস্তূপের নিচে মানুষ কত দিন বেঁচে থাকতে পারে? এসব ক্ষেত্রে পাঁচ দিন সর্বোচ্চ সময়, যেখানে জীবিত কারো সন্ধান পাওয়া সম্ভব বলে ধরা হয়। কিন্তু হাতে গোনা ১ মাস ৬ দিন পর চার খনিশ্রমিক ধসে পড়া খনির কূপে বেঁচে ছিলেন। মাত্র কয়েক দিন আগে ২৯ জানুয়ারি ২০১৬-তে ঘটে অলৌকিক এই ঘটনা। চীনের ধসে পড়া একটি খনির কূপ থেকে চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।



ধ্বংসস্তূপের নিচে ২২ ঘণ্টা ৪ মাসের শিশু
২০১৫ সালে নেপালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের নিচে ২২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকা চার মাসের এক শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপে ১৭ দিন
২০১৩ সালের মে মাসে রানা প্লাজা ধসের ১৭ দিন পর ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয় গার্মেন্টস শ্রমিক রেশমাকে।



ভূমিকম্পে গুঁড়িয়ে যাওয়া ভবনের মধ্যে ১৫ দিন
২০১০ সালে হাইতির রাজধানীতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ভবনের মধ্য থেকে ১৭ দিন জীবিত উদ্ধার করা হয় এক মেয়েকে।

এসব উদ্ধারকাহিনি আমাদের বিস্মিত করে। একই সঙ্গে টিকে থাকার সংগ্রাম করতে শেখায়।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/রাসেল পারভেজ/ এএন

No comments:

Post a Comment