Monday, 30 January 2017

Death cause for m/f

পুরুষদের অল্প বয়সে মৃত্যুর ৫ কারণ

মোখলেছুর রহমান : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-৩১ ১০:২৯:০৯ এএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-৩১ ১১:০৬:১০ এএম
প্রতীকী ছবি
মোখলেছুর রহমান : যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এর নতুন এক গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে পুরুষদের গড় আয়ু মহিলাদের তুলনায় ৫ বছর কম।

পুরুষদের গড় আয়ু কমে যাওয়ার কারণগুলোও গবেষণার রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে। সিডিসি’র রিপোর্ট অনুযায়ী অল্প বয়সে পুরুষদের মৃত্যুর পিছনে ৫টি কারণকে দায়ী করা হয়েছে।

১. ধূমপান : পুরুষরা স্বভাবতভাবেই নারীদর চেয়ে ধূমপান বেশি করে। সিডিসির রিপোর্ট অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯ শতাংশ  পুরুষ ধূমপান করে আর নারীদের মধ্যে এর হার ১৫ শতাংশ। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী পুরুষদের চল্লিশ শতাংশ ধূমপায়ী হলেও বিশ্বব্যাপী নারীদের মধ্যে মাত্র ৯ শতাংশ ধূমপায়ী।

এ কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে সিগারেট স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন এর মেডিসিন ও জনস্বাস্থ্য স্কুল এর সহকারী অধ্যাপক ড. জেসিকা কুক, বলেন, ‘ধূমপান একজন মানুষের আয়ু ১৫ বছর পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে।’ সুতরাং এখনই ধূমপানকে না বলুন।

২. মদ্যপান : মহিলাদের চাইতে পুরুষদের মদ্যপানের হার দ্বিগুণ। সিডিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, পুরুষেরা প্রতি ২ ঘণ্টায় ৫ বা ততোধিক বার মদ্যপান করে থাকেন। তাছাড়াও পুরুষদের ক্ষেত্রে মাতাল অবস্থায় ড্রাইভিং এর হারও নারীদের চেয়ে দ্বিগুণ, তাই মদ্যপান সংক্রান্ত মৃত্যুর হারও তাদের বেশি।

মদ্যপানে মুখ, গলা, লিভার, এবং কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। তাই পুরোপুরি মদ্যপান ছেড়ে দেওয়াটাই সবচেয়ে মঙ্গলজনক। তবে পুরোপুরি ছাড়তে না পারলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্যতালিকাগত নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রতিদিন ১২ আউন্সের বেশি বিয়ার খাওয়া উচিত নয়।

৩. ডাক্তার না দেখানো : পুরুষদের একটি চরম বাজে অভ্যাস হল,  ডাক্তার এর অফিসকে এড়িয়ে চলা। ন্যাশনাল সেন্টার ফর হেলথ এর একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতি ৪ জনে ১ জন পুরুষ ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসকের কাছে যান না। আর এর পেছনে অজুহাত হিসেবে পুরুষেরা ব্যস্ততা, পরীক্ষা, খারাপ লাগছে এবং ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্টের ফলে খারাপ কোনো কিছু ধরা পড়ার ভয়- এগুলোকেই তুলে ধরেন।

কিন্তু ডাক্তারকে এড়িয়ে চলা একটি বড় সমস্যা। ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের মতো অবস্থাগুলো তাড়াতাড়ি ধরা পড়লে, তা ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের মতো আরো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হওয়া থেকে বাঁচতে সাহায্য করে। এছাড়া নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এটাও নিশ্চিত করে যে, আপনি নিরাপদ আছেন। সুতরাং, নিয়মিত ডাক্তার দেখান। সময় না থাকার অজুহাত আর নয়।

৪. বিনোদনের উপায় খুঁজে বের করুন : অনেকের জীবনে স্ট্রেসের মাত্রা বেড়েই চলেছে। আমেরিকান মনস্তাত্ত্বিক অ্যাসোসিয়েশনের (এপিএ) এক পরিসংখ্যানে অংশ নেওয়া পুরুষদের এক তৃতীয়াংশ জানিয়েছে, আগের বছরের তুলনায় তারা আরো বেশি অবসাদগ্রস্থতায় ভুগেছেন।

বেশি স্ট্রেস শরীরে অধিক পরিমানে অ্যাডরেনেলাইন ও করটিজল এর মতো হরমোন নিঃসরণ করে যা রক্তচাপ, কোলেস্টেরল বাড়িয়ে করোনারি আর্টারি ডিজিজ, হার্ট অ্যাটাক এবং রাস্তায় স্ট্রোকের উচ্চ ঝুঁকিতে ফেলে।

তাই আপনি যদি দীর্ঘায়ু লাভ করতে চান তাহলে স্ট্রেসের বিরুদ্ধে এখনই যুদ্ধ ঘোষণা করুন। খুঁজে বের করুন আপনার জন্য উপযুক্ত বিনোদনের মাধ্যমটি।

৫. মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিন : সিডিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ৮০ শতাংশ আত্মহত্যা সংগঠিত হয় পুরুষদের মাধ্যমে। তার মানে বিশ্বব্যাপী যত আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে তার ৮০ শতাংশই করে পুরুষেরা। পুরুষদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে আত্মহত্যার অবস্থান ৭ম।

এর পেছনে একটি সম্ভাব্য অন্তর্নিহিত ফ্যাক্টর হল, পুরুষরা বিষণ্নতা ও উদ্বেগের মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পর্কে কথা বলাটা এড়িয়ে চলেন। আর এ দুটি বিষয়ই পুরুষদের আত্মঘাতী হওয়ার ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেয়।

তাই যদি আপনি বিষণ্নতা উপসর্গের সম্মুখীন হন দ্রুত আপনার ডাক্তারের অ্যাপয়েনমেন্ট নিন। তাহলে তিনি হয়তো ওষুধ বা কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে আপনার চিকিৎসার সুপারিশ করতে সক্ষম হবেন।

তথ্যসূত্র: ফক্স নিউজ
 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩১ জানুয়ারি ২০১৭/ফিরোজ

ISSF Ist champion Bangladesh

আর্চারিতে বাংলাদেশের স্বর্ণজয়

শামীম হোসেন পাটোয়ারি : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-৩০ ১২:২৯:২৬ পিএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-৩০ ৬:০৮:৫১ পিএম
হীরা মনি (ডানপাশে)
ক্রীড়া ডেস্ক: প্রথম আইএসএসএফ ইন্টারন্যাশনাল সলিডারিটি আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণ জিতেছেন বাংলাদেশের হীরা মনি।

রিকার্ভ নারী একক ইভেন্টে স্বর্ণ জিতলেন এই আর্চার। এদিকে প্রতিযোগিতায় ৯ ইভেন্টে অংশ নিয়ে ৭ টিতেই ফাইনাল নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশের আর্চাররা।

সোমবার মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে  দিনের শুরুতে মহিলাদের রিকার্ভ একক ইভেন্টের ফাইনালে হীরা আজারবাইজানের রামোজামোভাকে ৬-৪ পয়েন্টে হারান। এরমধ্য দিয়ে দিনের প্রথম স্বর্ণ জেতালেন হীরা মনি।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জানুয়ারি ২০১৭/শামীম/টিপু

empty stomac - tea/coffee !!??

খালি পেটে নয়

মনিরুল হক ফিরোজ : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-২৯ ১০:৩১:১৬ এএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-২৯ ১০:৩১:১৬ এএম
প্রতীকী ছবি
দেহঘড়ি ডেস্ক : শরীরকে একটু চাঙা করে তুললে চা খাওয়ার অভ্যাস আমাদের প্রায় প্রত্যেকেরই রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে ‘বেড টি’ অর্থাৎ সকালে খালি পেটে খাওয়ার অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।

সকালে ঘুম ভাঙার পর শরীরের আলসেমি দূর করার জন্য খালি পেটে চা খাওয়ার অভ্যাসে নানা রোগের শিকার হতে পারেন। জেনে নিন, খালি পেটে চা খেলে যেসব শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হতে পারে।

* খালি পেটে চা খিদে নষ্ট করে।

* খালি পেটে চা পান করলে রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়, যা কিডনি রোগীদের জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর।

* খালি পেটে চা পাকস্থলি স্ফীতিরও কারণ হয়ে উঠতে পারে। অর্থাৎ পেট ফোলার মতো অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে।

* চা অ্যাসিডিক প্রকৃতির খাবার। তাই খালি পেটে চা খেয়ে অ্যাসিডিটি হতে পারে।

* চায়ে থাকা ট্যানিন থেকে বমি ভাব আসতে পারে।

* ক্লান্তি দূর করতে আমরা সকালে উঠে চা খাই। কিন্তু খালি পেটে দুধের চা তাৎক্ষণিক আমেজ আনলেও সারাদিন ক্লান্তির সৃষ্টি করতে পারে। যার জন্য মেজাজও খিটখিটে হতে পারে।

* খালি পেটে কড়া করে চা, আলসারের ঝুঁকি বাড়ায়।

* আদা দেওয়া চা প্রতিদিন খালি পেটে খাবেন না। গ্যাসট্রিক অনিবার্য।

* চায়ে থাকা ক্যাফেইন, থিওফিলিন জাতীয় পদার্থের জন্য আপনি বদহজমে ভুগতে পারেন।

তাই বেড-টি খেয়ে আলসেমি কাটানো আগে দ্বিতীয়বার ভাবুন। সকালে খালি পেটে পানি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য যতটা ভালো, চা কিন্তু নয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ জানুয়ারি ২০১৭/ফিরোজ

Fish smell clear info

মাছের গন্ধ দূর করার ৬ উপায়

মনিরুল হক ফিরোজ : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-৩০ ১২:০৫:৫৯ পিএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-৩০ ২:৪৫:৪৫ পিএম
প্রতীকী ছবি
লাইফস্টাইল ডেস্ক : মাছ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উত্তম খাবার কিন্তু যারা নিয়মিত রান্না করে থাকেন তারা জানেন যে, রান্নাঘরে মাছের বিকট গন্ধটা মোটেও পছন্দের কিছু নয়।

তবে মাছভক্তদের জন্য সুখবর হচ্ছে, চতুর ও খুব সহজ কিছু উপায় রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি মিনিটের মধ্যে রান্নাঘর থেকে মাছের গন্ধের অবসান ঘটাতে পারবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক।

* মাছ দুধ দিয়ে ধুয়ে নিন : আপনার কাছে এটা উদ্ভট মনে হতে পারে কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, দুধে শোষণ ক্ষমতা রয়েছে। তাই তা দারুন সাহায্য করবে মাছের গন্ধ দূর করার ক্ষেত্রে। দুধের মধ্যে থাকা ক্যাসেইন নামক প্রোটিন মাছের পঁচা গন্ধের জন্য দায়ী ট্রাইমিথাইন অ্যামাইন দূর করে নিজস্ব সতন্ত্র গন্ধ তৈরি করে।

* ভিনেগার পানিতে ভিজিয়ে রাখুন : একটি পাত্রে অ্যাসিডিক ভিনেগার মিশ্রিত পানিতে ঘণ্টাখানেক মাছ ভিজিয়ে রাখলে দূর হয়ে যাবে গন্ধ।

* কয়েক টুকরা আলু রেখে দিন : ফ্রিজের বাটিতে কিংবা ডিশে রাখা মাছ বের করে গন্ধ দূর করতে দুইটি আলু অর্ধেক টুকরো করে কেটে তাতে লবণ ছিটিয়ে কয়েক ঘণ্টার জন্য মাছের পাত্রে রেখে দিন।

* সুগন্ধ কিছু তৈরি করুন : রান্না ঘরে কফি, মেন্থল চা, পাউরুটি কিংবা কেক তৈরি করতে পারেন ওই  সময়ে, যা মাছের গন্ধকে পরাভূত করবে।

* লেবু : একটি অর্ধেক লেবু ১০ মিনিটের জন্য ফুটন্ত পানিতে ছেড়ে দিন, এটি মাছের গন্ধ সামলাতে সাহায্য করবে।

* তাজা মাছু কিনুন এবং সঙ্গে সঙ্গে রান্না করে ফেলুন : মাছ যতদিন ফ্রিজে রাখবেন, তত বেশি গন্ধ সহ্য করতে হবে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে, তাজা মাছ কিনুন এবং বাসায় এনে সঙ্গে সঙ্গে রান্না করে ফেলুন।

তথ্যসূত্র: ডেইলি মেইল




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জানুয়ারি ২০১৭/ফিরোজ

tiger killed man

বাঘের আক্রমণে মানুষের মৃত্যু (ভিডিও)

রাসেল পারভেজ : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-৩০ ২:০২:৩৪ পিএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-৩০ ২:২৩:৫৪ পিএম
চীনের ইয়ংগর চিড়িয়াখানায় এক ব্যক্তির ওপর বাঘের আক্রমণের মুহূর্তে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনের পূর্বাঞ্চলীয় একটি চিড়িয়াখানায় বাঘের মুখে শেষ হলো এক দর্শনার্থীর জীবন।

এই দর্শনার্থী বাঘের বিচরণ এলাকায় ঢুকে পড়লে বাঘটি তার ওপর হামলে পড়ে এবং উপর্যুপরি কামড় ও থাবায় লোকটির মৃত্যু হয়। ঘটনার পরপরই গুলি করে বাঘটি মেরে ফেলা হয়।

রোববার নিংবো শহরের ইয়ংগর চিড়িয়াখানায় লোমহর্ষক এ ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসি অনলাইনের।

বাঘের মুখ থেকে লোকটিকে উদ্ধার করে পাশের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই দর্শনার্থী কেন বাঘের বিচরণ এলাকায় ঢুকেছিলেন, তাও জানা যায়নি। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। ঘটনার সময় লোকটির স্ত্রী ও দুই সন্তান চিড়িয়াখানায় ছিলেন।

এ ঘটনার পর চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকবে। হামলার শিকার লোকটির নাম ঝাং বলে জানিয়েছে এই সম্প্রচারমাধ্যম।

স্থানীয় সময় রোববার দুপুরে ইয়ংগর চিড়িয়াখানায় নিজের বিচরণ এলাকায় লোকটিকে আক্রমণ করে বাঘটি। এ দৃশ্য উপস্থিত দর্শনার্থীরা দেখেছেন। কেউ কেউ হামলার দৃশ্য ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন।

নীল ও কালো রঙের পোশাক পরা এক ব্যক্তিকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। লোকটির ঘাড়ে একটি বাঘকে মুখ রাখতে দেখা যায়। এ সময় আরো দুটি বাঘ লোকটিকে ঘিরে ঘুরছিল।

উপস্থিত দর্শনার্থীরা বাঘের গর্জন ও লোকটির আর্তচিৎকার শুনতে পায়। বাঘের মুখে লোকটির প্রাণ হারানোর এ দৃশ্য লোকজন দাঁড়িয়ে দেখছিল।

বাঘগুলো সরিয়ে দিতে বিস্ফোরণ ঘটায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। দুটি বাঘ সরে গেলেও আরেকটি বাঘ লোকটির ওপর কামড়ের পর কামড় বসিয়ে যাচ্ছিল।

সিসিটিভি আরো জানিয়েছে, সহকর্মী লি ও তার স্ত্রীর সঙ্গে সপরিবারে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছিলেন ঝাং। ঝাংয়ের স্ত্রী ও দুই সন্তান তার সঙ্গে ছিলেন।

নারী ও শিশুরা টিকিট কেটে চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করেন। তবে ওই দুই ব্যক্তি প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢোকেন। এরপর আরেকটি ১০ ফুট উঁচু প্রাচীর টপকানোর চেষ্টা করেন ওই দুই ব্যক্তি। এই প্রাচীরটি বাঘের বিচরণ এলাকার সীমানা। প্রাচীরে উঠে ভারসাম্য না রাখতে পেরে বাঘের সীমানায় পড়ে যান লোকটি। তখন বাঘ এসে তার ওপর আক্রমণ করে।

বাঘের বিচরণ এলাকার চারপাশে প্রাচীরের সঙ্গে সতর্কতামূলক বার্তা দেওয়া আছে। তারপরও লোকটি প্রাচীরের ওপর ওঠেন। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে। তবে লোকটি নয়, বরং বাঘের জন্য বেশি সমবেদনা জানানো হয়েছে। জেনেবুঝে প্রাণের ঝুঁকি নেওয়ায় লোকটির সমালোচনা করেছেন অনেকে।

গত বছর জুলাই মাসে চীনে বন্য প্রাণীর একটি পার্কে মা ও মেয়েকে আক্রমণ করে বাঘ। মেয়েটি প্রাণে বেঁচে গেলেও মা মারা যান।

ভিডিও লিংক :
 http://www.risingbd.com/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%98%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%86%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AE%E0%A6%A3%E0%A7%87-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%81%E0%A6%B7%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%83-%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A6%93/211411

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জানুয়ারি ২০১৭/রাসেল পারভেজ/এএন

26 jan international customs day

১০ টাকার স্মারক ডাকটিকিট ও খাম উন্মোচন প্রধানমন্ত্রীর

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-৩০ ১:৩৫:৫০ পিএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-৩০ ১:৫৩:০৬ পিএম

সচিবালয় প্রতিবেদক : আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উপলক্ষে (২৬ জানুয়ারি উদযাপিত) ১০ টাকা মূল্যের একটি স্মারক ডাকটিকিট ও একই মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে এই ডাকটিকিট ও খাম উন্মোচন করা হয় বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।



এ সময় প্রধানমন্ত্রী ৫ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটা কার্ড ও একটি বিশেষ সিলমোহরও উন্মোচন করেন।

এ সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জানুয়ারি ২০১৭/নঈমুদ্দীন/সাইফুল/এএন

6 march national jute day

এখন থেকে ৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-৩০ ২:৩৪:৪০ পিএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-৩০ ২:৩৪:৪০ পিএম

সচিবালয় প্রতিবেদক : এখন থেকে ৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস উদযাপিত হবে।

সোনালী আঁশ পাটের ঐতিহ্য ফেরাতে ৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস উদযাপনের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

দিবসটিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক জারি হওয়া পরিপত্রের ‘খ’ ক্রমিকে অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জানুয়ারি ২০১৭/নঈমুদ্দীন/সাইফুল

Sunday, 29 January 2017

smell power info

রাণের চমকপ্রদ ১৭ তথ্য

আফরিনা ফেরদৌস : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-৩০ ১০:১৯:২২ এএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-৩০ ১০:৫৯:৫৬ এএম
প্রতীকী ছবি
আফরিনা ফেরদৌস : সবার ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় সমান নয়। আপনার কাছে যে গন্ধটি ভালো লাগে অন্য কারো কাছে হয়তো সেটি খুব অস্বস্তিকর গন্ধ। এই বিষয়ে করা সর্বশেষ গবেষণা থেকে বলা হয়, যেখানে সকালের নাশতার খাবারের সুবাস একজন পুরুষের পছন্দের গন্ধ, ওই একই গন্ধ একজন নারীর কাছে নতুন জন্মানো বাচ্চার গন্ধের মতো।

অন্য এক গবেষণা থেকে বলা হয় যে, আপনি বলে দিতে পারেন আপনার সামনের মানুষটি ঠিক কোনো ধরনের পরিবেশ থেকে এসেছেন আর সেটা তার পারফিউম পছন্দ করার মাধ্যমে। আসুন জেনে নেওয়া যাক আমাদের ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় সম্পর্কে এমন আরো ১৭ চমকপ্রদ তথ্য।

* ৪ সপ্তাহ পর পর নতুন নাক : আপনি সব সময় কিন্তু একই ধরনের গন্ধ অনুভব করেন না। একজন মানুষের গন্ধ নেওয়ার ইন্দ্রিয় প্রতি ২৮ দিন পর পর পুনরায় পরিবর্তন হয়। সে ক্ষেত্রে বলা যায় প্রতি ৪ সপ্তাহ পর পর আপনার একটি করে নতুন নাকের সৃষ্টি হয়।

* ঘ্রাণ মনে রাখার ক্ষমতা : মানুষের অনুভূতিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে স্পর্শকাতর হচ্ছে ঘ্রাণ। মানুষ একটি গন্ধের ৬৫% মনে রাখতে পারে প্রায় এক বছর পরেও। সেখানে দর্শন ইন্দ্রিয় মনে রাখে মাত্র ৫০%।

অন্যান্য ইন্দ্রিয়ের তুলনায় গন্ধ মানুষের অনুভূতির সঙ্গে বেশি জড়িত। এক গবেষণায় বলা হয়, ঘ্রাণ মানুষের প্রশান্তি, ভালো থাকা, অনুভূতি এবং স্মৃতির সঙ্গে প্রায় ৭৫% জড়িত।

* ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় বিরক্ত হতে পারে : আপনার ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় খুব তাড়াতাড়ি বিরক্ত হয়ে উঠতে পারে। যেমন মনে করুন আপনি কোনো বেকারিতে ঢুকলেন এবং খুব সুন্দর সুবাস পেতে থাকলেন কিন্তু হঠাৎ করে যদি আপনাকে বের হয়ে আসতে হয় তাহলে আপনি আর সেই সুন্দর সুবাস পাচ্ছেন না, তখন আপনার ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় বিরক্ত হয়ে ওঠে।

* দ্রুত উন্নতশীল : মানুষের সকল ইন্দ্রিয়ের মধ্যে শুধু ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় সবচেয়ে দ্রুত বা তাড়াতাড়ি উন্নতি লাভ করে। এমনকি আমাদের জন্মের পূর্বেই এই ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় গঠিত হয় এবং এর কার্যক্রম চালনা করে।

* নারীর ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় : একজন নারীর ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় একজন পুরুষের তুলনায় বেশি শক্তিশালী।

* ঋতু এবং ঘ্রাণ :  আপনি বসন্ত এবং গ্রীষ্মকালীন সময়ে ভালো ঘ্রাণ অনুভব করেন তার কারণ এই সময়গুলো বাতাসে অনেক ময়েশ্চারাইজার মিশ্রিত থাকে। এই একই কারণে ব্যায়াম করার পরও শক্তিশালী ঘ্রাণ অনুভূত হয় কারণ তখন এটি অনুনাসিক উত্তরণেও ময়েশ্চারাইজার বৃদ্ধি করে।

* মানুষ স্বল্প ক্ষমতাসম্পন্ন :  একজন মানুষের অন্য একজন মানুষের ঘ্রাণ বা গন্ধ শনাক্ত করার ক্ষমতা কোষ প্রায় ৫ থেকে ৬ মিলিয়ন। কিন্তু প্রাণী রাজ্যের তুলনায় এটি কিছুই নয়। খরগোশের ঘ্রাণ শনাক্ত করার ক্ষমতা ১০০ মিলিয়ন আর কুকুরের ২২০ মিলিয়ন।

* স্বতন্ত্র ঘাম : স্বতন্ত্র ঘামের মাধ্যমে অপরাধীদের ধরা সম্ভব হবে অদূর ভবিষ্যতে। ইসরায়েলের রসায়নবিদগণ বলছেন, মানুষ যে খাবার খায়, যে ওষুধ বা ড্রাগ গ্রহণ করে, লিঙ্গ এমনকি তার চিন্তাভাবনা সব মিলিয়ে একটি মানুষের স্বতন্ত্র ঘাম তৈরি হয়।

তেল আবিব ইউনিভার্সিটির রসায়নবিদ ড. মাইকেল গজিন এবং তার দল কাজ করছেন, মানুষের ঘামের উপাদান অনুসারে আলাদা পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য। তাদের দাবি, প্রত্যেক মানুষের আলাদা এবং স্বতন্ত্র কেমিক্যাল ফিঙ্গার প্রিন্ট রয়েছে।

* প্রাণীর পছন্দের ঘ্রাণ : যেখানে মানুষের পছন্দের ঘ্রাণ থাকতে পারে সেখানে প্রাণীর নয় কেন। বিড়াল পছন্দ করে ভ্যালেরিয়ান নামক একধরনের গুল্মের গন্ধ, সিংহ পছন্দ করে পুদিনা পাতার গন্ধ এবং উট পছন্দ করে তামাকের গন্ধ।

* এরিয়া সাইজ  : মানুষ মস্তিষ্ক প্রায় ১০ হাজার ঘ্রাণ প্রক্রিয়া করতে পারে ডাকটিকিট মাপের একটি জায়গা থেকে। তবে এর পুরোটাই স্নায়বিক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

* নতুন গাড়ির ঘ্রাণ : নতুন জামা বা জুতার গন্ধ সবাইকে আনন্দিত করে তবে সবচেয়ে আনন্দিত করে নতুন গাড়ির গন্ধ। এই ঘ্রাণটি গাড়ির ভেতরে প্রায় ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত থাকে।

* ঘুমের মধ্যে ঘ্রাণ : আপনি কি আপনার ঘুমের মধ্যে ঘ্রাণ নিতে পারেন? না, কারণ আপনি যখন ঘুমান তখন আপনার ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় বন্ধ থাকে।

* ঘ্রাণ এবং স্বাদ : শুধু ঘ্রাণের মাধ্যমে ৭৫-৯৫% বলে দেওয়া সম্ভব যে, ওই খাবারটি কতটুকু সুস্বাদু বা কী জাতীয় খাবার।

* ঘ্রাণ শক্তিহীনতা রোগ :  ঘ্রাণ শক্তিহীনতা একধরনের রোগ, যাকে বলা হয় অ্যানোসমিয়া বা ঘ্রাণশক্তির লোপ।

* হোটেল ঘ্রাণ : যুক্তরাষ্ট্রে চেইন হোটেলগুলো তাদের নিজস্ব ঘ্রাণ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। যেমন শেরাটন ব্যবহার করে ডুমুর, লবঙ্গ এবং জেসমিনের ঘ্রাণ। ওয়েস্টিনের লবিতে থাকে সাদা চায়ের গন্ধ। আর ফোর পয়েন্টের ভেনাসে থাকে দারুচিনির ঘ্রাণ।

* ঘ্রাণের আকর্ষণীয়তা : যারা ঘ্রাণে আকর্ষিত হন ঘ্রাণ নেওয়ার পদ্ধতি তাদের জন্য একটি বড় ব্যাপার। একজন নির্দিষ্ট মেয়ে ছেলেদের টি-শার্ট পরতে শুরু করলেন কিন্তু যারা সত্যি ঘ্রাণের প্রতি আকৃষ্ট তারা মেয়েটিকে চিনতে পারলেন এবং তাকে ইঙ্গিত করলেন। এটা মেয়েটির আকর্ষণীয় শরীরের গন্ধের মাধ্যমে সম্ভব।

* খারাপ ঘ্রাণ :  যারা অনেক দরিদ্র তারা সাধারণত কাকোসমিয়া রোগে ভোগেন। কারণ তারা সব সময় নোংরা পরিবেশে থাকেন, নোংরা খাবার খান এবং সব সময় খারাপ ঘ্রাণ নিতে থাকেন। এটা এতটা খারাপ যে এক গুচ্ছ সতেজ ফুলের ঘ্রাণ তাদের কাছে খারাপ বা বাজে লাগে। এমনকি তারা এই ফুলের গন্ধে বমি করে দিতে পারেন।

তথ্যসূত্র: মিরর


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জানুয়ারি ২০১৭/ফিরোজ/এএন 

Saturday, 28 January 2017

Life without O2

অক্সিজেন ছাড়াই সারাজীবন বেঁচে থাকে!

শাহিদুল ইসলাম : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-২৯ ১১:৪৮:৪০ এএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-২৯ ১১:৪৮:৪০ এএম

শাহিদুল ইসলাম : একথা সকলেই জানে যে, অক্সিজেন ছাড়া পৃথিবীর কোনো প্রাণীই বাঁচতে পারে না। কিন্তু সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানী ভূমধ্যসাগরের তলদেশে এমন প্রাণীর সন্ধান পেয়েছেন বলে দাবী করেছেন, যারা গোটা জীবন অক্সিজেন ছাড়াই বেঁচে থাকে।

বিজ্ঞানীদের এমন ঘোষণার ফলে সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। প্রাণীবিদ্যার নামকরা সব অধ্যাপকেরা ভাবতে শুরু করেছেন, তবে কি বায়োলজির বই আবারো নতুন করে লিখতে হবে? কারণ প্রাণীবিদ্যা সংক্রান্ত সকল বইয়ে স্পষ্ট করে লেখা আছে, অক্সিজেন ছাড়া কোনো প্রাণীই বাঁচতে পারে না।

কিন্তু সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা তাদের অনুসন্ধানে জানিয়েছেন, ভূমধ্যসাগরের অতি ক্ষুদ্র অনুজীব লরিসিফ্রেনস অক্সিজেন ছাড়াই বেঁচে থাকতে পারে। ভূমধ্যসাগরের একেবারে তলদেশে বাস করা লরিসিফ্রেনস খালি চোখে দেখা যায় না। এটি দেখতে অনেকটা বড় সাইজের এককোষী জলজ আণুবীক্ষণিক জীব অ্যামিবার মতো দেখতে।

ইতালির পলিটেকনিক ইউনির্ভাসিটি অব মার্সে এর অধ্যাপক রবার্তো দানোভারো এই প্রাণীর আবিষ্কারক। তিনি ও তার দল ইতালির লা-আটলান্টা অববাহিকায় এক দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন লরিসিফ্রেনস নামের এই প্রাণী অক্সিজেন ছাড়াই বেঁচে থাকে।

কারণ বিজ্ঞানীরা লা-আটলান্টা অববাহিকার যে স্থানে এই অনুজীবের সন্ধান পেয়েছেন ওই স্থানটি এত বেশি লবণাক্ত যে গত পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি সময় ধরে জায়গাটি অক্সিজেন শুণ্য হয়ে রয়েছে। আর এমন অক্সিজেন শুণ্য স্থানে পাওয়া গেছে প্রাণী জগতের নবীনতম আবিষ্কার লরিসিফ্রেনস।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক রবার্তো দানোভারো নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেন, আমরা যখন প্রথম প্রাণীটি দেখতে পেলাম তখন আমরা নিজেদের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। কারণ এরকম অক্সিজেন শুণ্য জায়গায় কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব থাকাটা একেবারেই বিস্ময়কর। এর ফলে আমরা ঘোষনাটি দিতে প্রায় এক দশক সময় নিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, আমরা জানি যে ফ্লাটওয়ার্ম নেমাটোডের মতো মতো কিছু পরজীবী আছে যারা জীবনের একটা বড় সময় ধরে অক্সিজেন ছাড়াই বেঁচে থাকে তবে লরিসিফ্রেনসের মতো গোটা জীবন নয়। তবে তিনি এখনো শতভাগ দাবি করেননি যে, লরিসিফ্রেনস গোটা জীবনই অক্সিজেন ছাড়াই কাটিয়ে দেয়। তিনি ও তার গবেষণা দল এখনো কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন এবং এরপরই চূড়ান্ত ঘোষণা দেবেন। ততদিন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে যে আসলেই কি লরিসিফ্রেনস অক্সিজেন ছাড়াই পুরো জীবন বেঁচে থাকে?
 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ জানুয়ারি ২০১৭/ফিরোজ

Thursday, 26 January 2017

website value 5 million pounds

১৬ বছরের কিশোরের ওয়েবসাইটের মূল্য ৫০ কোটি!

মনিরুল হক ফিরোজ : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-২৬ ২:০৩:২৩ পিএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-২৬ ২:১৭:১৩ পিএম

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : আপনি যখন ১৬ বছরের ছিলেন তখন কি করতেন? আমার ক্ষেত্রে বলতে পারি, আমার মা আমাকে প্রতিদিন স্মরণ করিয়ে দিত, সামনের এসএসএস পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার কথা। সেজন্য রুমে চোখের সামনে বই খুলে বসে থাকতাম এবং মন ঘুরে বেড়াত ভালো রেজাল্টের লক্ষ্যে।

তবে ১৬ বছর বয়সে সকলের ভাবনাই কিন্তু এক নয়। কারো কারো ভাবনা অন্যদের চেয়ে আরো বেশি উদ্দেশ্যমূলক হয়।

পরিচিত হয়ে নিন, তেমন এক জনের সঙ্গে। নাম মোহাম্মদ আলী। উত্তর ইংল্যান্ডের ইয়র্ক কাউন্টির ডেইসবেরি শহরে বসবাসকারী ১৬ বছরের এই কিশোর তার ওয়েবসাইটে (Weneed1.com) এমন অ্যালগরিদম ডেভেলপ করেছে, যা রিয়েল টাইম তথ্য প্রদর্শন করতে পারে, সাধারণ ইন্সুরেন্স সাইটগুলোর আগে থেকে নির্ধারিত তথ্যের পরিবর্তে।

এ লেভেল পড়ুয়া এই কিশোরের মতে, বায়ার এবং সেলারদের অর্থ ও সময় সাশ্রয়ের এ ধরনের উন্নত সার্চ ইঞ্জিন এটাই প্রথম। যা ব্যবহারকারীদেরকে রিয়েল টাইম ‘ব্লুমবার্গ টার্মিনাল’ হিসেবে সুবিধা দেবে। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন বিনোযোগকারী তার এই নতুন আইডিয়া কেনার জন্য ৫ মিলিয়ন পাউন্ড (বাংলাদেশি টাকায় যা ৫০ কোটির টাকার কিছু বেশি) প্রদানের অফার করেছে। কিন্তু মোহাম্মদ আলী ৫ মিলিয়ন পাউন্ডে তার সাইট বিক্রির অফারটি গ্রহণ করেনি।


এ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আলী সংবাদমাধ্যম মিররকে জানায়, ‘লন্ডনে বিনোযোগকারীদের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয় এবং তারা বিশ্বাসই করতে পারেনি যে, এই সাইট আমি ডেভেলপ করেছি। ৫ মিলিয়ন পাউন্ডে বিক্রির অফার ফিরিয়ে দেওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে, যদি এই প্রযুক্তি এখন প্রাথমিক অবস্থায় মিলিয়ন পাউন্ডের হয়ে থাকে, তাহলে যখন এটি মানুষজন ব্যবহার করবে, তখন তার মূল্য কি পরিমান দাড়াবে।’

এই বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রস্তাব প্রত্যাখান করাটা ঝুঁকির বিষয় হলেও, তার বিশ্বাস ব্র্যান্ড হয়ে ওঠবে ওয়েবসাইট। ৬০ বছর বয়সী ক্রিস থপারের সঙ্গে অংশীদারিত্বের তার এই প্রজেক্ট আনুষ্ঠানিকভাবে লঞ্চ হবে ২৮ জানুয়ারি।

তবে এই বিপুল পরিমান অর্থ প্রস্তাব ইয়র্ক কাউন্টির ট্যাক্সি ড্রাইভারের ছেলে মোহাম্মদ আলীর জীবনে এবারই প্রথম ঘটনা নয়। এর আগে ২০১২ সালে একটি ভিডিও গেম তৈরি করে সে, যা তাকে এনে দিয়েছিল ৩০ হাজার পাউন্ড আয়।

তথ্যসূত্র: স্কুপহুপ


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ জানুয়ারি ২০১৭/ফিরোজ

waterbording usa system

সেই ‘ওয়াটারবোর্ডিং’ ফিরিয়ে আনতে চান ট্রাম্প (ভিডিও)

রাসেল পারভেজ : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-২৬ ১২:২১:১১ পিএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-২৬ ২:০৩:২৫ পিএম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতনের সেই পুরোনো কৌশল ‘ওয়াটারবোর্ডিং’ ফিরিয়ে আনতে চান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি বিশ্বাস করেন, ওয়াটারবোর্ডিংয়ে কাজ হয়। ‘আগুনের সঙ্গে আগুন দিয়ে লড়াই’ করতে চান তিনি।

ধর্মীয় উগ্রবাদী বিশেষ করে ইসলামের নামে মৌলবাদীরা যে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে, তার বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান নিতে চান যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কীভাবে লড়াই করা যায়, সে বিষয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস মাত্তিস ও সিআইএর প্রধান মাইক পমপেওর সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি।

ট্রাম্প বলেন, ‘মৌলবাদীরা মধ্যপ্রাচ্যে যখন মানুষের শিরশ্ছেদ করছে, তখন আমরা একটি ক্ষেত্রেও লড়ছি না।’ মৌলবাদী, উগ্রবাদী বা জঙ্গি যা-ই বলা হোক, তাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নামে যেকোনো বন্দির ওপর ওয়াটারবোর্ডিং কৌশল প্রয়োগের বিরোধিতা করে আসছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

সিআইএর সাবেক পরিচালক লিওন প্যানেট্টা ওয়াটারবোর্ডিং কৌশল ব্যবহারের ঘোর বিরোধী। নির্যাতনমূলক এই কৌশলে ফিরে যাওয়া ‘বড় ভুল’ হবে বলে মনে করেন তিনি।

ট্রাম্পের দাবি, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ রাখতে চান। এ জন্য সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেবেন না তিনি। তবে নির্যাতনমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছে ডেমোক্রেটিক পার্টি।

ওয়াটারবোর্ডিং ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ট্রাম্পের যুক্তি হলো : ‘যখন তারা গুলি চালায়, যখন তারা আমাদের লোকজন ও অন্য মানুষদের শিরশ্ছেদ করে, যখন মধ্যপ্রাচ্যে খ্রিষ্টান হওয়ায় তাদের শরীর থেকে মাথা কেটে ফেলা হয়, যখন আইএস এতসব করে যাচ্ছে, যা মধ্যযুগের পর প্রায় শোনাই যায়নি, তখন কি আমার মধ্যে ওয়াটারবোর্ডিং প্রয়োগের প্রশ্ন উঠতে পারে না?’

বুধবার এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এসব বলেছেন। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি গোয়েন্দাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ে কথা বলেছি এবং তাদের কাছে জানতে চয়েছি, এতে কি কাজ হয়? তারা উত্তর দিয়েছে, হ্যাঁ, হয়।’

ট্রাম্প বলতে থাকেন, ‘...তারা তাদের মাথা কাটছে, তারপর ক্যামেরায় ধারণ করে বিশ্বজুড়ে প্রচার করছে। ফলে আমাদেরও ওয়াটারবোর্ডিং রাখতে হবে এবং আমরা তাদের এমন আর কিছু করতে দেব না।’

তবে তিনি আরো বলেন, ‘আমি পমপেও, মাত্তিস ও আমার টিমের ওপর ভরসা করি। তারা যদি না চায়, তাহলে ভালো। তবে যদি চায়, তাহলে এটি বহাল করব আমি।’
উল্লেখ্য, বারাক ওবামা ২০০৯ সালে ওয়াটারবোর্ডিং বাতিল করে।
ওয়াটারবোর্ডিং কী?
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর ব্যবহৃত একধরনের জিজ্ঞাসাবাদ কৌশল হলো ওয়াটারবোর্ডিং। বন্দিদের টেবিলের ওপর শুইয়ে বেল্ট দিয়ে হাত-পা বেঁধে নাক-মুখে পানি ঢালা হয় এবং প্রশ্ন করা হয়। কখনো কখনো গরম পানিও ঢালা হয়। প্রচণ্ড যন্ত্রণা হলেও কিছুই করার থাকে না। নির্যাতনের মাত্রা এতটাই বেশি যে, সহ্য করতে না পেরে অভিযুক্তরা তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করে দেয় এবং অনেকে ভয়ে ভুল তথ্য দেয়।

ওয়াটারবোর্ডিংয়ের একটি ভিডিও দেওয়া হলো, যা দেখলে নির্যাতনমূলক এই জিজ্ঞাসাবাদ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ জানুয়ারি ২০১৭/রাসেল পারভেজ/ এএন

Wednesday, 25 January 2017

Bahai institute edu

গোপন বিশ্ববিদ্যালয়

শাহিদুল ইসলাম : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-২৫ ২:৩৫:২৭ পিএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-২৫ ৭:২৭:৫২ পিএম
চাইলে ইরানের সব মেয়েরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, কিন্তু বাহাই সম্প্রদায়ের মেয়েরাই শুধু পারে না
শাহিদুল ইসলাম : শিরোনাম পড়ে হয়তো অনেকেই অবাক হয়েছেন। গোপন বিশ্ববিদ্যালয় আবার কেমন? বিশ্ববিদ্যালয় তো হবে সর্বজনীন, বিশ্বায়নের এক টুকরো উর্বর ভূমি। কিন্তু এই একবিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীতে এমনও বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেটির কার্যক্রম চলে লোকচক্ষুর আড়ালে।

‘বাহাই ইন্সিটিটিউট অব হায়ার এডুকেশন’ এমন একটি গোপন বিশ্ববিদ্যালয়। তবে এই বিশবিদ্যালয় সম্পর্কে ভালো করে জানতে হলে আগে আপনাকে বাহাইদের সম্পর্কে জানতে হবে। বাহাই ধর্ম বা বাহাই বিশ্বাস হচ্ছে বাহাউল্লাহ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একেশ্বরবাদী একটি ধর্ম বা বিশ্বাস। ঊনবিংশ শতাব্দীতে পারস্যে (বর্তমান ইরান) এই ধর্মের উৎপত্তি। বাহাইরা ঈশ্বরের একত্রিকরণ, ধর্মের একত্রিকরণ আর মানবকুলের একত্রিকরণে বিশ্বাস করে।

বাহাই বিশ্বাস অনুসারে, ধর্মীয় ইতিহাস ঈশ্বরের দূতদের ধারাবাহিক আগমনের মাধ্যমে ধাপে ধাপে সম্পন্ন হয়েছে। তারা প্রত্যেকে নিজ সময়ের মানুষদের সামর্থ্য ও সময় অনুসারে একটি ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেছেন। এঁদের মধ্যে আছেন আদম (আ.), ইব্রাহিম (আ.), যিশু খ্রিষ্ট, মহামতী গৌতম বুদ্ধ, মহাবতার কৃষ্ণ এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.)। এই ধর্মবিশ্বাসে সবশেষে আছেন বাহাউল্লাহ। বাহাউল্লাহ শিক্ষা দেন ঈশ্বর এক, মানবজাতি এক এবং পৃথিবীর সব ধর্ম হচ্ছে এক ঈশ্বরের বিভিন্ন সময়ের প্রকাশ।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে বাহাইরা বারবার হয়রানি ও নানাবিধ প্রতিকূলতার শিকার হয়ে আসছে। কারণ মুসলিম ধর্মীয় নেতারা বাহাই ধর্মকে একটি স্বাধীন ধর্ম হিসেবে মানেন না। তারা মনে করেন, এটি ইসলামকে বিকৃত করার একটি অপচেষ্টা। বাহাইদের বিরুদ্ধ সবচেয়ে বড় মাপের হয়রানিগুলো সংগঠিত হয়েছে ধর্মটির উৎসভূমি ইরানে। ইরানে তাদের মৌলিক অধিকারকে অস্বীকার করা হয়। সেখানে তাদের ধর্মীয়, সামজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এমন কি শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়।

ইরানে বাহাই ধর্মের অনুসারীরা তাদের নাম পরিচয় গোপন করেই বসবাস করেন। কারণ বাহাইরা হচ্ছে ইরানে ধর্মীয়ভাবে সবচেয়ে সংখ্যালঘু ও নির্যাতিত সম্প্রদায়। বাহাই ধর্মীয় পরিচয়ে কোনো শিক্ষার্থীকে ইরানের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানো হয় না। সামাজিকভাবেও তারা হেনস্থার শিকার হয়। ফলে তাদের শিক্ষালাভ করতে হয় নাম পরিচয় গোপন করে অথবা গোপনভাবে পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

শিরিন এবং মোনা নামের দুজন বাহাই শিক্ষার্থী বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন ইরানে তাদের শিক্ষাজীবনের সংগ্রামী ইতিহাস, তাদের গোপন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষালাভের করুণ কাহিনি। আশির দশকে জন্ম নেওয়া শিরিন বলেন, তার পিতা ছোটবেলায় প্রায়ই তাকে তার ( শিরিনের পিতার) শিক্ষাজীবনের করুণ কাহানী শোনাতেন। তিনি (শিরিনের পিতা) বলতেন, শুধু বাহাই হওয়ার কারণে স্কুলে তাকে অনেকবার তার সহপাঠীরা শারিরীক ও মানুষিকভাবে নির্যাতন করেছে। ফলে তিনি শিরিনকে সবসময় স্কুলে যাওয়ার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করতেন। কিন্তু শিরিন দমে যাওয়ার পাত্রী নয়। সে গোপনে স্কুল-কলেজের গণ্ডি অতিক্রম করে।

তবে আসল বিপত্তিটা শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সময়। বাহাই পরিচয়ে একাধিকবার চেষ্টা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হতে পেরে অবশেষে শিরিন সিধান্ত নেয় বাহাই ইন্সিটিটিউট অব হায়ার এডুকেশন (বিআইএইচই)-এ ভর্তি হওয়ার। তেহরানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হয় সম্পূর্ণ গোপনে, লোকচক্ষুর অন্তরালে। ১৯৯৪ সালে শিরিন যখন বিআইএইচই-তে ভর্তি হয় তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র দুটি কোর্সে স্নাতক ডিগ্রি দেওয়া হতো। স্নাতকোত্তর বা পিএইচডি করার কোনো সুযোগ ছিল না। চার বছরের স্নাতক কোর্স শেষ করতে ছয় বা সাত বছর সময় লেগে যেত। সমগ্র তেহরানের বিভিন্ন বাড়িতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল এর ক্লাস রুমগুলো।

এভাবে তেহরানের এই গোপন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালোই চলছিল শিরিনের দিনগুলো। হঠাৎ একদিন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ রেইড দিলো তাদের গোপন ক্লাসরুমে। গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় তার অনেক সহপাঠী ও শিক্ষকদের। ভেঙে যায় শিরিনের স্নাতক হওয়ার স্বপ্ন। তার জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। তবে শিরিন অন্যদের মতো হেরে যওয়ার পাত্রী নন। ২০০৩ সালে শ্রমিক ভিসা নিয়ে পাড়ি জমান ইংল্যান্ডে। কাজের ফাঁকে ব্রিংহাম ইউনিভার্সিটি থেকে ধর্ম তত্ত্বের ওপর স্নাতক ডিগ্রি সম্পান্ন করেন।

এরপর তিনি ২০০৬ সালে আমেরিকায় পাড়ি জমান। শিরিনের মতো আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলো মোনা। স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে মোনা তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চেষ্টা করেন। কিন্তু তার অবস্থাও শিরিনের মতো হয়। বাহাই ধর্মের অনুসারী হওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি করতে অস্বীকৃতি জানায়। তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তিনি যদি তার ধর্মের জায়গায় ইসলাম লেখেন তবেই তাকে ভর্তি করানো হবে। এর ফলে মোনাকেও উচ্চশিক্ষার জন্য বেছে নিতে গলো বাহাইদের দ্বারা পরিচালিত গোপন বিশ্ববিদ্যালয়।

মোনা তার শিক্ষাজীবনের দূর্বিষহ স্মৃতির কথা উল্লেখ করে বলেন, তাদের ক্লাসরুমগুলো তেহরানের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। মাঝে মধ্যে তাদের সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ১২ পর্যন্ত ক্লাস করতে হতো পূর্ব তেহরানে এবং দুপুর ২ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত তাদের ক্লাস করতে হতো পশ্চিম তেহরানে। সবসময় তাদের শিক্ষকরা স্বশরীরে ক্লাসরুমে হাজির থাকতেন না। অধিকাংশ সময় শিক্ষকরা স্কাইপির সাহায্য নিয়ে আমেরিকা কিংবা কানাডায় বসে ক্লাস নিতেন। তার অনেক সহপাঠীদের ইরানের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশ-পচিশ ঘণ্টার পথ অতক্রম করে ক্লাসে আসতে হতো। ফলে তাদের দেহে থাকতো ক্লান্তির ছাপ এবং চোখে মুখে রাজ্যের হতাশা। এভাবে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে তিনি তার স্নাতক শেষ করেন এবং ২০০৯ সালে ভাগ্যের সন্ধানে শিরিনের মতো আমেরিকায় পাড়ি জমান।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ জানুয়ারি ২০১৭/শাহিদুল/রাসেল পারভেজ

kolkata info

কলকাতায় গরুর মগজ দিয়ে গরম ভাত

ফেরদৌস জামান : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-২৫ ৭:৫২:৪৪ পিএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-২৫ ৭:৫২:৪৪ পিএম

ফেরদৌস জামান : কর্নাটক থেকে তামিলনাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশ, উড়িশ্যা, সব শেষে বিহার হয়ে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা; কিছু কম-বেশি চল্লিশ ঘণ্টা ট্রেন জার্নির পর পা রাখলাম মাটিতে। এতটা সুদীর্ঘ পথে দেখলাম অঞ্চল ভেদে আবহাওয়ার ব্যাপক বৈচিত্র। কত দিন পর দেখলাম এক সঙ্গে অনেকগুলো বাংলা ভাষাভাষী মানুষ, মন চাইছিল কারও সাথে প্রাণ ভরে গল্প করি! কিন্তু কার সাথে? চেনা-জানা তো কেউ নেই, তবে এক জন মিলতে পারে, তাও আজ নয় কাল বা পরশু।

হাওড়া স্টেশন থেকে বেরিয়ে একটা ট্যাক্সি নিয়ে ছুটলাম হোটেলের দিকে। বিশাল হাওড়া ব্রিজ, পারাপার করছে শত শত যান। কত বছর আগে তৈরি, অথচ ঠিকভাবে লক্ষ করলে দেখা যায় ব্রিটিশ কারিগরী দক্ষতা কতটা সুনিপুণ ছিল! একই প্রমাণ মেলে আমাদের দেশে পদ্মা নদীর উপর নির্মিত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দেখলে। এত বড় হাওড়া ব্রিজ, অথচ দুই সংযোগ ছাড়া দ্বিতীয় কোনো খুঁটি বা পিলার নেই। প্রতিটি নাট-বল্টু বা সংযোগগুলো স্পষ্ট। টিভিতে এই জিনিস দেখে কে না বিস্মিত হতো! বিস্ময়ের সেই ব্রিজ আমাকে এপাড় থেকে ওপাড় নিয়ে যাচ্ছে। ছিটেফোঁটা বৃষ্টির হাত থেকে রেহাই পেতে আবেগের লাগাম টেনে জানালা থেকে মাথা সরিয়ে কাঁচটা উঠিয়ে দিতে হলো। সময় মতো উপস্থিত হলাম জাকারিয়া স্ট্রীটের হোটেল প্যারামাউন্টে।

একটা ঝরঝরে গোসল দিয়ে সংক্ষিপ্ত বিশ্রাম, তারপর বেরিয়ে পরলাম মহানগর কলকাতা দেখতে। ধর্মতলা হয়ে নিউমার্কেট এলাকায় পায়ে হাঁটা ভ্রমণের পর ইচ্ছা জাগল ট্রামে আরোহণের স্বাদ নিতে। সড়কের মাঝ দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বহু পুরনো ট্রাম। সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণিতে বাংলা বইয়ে ‘আবার অসিব ফিরে’ নামক একটি কবিতা ছিল। বাংলার শিক্ষক কবিতার আগে শুরু করলেন কবির জীবনী দিয়ে। জীবনী পড়ানোর সময় শিক্ষকের মুখে জেনেছিলাম, কলকাতায়  ট্রাম দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় কবি জীবনানন্দ দাশের। তখন থেকেই মনের মধ্যে সংকল্প ছিল, কলকাতা গেলে যে জিনিসগুলো দেখব বা উপভোগ করব তার মধ্যে অন্যতম হবে এই বাহণে চেপে শহরটা ঘুরে দেখা।



কলকাতায় আমার সংক্ষিপ্ত ট্রানজিট দুই কি তিন দিনের। সুতরাং চাইলেও ব্রিটিশ ভারতের এক সময়ের রাজধানী এই মহানগরী ঘুরে দেখে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। দু-এক জনের সাথে কথা বলে জেনে নিলাম বিরলা তারামন্ডলের দিকে যাওয়ার পথ কোন দিকে। জায়গা মতো দাঁড়িয়ে থাকতেই চলে এলো রংচটা শরীরের একটি ট্রাম। আসনে বসে খেয়াল করি মাথার উপর খাঁচায় বন্ধ প্রকাণ্ড এক ফ্যান বন বন করে ঘুরছে আর তাতে যে সুললিত সুরের উৎপাদন হচ্ছে তার কারণে আপাতত দুই কান অচল। এরই মধ্যে সন্ধ্যা নেমে গেছে। কিছু লোক ফ্যানের কারণে কানের কাছে মুখ লাগিয়ে কথা বলছে, কিছু লোক ঝিমুচ্ছে আর অনেক আসন ফাঁকাই পড়ে রয়েছে। কোনো আসনের নরম তুলা উঠে গেছে অনেক আগেই, যেন বড় বড় পিড়ি পেতে রাখা। এবার নিচ থেকে ভেসে আসছে ক্যাচর-ম্যাচর, ঘটর-মটর শব্দ। কয়েক মুহূর্তে এসব অবলোকনের পর ভাবলাম, জিনিসটি লর্ড ক্লাইভের আমলের না হলেও ডালহৌসির আমলের যে হবে তাতে সন্দেহ নেই।

বাগানের পাশ দিয়ে, পার্কের পাশ দিয়ে আবার কখনও সড়কের মাঝ দিয়ে এগিয়ে চললো। প্রায় এক ঘণ্টা পর জানতে পারি ভুল পথে এসেছি, অথবা ভুল ট্রামে উঠেছি অথবা কাঙ্ক্ষিত স্টপেজ ছেড়ে চলে এসেছি-এমন কিছু একটা। সামনেই নেমে কিছু দূর হেঁটে পূনরায় ট্রাম ধরে ফিরে এলাম আগের জায়গায় এবং তারামন্ডল পরের দিন দেখব বলে ঠিক করে রাখলাম। তারামন্ডল কি জিনিস ভেতরে প্রবেশের আগে জানতামই না। শুধু সকলেই বলে এই জিনিস দেখ তাই দেখার আগ্রহ। হিন্দী-বাংলা-ইংরেজি এভাবে একের পর এক তিন ভাষার আলাদা শো পরিবেশিত হয়। আমরা বাংলার জন্য অপেক্ষা করলেও টিকিট না পেয়ে ইংরেজিই বেছে নিতে হলো। আমাদের ঢাকাস্থ নভো থিয়েটারে যা দেখানো হয়, মনে আছে আজ থেকে ১৩-১৪ বছর আগে বিরলা তারামন্ডলে তার চেয়ে উন্নত পরিবেশনা উপোভোগ করে এসেছি। বিশাল কলকাতা ময়দান যার দক্ষিণ কোণে অবস্থিত ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম স্থাপনা নিদর্শন এই মেমোরিয়াল হাউস। ১৯০১ সালে রানী ভিক্টোরিয়ার মৃত্যুর পর তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড কার্জন রানীর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি স্মারক প্রাসাদ ও উদ্যান প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। ১৯০৬ সাল থকে শুরু করে ১৫ বছরে নির্মাণ করা হয় এই ভবন। সাদা মার্বেলে মোড়ানো দৈর্ঘ ও প্রস্থে ৩৩৮ ফুট এবং ২২৮ ফুট। উচ্চতা ১৮৪ ফুট এবং ৬৪ একর জায়গা নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে বাগান।



বাগানের পর প্রধান ফটক পেরিয়ে আলগা পাথর বিছানো চওড়া পথের পর মূল ভবন। তার আগে টিকিট কেটে নিতে হলো। এক্ষেত্রে রয়েছে স্থানীয় এবং বিদেশী দর্শনার্থী ভেদে আলাদা মূল্য। বিষয়টি আমার জানাই ছিল না, লাইনে দাঁড়ানো বাকিদের সাথে পাঁচ কি দশ রুপির টিকিট কেটে ঢুকে পরেছি। বের হওয়ার পর জানতে পাই, বাংলাদেশ থেকে এসেছি জানতে পারলে গুনে গুনে দেড়শ কি দুইশ রুপি মূল্য পরিশোধ করতে হতো। যা হোক, ভবনের মাঝে একাধিক গ্যালারী। প্রতিটি গ্যালারীতে প্রদর্শিত হয়েছে নানান নিদর্শন। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর জাতীয় নেতাদের ছবি, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে প্রাণ উৎসর্গকারী বিপ্লবীদের ছবি নিয়ে গ্যালারী। রানী ভিক্টোরিয়া ও প্রিন্স এ্যালবার্টের জীবনের বিভিন্ন ঘটনার উপর আঁকা অনেক ছবি এবং পাথর ও ব্রোঞ্জ নির্মিত রানীর একাধিক মূর্তি প্রদর্শিত রয়েছে। আরও বহু মূল্যবান জিনিসের মধ্যে প্রদর্শিত রয়েছে ১৯৫৭ সালে পলাশী যুদ্ধের নকশা সংবলিত টেবিল। কাঁচের বাক্সে বন্ধ করা নকশাটি আজও অটুট রয়েছে। বঙ্কিম বা ঈশ্বরচন্দ্রের পড়ার টেবিলও প্রদর্শিত রয়েছে।

সন্ধ্যার পর ছুটতে হলো মেগনাম ওভারসিজের খোঁজে। এখানে গেলে বাবার বাংলাদেশী বংশদ্ভুত বন্ধু আসিফ আলী চাচাকে পাওয়া যাবে। কোন রোড ছিল, ঠিক মনে নেই। হোটেল থেকে বেশি দূর নয়। এই সুযোগে বাবার মুখে শোনা কলকাতার রিক্সায় চড়ার অভিজ্ঞতা নিতে চাইলাম, যা তিনি স্বয়ং আজও পর্যন্ত অর্জন করে উঠতে পারেননি। নিজের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম ঘটাতে পারিনি, প্রথম বারেই ব্যর্থ হতে হয়েছে। কুচকুচে কালো বৃদ্ধ, গায়ে কাপড় নেই, পায়ে স্যান্ডেল নেই। পরনে মালকোচা দেয়া ধুতি। যখন রিক্সা নিয়ে সামনে দাঁড়াল তাকে আর বলতে পারিনি যে অমুক জায়গায় যাবেন কি না। তারপরই বুঝতে পারি, বাবার কেন এই বিষয়ে আজও অভিজ্ঞ হয়ে ওঠেনি। এমনিতেই রিক্সা চালানো পেশাটা পৃথিবীর অমানবিক পেশাগুলির মধ্যে একটি। তার উপর দিয়ে কলকাতার দৌড়ে টানা রিক্সা আরও বেশি অমানবিক মনে হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় এর-ওর কাছে জেনে নিয়ে হেঁটেই বাবার বন্ধুকে খোঁজা শুরু করলাম। খুঁজে হয়রান হয়ে গেলাম কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার খোঁজ পেলাম না!



নিকটেই মসজিদের পাশে খোলা বাজারে মানি চেঞ্জের ব্যবস্থা। মাথায় টুপি দেয়া লোকটি রাস্তার ধারে টুল নিয়ে বসে থাকে, রেটও ভালো। অনেক দিনের বেশ কিছু বাংলাদেশি মুদ্রা ছিল। এদিকে রুপির সংকট দেখা দিয়েছে। সুতরাং, প্রয়োজনীয় পরিমাণ টাকা এখান থেকেই রুপিতে পরিবর্তন করে নিতে হলো। চাচাকে খোঁজাখুঁজি বাদ, রণে ভঙ্গ দিয়ে এবার রাতের খাবারের অনুসন্ধান করতে গিয়ে যে জায়গার খোঁজ পেয়ে গেলাম তা আজও ভুলতে পারিনি। আশপাশেই নাকি গরুর মগজ দিয়ে ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। অনেক দিন এই জিনিস খাওয়া হয়নি, দেখা যাক না কলকাতার গরুর মগজের স্বাদ কেমন হয়! বাবার বন্ধুকে খুঁজে না পেলেও গরুর মগজের সন্ধান ঠিকই পেলাম। একেবারেই চিপা গলি, এক ফুটের মতো চওড়া হবে। দুই পাশে পুরনো দালানের উঁচু দেয়াল। যেন কবরের মাঝ দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। একটু পর বিপরীত দিক  থেকে ধোঁয়া আসতে শুরু করলো। এই গলিতে নাকি এমন ধোঁয়া ৩৬৫ দিনের ব্যাপার। অতঃপর ছোট্ট দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলে ঘরজুড়ে কেবল ধোঁয়া  আর ধোঁয়া, তার উপর মে-জুন মাসের তীব্র গরম। স্কুলের মতো বেঞ্চ পাতা, তাতেই খাওয়ার কাজ সারতে হয়। বিশ রুপিতে এক পিরিচ মগজ ভাজি। মুখে এক গ্রাস দেয়ার পর বুঝতে পারলাম, তীব্র গরমের মাঝেও মানুষ এই ধোঁয়ার মধ্যে কেন হুমড়ি খেতে আসে। পরের দিন কলকাতার শেষ দিন। এই দিন পরিবারের ছোট্ট সদস্যদের জন্য সামান্য কিছু কেনাকাটা করে সন্ধ্যার বাসে দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ জানুয়ারি ২০১৭/তারা

Michale modusudans' dedication bangla language

মধুসূদনের কলমে বাংলা পেয়েছিল পরিস্রুত ভাষারূপ

হাসান মাহামুদ : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-২৫ ২:২০:৩৭ পিএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-২৫ ২:২০:৩৭ পিএম

হাসান মাহামুদ: প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদ ‘মাইকেল মধুসূদন: প্রথম বিশ্বভিখারি ও ত্রাতা’ শীর্ষক বইতে লিখেছেন: ‘মধুসূদন দত্তের সার্থকতা আকস্মিক বিস্ফোরণে, চারপাশে হঠাৎ তীব্র আলোকে ভরে দেয়ায়। তাঁর সংস্কারমুক্তি, বিশ্বপরিব্রাজকতা, অতৃপ্তি তাঁকে ঠেলে দিয়েছিল হঠাৎ সফল হয়ে বিনাশের অভিমুখে ধাবিত হবার।...তাঁর সংস্কারমুক্তি ঈর্ষা জাগায় আমাদের।’

সত্যি বলতে মাইকেল মধুসূদন দত্ত শুধু বাংলা কাব্যসাহিত্য সমৃদ্ধই করেননি, বাংলা ভাষার সংস্কারও করেছেন। মধুসূদন বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। এর বাইরেও মধূসূদনের একটি বিষয় খুব কমই আলোচনায় এসেছে, তা হলো- তিনি বাংলা ভাষার উৎকর্ষে অভাবনীয় অবদান রেখেছিলেন। এই নিবন্ধের বিষয়বস্তু, বাংলা ভাষার বিকাশে মধূসূদনের অবদান সর্ম্পকে কিঞ্চিৎ আলোকপাত করা।

বাংলার নিজস্ব ভাণ্ডারের দীর্ঘ দিনের অব্যবহৃত রত্ন ভাণ্ডার আবিষ্কার করেছিলন মধুসূদন। চুপিসারে যেসব রত্ন পড়ে ছিল অনাদর এবং অবহেলায়। যেন লুকিয়ে ছিল ঘরের কোণে। যেসব শব্দ আর উপমা গায়ে মেখে ছিল অযত্নের কাদামাটি। পরম যত্নে তিনি সেগুলোকে তুলে নিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা শব্দ, বাক্য, অব্যয় আর উপমায়। ভাষাকে পরিস্রুত করেছেন আপন প্রতিভায়। ভাষা ব্যবহারের সময় শুদ্ধাশুদ্ধি নির্ণয় করতে পারা মধুসূদনই বলতে গেলে আমাদের দেখিয়ে গেছেন।

বিশেষ করে মাইকেল মধুসূদন দত্ত যখন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম মহাকাব্য মেঘনাদবধকাব্য লেখেন তখন বাংলা ছিল একটি অবিকশিত ও অনেকটাই দুর্বল ভাষা। বাংলা সাহিত্যের অনেক মনীষী স্বীকার করেছেন, তখন বাংলা ছিল ক্ষুদ্র একটি জনগোষ্ঠীর আঞ্চলিক ভাষা। মহত্তম ভাবপ্রকাশের জন্য অপর্যাপ্ত এবং অপরিস্রুত এবং অনাদরণীয়। আর ব্রিটিশ এবং ইংরেজি ভাষা চর্চাকারীদের কাছে তখন বাংলা ছিল ‘সমাজের চাষাভূষা মানুষের অবহেলিত ভাষা’। উঁচুমহলে তখন এর  ঠাঁই ছিল না।

এরকম একটি অবিকশিত এবং হতদরিদ্র ভাষায় মেঘনাদবধকাব্য লেখা ছিল দুঃসাধ্যেরই নামান্তর। মাইকেল মধুসূদন সেই অসাধ্য সাধন করেছিলেন। বাংলা সাহিত্যে সত্যিকারের মহাকাব্য রচনার অসম্ভব কল্পনা হাতের মুঠোয় নিয়ে বাস্তবতায় পরিণত করেছিলেন অপরিমেয় প্রতিভার প্রখর ঝলকানিতে। মজার বিষয় হচ্ছে, মধুসূদন যৌবনে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করে ‘মাইকেল মধুসূদন’ নাম গ্রহণ করেন এবং পাশ্চাত্য সাহিত্যের দুর্নিবার আকর্ষণবশত ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য রচনায় মনোনিবেশ করেছিলেন। বাংলা কবিতা তখন পড়ে ছিল মধ্যযুগে। তখন রাজত্ব চলছিল কল্পনারহিত পদ্যকারদের।  জীবনের দ্বিতীয় পর্বে মধুসূদন আকৃষ্ট হন মাতৃভাষার প্রতি। এই সময়েই তিনি বাংলায় নাটক, প্রহসন ও কাব্যরচনা করতে শুরু করেন। তিনিই একক প্রচেষ্টায় প্রবল ধাক্কায় বাংলা কবিতাকে মধ্যযুগীয় পদ্যের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করে এনে ফেলে দেন আধুনিকতার আঙ্গিনায়।

এই বিপুল পরাক্রম দেখানোর জন্য অবশ্য বাইরে থেকে তাকে ঋণ করতে হয়েছে প্রচুর। বিশ্বের রত্ন ভাণ্ডার খুলে খুলে দেখেছেন তিনি, আর বাংলাকে করেছেন সমৃদ্ধ। অনেকেই তাই তার লেখায় ইংরেজ কবি মিলটন কিংবা লর্ড বায়রনের ছায়া দেখতে পেয়েছেন, বাল্মীকির থেকে ইংবেঙ্গলের প্রভাব দেখেছেন।  কিন্তু মধুসূদন কখনো ‘ছায়ালেখা’র অপবাদে দুষ্ট হননি।

এসবের জন্য অবশ্য তাঁকে সৃষ্টি করতে হয়েছিল নিজস্ব ভাষা ও ছন্দ। সাগরতলে লুকায়িত বাংলার রত্ন ভাণ্ডার থেকে রত্ন আহরণের জন্য দক্ষ ডুবুরির মতো ডুব দিয়েছেন তিনি। ছেঁকে ছেঁকে তুলে এনেছেন সব মণি-মাণিক্য। হানা দিয়েছেন সমৃদ্ধশালী প্রতিবেশী সংস্কৃতের রত্ন ভাণ্ডারে। সেসব লুণ্ঠিত রত্নরাজি মিশিয়েছেন চলতির সাথে সুদক্ষ কারিগরের সুনিপুণ কৌশলে। আবার নিজেও তৈরি করে নিয়েছেন নতুন নতুন সব প্রয়োজনীয় শব্দ। যেন হতচ্ছিন্ন মলিন গ্রাম্য পোশাক পালটিয়ে এর গায়ে জড়িয়েছেন আধুনিকতার উজ্জ্বল উত্তরীয়।

মধুসূদন দত্ত নাট্যকার হিসেবেই প্রথম বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে পদার্পণ করেন। রামনারায়ণ তর্করত্ন বিরচিত ‘রত্নাবলী’ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ করতে গিয়ে তিনি বাংলা নাট্যসাহিত্যে উপযুক্ত নাটকের অভাব বোধ করেন। এই অভাব পূরণের লক্ষ্য নিয়েই তিনি নাটক লেখায় আগ্রহী হয়েছিলেন। ১৮৫৯ সালে তিনি রচনা করেন ‘শর্মিষ্ঠা’ নাটক। এটিই প্রকৃত অর্থে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মৌলিক নাটক। ১৮৬০ সালে তিনি রচনা করেন দুটি প্রহসন, ‘একেই কি বলে সভ্য’ এবং ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ এবং পূর্ণাঙ্গ ‘পদ্মাবতী’ নাটক। এই নাটকে তিনিই প্রথম অমৃতাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন।

আহমদ শরীফ, মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, হুমায়ুন আজাদ এমনকি খোদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও স্বীকার করে গেছেন মাইকেল মধুসূদনের কাব্য প্রতিভা আর শব্দশৈলীর ব্যবহারের গুণ। তার মতো বাংলা ভাষায় এতো শব্দ যোগ আর কেউ করেছিলেন বলে মনে হয় না। এক্ষেত্রে তুলনায় আনা যেতে পারে শুধুমাত্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে।

মধুসুদনের কাব্যে ব্যবহৃত শব্দসমূহ অনেক জটিল এবং অবোধ্য মনে হতে পারে নবীন লেখকদের কাছে। এমনকি বর্তমান সময়ে এসে চিন্তা করলে মনে হতে পারে- ওসব অভিধানের পাতায় পাতায় শুয়ে থাকা বিপুল ওজনাকৃতির অব্যবহৃত শব্দ ছাড়া কিছুই নয়। কিন্তু এগুলোর সুদক্ষ এবং সুনিপুণ ব্যবহার করেই একদিন তিনি বাংলার মতো অবহেলিত অনুজ্জ্বল ভাষাকে দীপ্তিময় করেছিলেন। যেসব শব্দ পরবর্তীতে অনুসরণ করে গেছেন হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, নবীন চন্দ্র সেনদের মতো মধ্যযুগীয় কবিরা।

একজন মধুসুদন শুধু মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্য এবং আধুনিক বাংলা সাহিত্যের সেতুবন্ধনই করেননি, তিনি নিজেও ছিলেন আপাদমস্তক আধুনিক। বরং বলা চলে এখনকার অনেক আধুনিক কবির চেয়েও তিনি ছিলেন অনেক বেশি আধুনিক, অনেক বেশি প্রতিভাবান। অনেক বেশি ঝড়ো হাওয়া। বাংলা কাব্যে আধুনিকতার সূচনা করেছেন তিনি। আরো বিস্ময়কর হচ্ছে, দেড়শ বছর পাড়ি দিয়েও তিনিই রয়ে গেছেন আধুনিক কবি।

তিনি মহাকাব্য লিখেছেন, সনেট লিখেছেন, বিয়োগান্ত নাটক লিখেছেন, লিখেছেন প্রহসন। এসবের কোনোটা তাঁর আগে আর কোনো বাঙালি লেখেন নি। তিনি সাহিত্য সাধনা করেছেন মাত্র ছয় বছর। অথচ এই স্বল্পকাল বিশালত্ব এবং বৈচিত্র্যমুখিতায় ভরিয়ে দিয়েছেন। মধুসূদনের আগে বাংলা কবিতা পড়ে ছিল ছন্দমিলের ছন্দে। কিন্তু বাংলায় যে এরকম অভূতপূর্ব ছন্দ হতে পারে এবং সেই ছন্দে যে চিরস্থায়ী কাব্য রচনা করা যায় তা তিনি প্রমাণ করে দিয়েছিলেন তাঁর অমিত প্রতিভা দিয়ে।

আজ এই মহাকবির ১৯৩তম জন্মবার্ষিকী। ১৮২৪ সালের আজকের দিনে (২৫ জানুয়ারি) তিনি ব্রিটিশ ভারতের যশোর জেলার এক সম্ভ্রান্ত কায়স্থ বংশে জন্ম নিয়েছিলেন। এই মহাকবির ব্যক্তিগত জীবন ছিল নাটকীয় এবং বেদনাঘন। মাত্র ৪৯ বছর বয়সে কলকাতায় তাঁর মৃত্যু হয়।
 
 
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ জানুয়ারি ২০১৭/হাসান মাহামুদ/তারা

hand writting way to do

হাতের লেখা ভালো করার ৭ কৌশল

সার্জিন শরীফ : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-২৬ ৭:৪৫:৩৯ এএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-২৬ ৯:২৯:২০ এএম
প্রতীকী ছবি
সার্জিন শরীফ : প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই সময়ে এসে আমরা কম্পিউটার আর ট্যাবলেট জাতীয় স্মার্ট ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসগুলোর কাছে কৃতজ্ঞ। এর অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটা হল- এখন ‘সুন্দর হাতের লেখা’ নিয়ে কিছুটা হলেও কম চিন্তা করতে হয় আমাদের।

কিন্তু ‘সুন্দর হাতের লেখা’ বা ‘হাতের সুন্দর লেখা’ যাই বলি না কেন এখনও একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ছোটবেলায় আদর্শ লিপিতে আমরা পড়েছিলাম- ‘হস্তাক্ষর সুন্দর হইলে পরীক্ষায় অধিক নম্বর পাওয়া যা’। শুধু তা-ই নয়, সুন্দর হাতের লেখা আপনার ব্যক্তিত্বকে এক ভিন্ন মাত্রা দান করে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন নামী-দামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হাতের লেখার ক্লাস নেন হাতের লেখা বিশেষজ্ঞ লরা হুপার। বিজনেস ইনসাইডারসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি হাতের লেখা সুন্দর করার জন্য ৭টি পরামর্শ দিয়েছেন।

১. সঠিক উপাদান নির্ধারণ করা : লেখা শুরু করার আগে সেই জিনিসগুলো নির্বাচন করুন যেগুলো ব্যবহার করে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। অনেকেই মনে করে থাকেন সুন্দর হাতের লেখার জন্য ‘ফাউন্টেন পেন’ অত্যাবশকীয়। আসলে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এমন একটি কলম বা পেন্সিল বেছে নিন যা আপনার আঙুলের সঙ্গে সহজে মানিয়ে যাবে এবং লেখার সময় কাগজের ওপর যাকে জোরে চাপ দিতে হবে না। আর কাগজ হিসেবে ‘নোটবুক’ জাতীয় লাইন টানা কাগজ ব্যবহার করা যেতে পারে।

২. হাত এবং কবজি নমনীয় করা : ‘লেখা শুরুর আগে আমি আমার হাত হালকা করে নিই এবং কবজি দুটোকে হালকা মুচড়ে নিই যাতে এগুলো লেখার জন্য নমনীয় হয়’- হুপার বলেন। ‘বিশেষ করে যদি আপনি একটানা বেশ কয়েকদিন ধরে না লিখেন তাহলে অন্যান্য মাংসপেশীর মতো কবজি বা হাতেও একধরনের জড়তা অনুভব করবেন।’

৩. অঙ্গবিন্যাস ঠিক করা : সোজা হয়ে বসুন এবং আপনার অনভ্যস্ত হাতটিকে (যেমন ডানহাতিদের ক্ষেত্রে বাঁ হাত) কাগজ বা খাতাটিকে ধরে রাখার জন্য ব্যবহার করুন। হুপার বলেন, ‘লেখার সময় আমি আমার অনভ্যস্ত হাতটিকে সামঞ্জস্য রক্ষার্থে ব্যবহার করি। এটা আমাকে স্থির থাকতে এবং ডান হাতের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে সাহায্য করে।’ তবে এজন্য অবশ্যই চেয়ার-টেবিল ব্যবহার করা উত্তম।

৪. কলম ধরা : কলম বা পেন্সিল নিব এর কাছাকাছি ধরে লিখুন, তবে শক্তভাবে ধরে নয়। যদি নিবের কাছাকাছি ধরে লিখতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করেন, তাহলে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কারণ কলম বা পেন্সিল ধরার আসলে নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নেই। এটা সম্পূর্ণই আপনার হাতের গড়নের ওপর নির্ভর করে।

৫. বাহু এবং কবজির অবস্থান : বেশিরভাগ মানুষই লেখার সময় শুধু আঙুল ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু হস্তাক্ষরবিদরা আঙুল দিয়ে কলম-পেন্সিল আঁকড়ে ধরেন মাত্র এবং লেখার সময় নিজেদের বাহু এবং কবজিকে সমান অবস্থানে রেখে লিখে থাকেন। হুপার বলেন, ‘এটি রপ্ত করার জন্য আপনি একটি কলম ধরে কল্পনায় (বাতাসের ওপরে) বড় বড় অক্ষর লিখতে পারেন।’

৬. তুলনামূলক ধীরগতি অবলম্বন করা : বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে যত দ্রুত পারা যায় লেখা শেষ করার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। হুপার বলেন, ‘লেখা কোনো দৌড় প্রতিযোগিতা নয়। কত দ্রুত তা শেষ করবেন এটাকে গুরুত্ব না দিয়ে, প্রতিটি অক্ষর কিভাবে সুন্দর করবেন সেটাকে গুরুত্ব দিন। একটু ধীরে লিখুন এবং অক্ষরকে তার শ্রেষ্ঠ চেহারায় রূপ দিন।’

অক্ষরকে সুন্দরভাবে রূপ দিতে প্রথমে বড় বড় করে লেখার অভ্যাস করুন। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক লেখার স্টাইল ছোট আকারে হ্রাস করুন।

৭. অনুশীলন, অনুশীলন এবং অনুশীলন : হাতের লেখা ভালো করার জন্য অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই। উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে আপনি যত বেশি অনুশীলন করবেন ততই দক্ষতা বাড়বে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ জানুয়ারি ২০১৭/ফিরোজ

Tuesday, 24 January 2017

healthy carrot for life

শারীরিক সমস্যা সমাধানে গাজর

ফজলে আজিম : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-২৫ ১০:৩০:২৪ এএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-২৫ ১০:৩০:২৪ এএম

ফজলে আজিম : শীতকালীন শাকসবজিগুলোর মধ্যে অন্যতম গাজর। সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হওয়ায় ছেলে বুড়ো সবারই পছন্দের তালিকায় থাকে এ সবজিটি। কাঁচা চিবিয়ে খাওয়া কিংবা রান্না করা যেকোনো ভা্বেই এটি খাওয়া যায়। শীতকালীন সবজি হলেও সারা বছরই এটি বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। বিশেষ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ করে তা সারাবছর বাজারে সরবরাহ করা হয়।

পুষ্টিগুণে ভরা গাজরের রয়েছে নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা। চলুন জেনে নেওয়া যাক।

* বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শরীরের কিছু কোষ প্রাণবন্ততা হারায়। আর তখন ত্বকে ভাঁজ পড়ে। এ সমস্যা মুক্তির উপাদান রয়েছে গাজরে। এতে থাকা বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলসের সমন্বয় ত্বকের সুরক্ষায় দারুণ কাজ করে। নিয়মিত গাজর খেলে বয়স বৃদ্ধিজনিত কারণে ত্বক কুঁচকে যাওয়া বিলম্বিত হয়।

* গাজরে বিদ্যমান থাকা বিটা ক্যারোটিন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, গাজরে থাকা বিটা ক্যারোটিন ত্বক ও চোখের যত্নে খুবই উপকারী।

* নিয়মিত গাজর খেলে দৃষ্টিশক্তিজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। গাজরে রয়েছে ভিটামিন এ। আর তাই ছোট বড় সবারই দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাখা যেতে পারে গাজর।

* গাজরে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি১২, আয়রণ, কপার, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজসহ আরো অনেক উপাদান। যা শারীরিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

* ১০০ গ্রাম গাজরে ৪১ গ্রাম ক্যালোরি থাকে। ফ্যাট নেই বললেই চলে। আর তাই কোলেস্টেরল নিয়ে বাড়তি চিন্তা নেই।

* টক্সিন মুক্তকারি খাবার হিসেবে পরিচিত গাজর। লিভার সুস্থ রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। গাজর লিভারকে পরিস্কার করে। লিভারজনিত রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে।

* গাজর খেলে দাঁত পরিস্কার হয়। দাঁতে জমে থাকা প্লাক দূর হয়। গাজরের ফ্ল্যাভনয়েড দাঁতকে ক্যাভিটির হাত থেকে রক্ষা করে।

* গাজরের রস কোলন সেলে ঢুকে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।

* হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় দেখেছেন, যারা সপ্তাহে অন্তত ৬টি গাজর খান তাদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। আর তাই প্রতিদিনের খাদ্যাভাসে যোগ করুন রঙিন সবজি গাজর। এবং লাভ করুন সুস্থ জীবন।

লেখক: রেইকি প্র্যাকটিশনার, সেকেন্ডডিগ্রি চ্যানেল।
 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ জানুয়ারি/২০১৭/ফিরোজ

Poet michale modusudhan birthday

মধুকবির জন্মদিন আজ

বিএম ফারুক : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-২৫ ১১:০৩:০৫ এএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-২৫ ১১:০৩:০৫ এএম
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
বি এম ফারুক, যশোর : বাংলায় অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবক্তা মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৪তম জন্মদিন আজ। ১৮২৪ সালের  ২৫ জানুয়ারি তিনি যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

মাইকেল মধুসূদন দত্ত বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী ছিলেন, তার (মধুসূদনের) হাতে বাংলা সাহিত্য পেয়েছে নবরূপ, হয়েছে সমৃদ্ধ ও ঐশ্বর্যমন্ডিত। তিনি একাধারে বাংলা সাহিত্যে প্রথম মহাকাব্যের রচয়িতা, অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক, সনেট রচয়িতা ও আধুনিক শিল্পকলাসম্মত নাট্যকার। নাটক, প্রহসন, মহাকাব্য, পত্রকাব্য, সনেট, ট্রাজেডিসহ সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তাঁর অমর সৃষ্টি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে উন্নত মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে ।

বিস্ময়কর প্রতিভার অধিকারী মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে কবির জন্মভিটা সাগরদাঁড়িতে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা-২০১৭-এর আয়োজনসহ বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এবারের এ মেলাকে ঘিরে কবির জন্মস্থানে মধুসূদন সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন যশোরের বাসিন্দারা। মেলাকে ঘিরে  উৎসব আমেজের সৃষ্টি হয়েছে কেশবপুরসহ আশপাশের এলাকায়। মেলায় বিনোদনের নানা আয়োজন ছাড়াও প্রতিদিন মঞ্চে থাকছে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

১৯৭৩ সাল থেকেই এই মধুমেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে । এবার সপ্তাহব্যাপি এই মেলা শুরু হয়েছে গত ২১ জানুয়ারি থেকে । জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক এ দিন এ মেলার উদ্বোধন করেন । আগামী ২৭ জানুয়ারি মেলা শেষ হবে ।

এর আগে মহাকবির জন্মবার্ষিকী এবং মধুমেলা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী প্রদান করেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, জন্মভূমির প্রতি মাইকেল মধুসূদন দত্তের গভীর অনুরাগ আগামী প্রজন্মের কাছে দেশপ্রেমের চিরন্তন নিদর্শন হিসেবে চির-জাগরুক থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণীতে বলেন, বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের অনন্য সাহিত্যকীর্তি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের পিতার নাম রাজনারায়ণ দত্ত, মা জাহৃবী দেবী। ১৮৩৩ সালে মধুসূদন সাগরদাঁড়ি ছেড়ে কলকাতা  যান। ১৮৪৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেন কবি। একইসাথে পিতৃগৃহ থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসন নেন। ১৮৪৮ সালে ফের সাগরদাঁড়িতে আসেন। তারপর ভাগ্যান্বেষণে মাদ্রাজ চলে যান।

১৮৪৯ সালের এপ্রিলে তাঁর ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ ‘দ্য কাপটিভ লেডি’ প্রকাশ হয়। ১৮৫৮ সালে ‘শর্মিষ্ঠা নাটক’ লিখে বাংলা ভাষায় সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। ১৮৬০ সালে ‘পদ্মাবতী নাটক’ প্রকাশ হয়। ১৮৬১ সালে জানুয়ারিতে ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ প্রথম খন্ড প্রকাশিত হয়।

১৮৬৩ সালে অর্থকষ্টে পড়েন। এ অবস্থায় পরিবারসহ প্যারিসের ভার্সাই নগরীতে চলে যান। ১৮৬৪ সালে ২ জুন অর্থসাহায্য চেয়ে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে চিঠি লেখেন। আগস্টে বিদ্যাসাগরের পাঠানো টাকা পেয়ে সাময়িকভাবে অভাব মোচন হলে তিনি সনেট রচনায় মনোনিবেশ করেন ।

১৮৬৬ সালের আগস্টে ‘চতুর্দ্দশপদী কবিতাবলী’ পুস্তক আকারে কলকাতা থেকে বের হয়। নভেম্বরে ব্যারিস্টারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৮৬৭ সালে পুত্র-কন্যাকে ফ্রান্সে রেখে কলকাতা চলে আসেন। ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন বেলা ২টায় মৃত্যুবরণ করেন মহাকবি মধুসূদন দত্ত।


রাইজিংবিডি/যশোর/২৫ জানুয়ারি ২০১৭/বি এম ফারুক/টিপু

Monday, 23 January 2017

Great Actor Razzak

এক্সট্রা থেকে নায়ক রাজ

মুম রহমান : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-২৩ ৩:৪১:২৩ পিএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-২৩ ৪:০০:০৬ পিএম

|| মুম রহমান ||
আব্দুর রাজ্জাককে কেউ চিনতো না। অথচ তার জন্মই হয়েছে টালিউডে। টালিউড মানে কলকাতা, তথা ভারতের চলচ্চিত্রের আঁতুর ঘর। এখানেই বেড়ে উঠেছেন উত্তম কুমার থেকে সৌমিত্র, প্রসেনজিৎ থেকে শুরু করে হালের দেব কিংবা পরমব্রতরা। টালিউডে জন্ম নেয়া আব্দুর রাজ্জাক অভিনেতা হতে চাইলেন। কিন্তু অভিনয় তো দূরের কথা, তাকে টালিউড ছাড়তে হলো ভাগ্যদোষে।

১৯৬৪ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে আব্দুর রাজ্জাক চলে এলেন ঢাকা। এলেন শরণার্থী হয়ে, কিন্তু বুকে তার স্বপ্ন- অভিনয় করবেন। পকেটে সম্বল মাত্র একটি চিঠি। যে চিঠি কলকাতার এক স্বজনের লেখা; আব্দুল জব্বার খানের প্রতি। আব্দুল জব্বার খানকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্মদাতা বলা যায়। তার প্রযোজনা ও পরিচালনাতেই এই ঢাকা শহরে তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’। আব্দুর রাজ্জাক কমলাপুর এসে ঠাঁই নিলেন। এখানেই থাকেন আব্দুল জব্বার খান। অবশেষে আব্দুর রাজ্জাক দেখা করার সুযোগ পেলেন তার সঙ্গে। এই সাক্ষাত থেকেই শুরু হলো বাংলা চলচ্চিত্রের নতুন একটি অধ্যায়।

এই অধ্যায়ের নাম নায়ক রাজ রাজ্জাক। আব্দুর রাজ্জাককে অবশ্য নায়ক রাজ হতে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছে। ঢাকার কমলাপুরে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে আধবেলা খেয়ে-না-খেয়ে থাকতে হয়েছে তাকে। আব্দুল জব্বার খান অবশ্য তাকে হতাশ করেননি। তিনি রাজ্জাককে ইকবাল ফিল্মস লিমিটেডে কাজ করার সুযোগ দেন। কামাল আহমেদের উর্দু চলচ্চিত্র ‘উজালা’তে সহকারী পরিচালক হিসেবে শুরু হয় রাজ্জাকের বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে কাজ করার সূচনা। কথাটি এখানে যতটা সহজভাবে আপনি পড়লেন, ততটা সহজ ছিল না। সহকারী পরিচালক থাকা অবস্থাতেই রাজ্জাক অভিনয়ের চেষ্টা করতে থাকেন। কলকাতায় খানপুর হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র থাকাকালে তিনি সরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে নির্মিত নাটক ‘ব্রিদোহী’তে অভিনয় করেন। সেই থেকে তার অভিনয়ের স্বপ্ন। টালিউডেও চেষ্টা করেছেন দুয়েকটা ছবিতে অভিনয় করার। অভিনয়ের নেশাটা আসলে তার রক্তে ছিলো। ‘কার বউ’ ‘ডাকবাবু’ ‘১৩নং ফেকু ওস্তাগার লেন’ ‘আখেরী স্টেশন’ (উর্দু) ইত্যাদি ছবিতে তিনি ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় করেন। বলে রাখা ভালো চলচ্চিত্রজীবনের শুরুতে তিনি এক্সট্রা শিল্পী হিসেবেও সিনেমায় অভিনয় করেছেন। সে সময় পাকিস্তান টেলিভিশনের ধারাবাহিক নাটকেও তাকে আমরা অভিনয় করতে দেখেছি।



প্রতিষ্ঠা পেতে জীবন যুদ্ধ যখন চলমান ঠিক সে সময়, তিনি জহির রায়হানের সহকারী হিসেবে কাজের সুযোগ পেয়ে যান। জহির রায়হান তখন বাংলার বিখ্যাত লোকগল্প ‘বেহুলা’ বানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।  নায়িকানির্ভর এই ছবিতে নায়ক লক্ষীন্দরকে অধিকাংশ সময় শবদেহ হয়ে শুয়ে থাকতে হবে। তখনকার নামকরা কোনো নায়কই এ চরিত্রে অভিনয় করতে রাজী হলেন না। জহির রায়হানের জহুরি চোখের নজর পড়ল রাজ্জাকের উপর। রাজ্জাক প্রথম নায়ক হওয়ার সুযোগ পেলেন বেহুলা ছবিতে। আর প্রথম ছবিতেই বাজিমাত। বেহুলা সকলের হৃদয় কেড়ে নিলো আর রাজ্জাক নায়ক হিসাবে ঠাঁই পেয়ে গেলেন এ দেশের মানুষের অন্তরে। এরপর কেবল নিজের সীমানাকে অতিক্রম করে পথ চলা। একের পর এক বাংলা চলচ্চিত্রে নতুন নতুন মাইল ফলক তৈরি করে হয়ে উঠলেন নায়ক রাজ রাজ্জাক। ৫০ বছরের চলচ্চিত্র জীবনে দুই বাংলা মিলিয়ে প্রায় পাঁচশটি উর্দু-বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

বাংলা চলচ্চিত্রে নায়ক রাজ রাজ্জাক এক বৈচিত্রময় নাম। তিনি নায়কের চিরচেনা রূপ ভেঙেছেন বহুবার। স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত প্রথম সিনেমা ‘ওরা ১১ জন’-এ তিনি অভিনয় করেছেন ভিন্ন ধরণের চরিত্রে। ‘আলোর মিছিল’ চলচ্চিত্রে রানা মামা চরিত্রে অভিনয় করে তিনি সহ-চরিত্রকে দেন ভিন্ন মাত্রা। উল্লেখ্য এ ছবিতে ববিতার মামা হন তিনি। ববিতার প্রেমিক হিসেবে এ ছবিতে অভিনয় করেন ফারুক। রাজ্জাক চাইলেই নায়ক চরিত্রে অভিনয় করতে পারতেন, কিন্তু ভিন্নতার জন্যেই তিনি মামার চরিত্রটি বেছে নেন। ১৯৭৪ সালে চিত্রনায়ক সোহেল রানা বাংলাদেশের বিখ্যাত থ্রিলার উপন্যাস ‘মাসুদ রানা’ অবলম্বনে একই শিরোনামে চলচ্চিত্র বানান। কাজী আনোয়ার হোসেনের মাসুদ রানা চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে সোহেল রানার যাত্রা শুরু হয়। আর এ ছবিতে ক্লাবের গায়ক হিসেবে একটি দৃশ্যে অভিনয় করেন রাজ্জাক। নতুন একজন পরিচালক-নায়কের ছবিতে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা নায়কের এমন ভিন্ন একটি চরিত্র অসাধারণ দৃষ্টান্ত।

১৯৭৩ সালে ‘রংবাজ’ ছবিতে মাস্তানের চরিত্রে অভিনয় করে বাংলা চলচ্চিত্রে এ্যাকশন ঘরানার শুরু করেন নায়ক রাজ রাজ্জাকই। ১৯৭৮ সালে আজিজুর রহমানের ‘অশিক্ষিত’ এবং ১৯৮০ সালে ‘ছুটির ঘণ্টা’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। প্রথম ছবিটিতে গ্রাম্য পাহারাদার আর ছুটির ঘণ্টায় স্কুলের দপ্তরির চরিত্রে অভিনয় সে সময়ের বিবেচনায় একজন সাহসী অভিনেতার কাজ ছিলো। শিশুতোষ এই দুটি ছবিতেই তিনি নায়কের প্রচলিত ভাবনা ভেঙে দিয়েছেন। অভিনয়ের জন্য তিনি পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। কি যে করি (১৯৭৬), অশিক্ষিত (১৯৭৮), বড় ভালো লোক ছিল (১৯৮২), চন্দ্রনাথ (১৯৮৪) এবং যোগাযোগ (১৯৮৮) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জাতীয় পুরস্কার জিতে নিয়েছেন। অভিনয়ের জন্য আজীবন সম্মাননাও পেয়েছেন। এর বাইরেও পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। জাতিসংঘের শুভেচ্ছা দূতও হয়েছেন তিনি।



এক সময়ের আব্দুর রাজ্জাক একদিন টালিউডে ফিরে গেলেন। যে টালিউডে তিনি থাকতে পারেননি, সেই টালিউড তাকে বরণ করে নিলো রাজার মতোই। এখন তো তিনি বেড়ে উঠতে যাননি, বরং টালিউডের সীমানাটাই আরেকটু বড় করে দিয়ে এসেছেন। টালিউডেও নায়ক রাজ্জাক সৃষ্টি করলেন একাধিক মাইলফলক।

প্রযোজক রাজ্জাক : বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প আরো বেগবান হয়েছে নায়ক রাজ রাজ্জাকের রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশনের কল্যাণে। নিজের এবং স্ত্রীর নাম মিলিয়ে তিনি তৈরি করেন এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। অনন্ত প্রেম, পাগলা রাজা, চাঁপাডাঙার বউ, মৌচোর, বাবা কেন চাকর-এর মতো সফল চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে তার প্রযোজনা সংস্থা থেকে। শুধু সিনেমা তৈরিই নয়, প্রযোজক হিসেবে তিনি অরুণা বিশ্বাস, পুত্র বাপ্পারাজকে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। খল অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানকে তিনি চাঁপাডাঙার বউ চলচ্চিত্রে শাবানার বিপরীতে অভিনয় করিয়ে নতুন ইমেজ তৈরি করেন। ছোট ছেলে সম্রাটও তার হাত ধরে চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু করে। রাজলক্ষ্মী প্রোডকশন থেকে ২০টি চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে। এই প্রোডাকশন থেকে তৈরি হওয়া চলচ্চিত্র ‘বাবা কেন চাকর’ এতটাই সফল হয়েছির যে, পরবর্তীতে পশ্চিমবঙ্গে এই চলচ্চিত্র আবার নির্মিত হয়। উল্লেখ্য, বাবা কেন চাকর প্রযোজনার সময় বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প অশ্লীলতার অন্ধকারে ছিলো। সেই অন্ধকার সরাতে চলচ্চিত্রটি বিরাট ভূমিকা রাখে। এরপর তিনি ‘আরএস এন্টারটেইনমেন্ট’ নামে আরেকটি প্রযোজনা সংস্থা গড়ে তোলেন। এই প্রযোজনা সংস্থা থেকেও আমি বাঁচতে চাই, কোটি টাকার ফকির ও মন দিয়েছি তোমাকে-এর মতো চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে।

পরিচালক রাজ্জাক : ভুলে গেলে চলবে না, চলচ্চিত্রে নায়ক রাজের যাত্রাটা শুরু হয়েছিলো পরিচালকের সহকারী হিসেবে। কাজেই পরবর্তীতে চলচ্চিত্র পরিচালনা করাটা তার জন্য খুবই স্বাভাবিক। এখন পর্যন্ত রাজ্জাক ১৮টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন যার অধিকাংশই তার নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা থেকে নির্মিত। অনন্ত প্রেম, বদনাম, চাঁপাডাঙার বউ, মৌচোর, সৎ ভাই, বাবা কেন চাকর, জ্বিনের বাদশা, কোটি টাকার ফকির, মন দিয়েছি ইত্যাদি তার পরিচালিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র। পরিচালক হিসেবে প্রথম চলচ্চিত্র ‘অনন্ত প্রেম’ দিয়েই তিনি তার নিজস্বতা প্রমাণ করেন। গল্প নির্বাচন, দৃশ্যায়ণ, চরিত্রায়ণ সব মিলিয়ে ‘অনন্ত প্রেম’ কালজয়ী আসনে ঠাঁই পেয়ে যায়। এই চলচ্চিত্রে নায়ক-নায়িকার মৃত্যু দেখানো হয়েছে। সে সময়ের বিবেচনায় এটি একটি সাহসী সিদ্ধান্ত ছিলো। বাংলাদেশের ছবির দর্শক মিলনই দেখে এসেছে এতোকাল। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চাপা ডাঙার বউ’কে সিনেমার পর্দায় তিনি তুলে আনেন। এছাড়াও নীহাররঞ্জন গুপ্তের কালজয়ী উপন্যাস ‘উত্তর ফাল্গুনী’কে তিনি চলচ্চিত্রে রূপ দেন।  



রাজ্জাকনামা

পুরো নাম : আব্দুর রাজ্জাক,
ডাকনাম : রাজু/রাজা/আলতা,
জন্ম : ২৩ জানুয়ারি ১৯৪২, টালিগঞ্জ, কলকাতা
পিতা: আকবর হোসেন
মাতা : নিসারুন নেসা
স্ত্রীর নাম : খায়রুন নেসা (লক্ষ্মী)
সন্তান : তিন পুত্র বাপ্পারাজ, বাপ্পি ও সম্রাট এবং দুই কন্যা শম্পা ও ময়না।
বিয়ে : ১৯৬২
ঢাকায় আগমন : ১৯৬৪
প্রথম অবস্থান : ঢাকার কমলাপুর
প্রথম ক্যামেরার সামনে : কলকাতার ‘শিলালিপি’ চলচ্চিত্রে
স্কুল জীবন : খানপুর স্কুল
কলেজ জীবন : চারুচন্দ্র কলেজ
মঞ্চে অভিনয় : রঙ্গসভা নাট্যদল। উল্লেখ্য এ দলের সভাপতি ছিলেন ছবি বিশ্বাস, পরিচালক ছিলেন পীযুষ বোস।
নায়ক হিসেবে প্রথম ছবি : বেহুলা
অভিনীত ছবির সংখ্যা : প্রায় ৫০০
প্রথম প্রযোজিত ছবি : আকাঙ্ক্ষা
প্রথম পরিচালিত ছবি : অনন্ত প্রেম



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ জানুয়ারি ২০১৭/তারা

Yougart healthy food

শরীর, স্বাস্থ্য, রূপচর্চায় দুধের বিকল্প দই

আহমেদ শরীফ : রাইজিংবিডি ডট কম
     
প্রকাশ: ২০১৭-০১-২৩ ১:৩১:৫৪ পিএম     ||     আপডেট: ২০১৭-০১-২৩ ১:৩১:৫৪ পিএম

আহমেদ শরীফ : দইয়ের পুষ্টিগুণ ও বহুমুখী উপকারিতা রয়েছে। প্রতিদিন খাবারের তালিকায় দই রাখতে পারেন। কেননা এতে প্রচুর প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-ডি, উপকারী ব্যাকটেরিয়া বিদ্যমান। যারা সহজে দুধ হজম করতে পারেন না, তাদের জন্য দই বেশ উপকারী। কারণ এটি সহজেই হজম হয় এবং দুধের মতো এতে পুষ্টিমান বজায় থাকে। দই মানব দেহের জন্য কতটা উপকারী চলুন জেনে নেই-

দইয়ে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস বেশি থাকায়, এটি হাড় ও দাঁত মজবুত করে।

দাঁতের ক্ষয় রোগ, আথ্রাইটিস, অস্টিওপোরোসিস রোগ দমনে প্রতিদিন দই খেতে পারেন।

দই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

হৃদযন্ত্রের জন্য দই খুব উপকারী। এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে কোলেস্টেরল কমায়।

হজমের জন্য দই খাওয়া যেতে পারে। স্পাইসি খাবার খেয়ে অন্তত এক কাপ দই খাওয়া উচিত।

পেপটিক আলসার রোধ করতেও দইয়ের ভূমিকা রয়েছে।

দইয়ে জিংক, ভিটামিন-ই ও ফসফরাস থাকায় ঘরে এটি রূপচর্চার উপকরণ হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

দইয়ে ল্যাকটিক এসিড থাকায় চুলের খুসকি সহজে দূর করে। মাথার তালুতে মেখে এক ঘণ্টা পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে সহজেই দূর হবে খুসকি।

দইয়ে থাকা ক্যালসিয়াম শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

দই  মানসিক চাপ ও মস্তিষ্কের উত্তেজনা কমায়।

সুতরাং প্রতিদিন ২৫০-৫০০ গ্রাম দই খাওয়া ভালো। এর চেয় বেশি দই খেলে শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বেড়ে শারীরিক জটিলতা তৈরি হতে পারে। অবশ্য দই কেনার আগে তা কতোটা খাঁটি, সেটাও জেনে নেওয়া উচিত।

তথ্যসূত্র:  হেলথসাইট ডট কম, বোল্ডস্কাই


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ জানুয়ারি ২০১৭/তারা